ফিরে এসো ধোনি, অন্তত একবার!
প্লিজ ফিরে এসো মাহি। অন্তত একবার। এসে তাদেরকে বলে যাও, ‘ক্রিকেট জীবনের প্রথম পাঁচটা ইনিংসে আমি চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছি। তারপরেও বহু ক্যাচ, স্ট্যাম্প মিস করেছি। সে সময় কেউ গেল গেল রব তোলেনি বলেই আমি সবার প্রিয় মহেন্দ্র সিং ধোনি হতে পেরেছি। একটু সময় দিয়ে, সাপোর্ট করে আর্শদ্বীপ, ঋষাভ, রোহিতদেরকে এবার আর্শদ্বীপ, ঋষাভ ও রোহিত হতে দাও প্রিয় ক্রিকেটবোদ্ধাগণ।"
প্রিয় ধোনি, তুমি ফিরে এসো। বয়স যখন ৫০ ছুঁই ছুঁই তখনও তুমি ফিরে এসো। তোমার ফ্যানরা গান ধরেছে, আজ ধোনি থাকলে বৃষ্টি এখনো হত না, আজ ধোনি থাকলে কৃষ্ণচূড়ার ফুলগুলো ঝরে যেত না। তুমি থাকাকালীন সত্যি কোনোদিন বৃষ্টিও হয়নি আর কোনোদিন ফুলও ঝরেনি বোধহয়।
তুমি প্লিজ ফিরে এসে তোমার ফ্যানদের বোঝাও তুমি ক্রিকেটে যে অবদান রেখে গিয়েছ তা তোমার সবচেয়ে বড় শত্রুও অস্বীকার করতে পারবে না কিন্তু তুমি এখন অবসর নিয়েছ। ‘ভারত’ বা ‘ইন্ডিয়া’ নামের ক্রিকেট দলটা এখনও খেলে। তোমার নাম দিয়ে তোমারই এক ছাত্রসুলভ প্লেয়ারকে এরকম করে বার বার ডিমোরালাইজ করে দেওয়াটা আসলে ভারতীয় ক্রিকেটের ক্ষতি করা হয়।
ক্যাপ্টেন্সিতে তোমারও অনেক ভুল ত্রুটি হয়েছে। বাংলাদেশে গিয়ে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছ। বিদেশের মাটিতে টেস্টে বহুবার নাকানি চোবানই খেয়েছো। এমনকি ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজ হেরেছো, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। আমরা তখন একবারের জন্যও বলিনি সৌরভ গাঙ্গুলী ফিরে এসো। সৌরভ গাঙ্গুলি ’০৩ এর বিশ্বকাপে হেরে যাওয়ার সময় কেউ বলেনি কপিল দেব ফিরে এসো। সবাই সবদিন সবটা পারে না। সবার ঝুলিতে সব রেকর্ড থাকে না। এটাই প্রকৃতির নিয়ম।
তুমি কিপার হিসেবে অসাধারণ হলেও টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাটিং বিভাগে বিশেষ করে বিদেশের মাটিতে কোনো ছাপ ছেড়ে যেতে পারনি। ঋষাভ পান্ত উইকেটরক্ষক হিসেবে তোমার ধারে কাছে না থাকলেও ব্যাটিং করে অদ্ভুত রকমের সব ইনিংস খেলে বিদেশের মাটিতে গিয়ে দলকে জেতাচ্ছে।
ক্যাপ্টেন্সির প্রথম অর্ধেই তুমি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ আর আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে ফেলেছো। আবার ক্যাপ্টেন্সির শেষ অর্ধে গিয়ে তুমি ২০১৬ অবধি মোট পাঁচটা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হেরেছো। ২০১৫ সালের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ হেরেছো। তা সত্ত্বেও কেও ভারতীয় ক্রিকেটে তোমার অবদানকে খাটো করে দেখাতে পারবে? পারবে না। কারণ ভারতীয় ক্রিকেটের মহিরুহ ছিলে তুমি। কিন্তু তাই বলে পাশের চারাগাছ গুলোকে মহিরুহ হওয়ার সুযোগটুকু দিব না?
নিউ জিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা – এখনো একটাও বিশ্বকাপ পায়নি। ক্রিকেটের আবিস্কারক ইংল্যান্ডকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২০১৯ অবধি। ক্রিকেট, বাস্তব জীবন সবই এইরকম। তোমার মত কেও প্রথম অর্ধেই সবটা পেয়ে যায় কাউকে অপেক্ষা করতে হয় শেষ অবধি। এটাই তো নিয়ম। সেই সময়টুকুতে সাপোর্ট করতে হয় যাতে পরের বার আরো বেশি confidence এর সাথে খেলতে পারে আমাদের প্রিয় দল।
হেরে গেলে খারাপ লাগবেই। প্লেয়ারদের উপর গঠনমূলক সমালোচনাও করতে হবে। তাই বলে ধোনির ফ্যানবেজ ঋষাভকে নিয়ে গেল গেল রব তুলবে আর বিরাটের ফ্যানবেজ সদ্য অধিনায়ক হওয়া রোহিত কে নিয়ে গেল গেল রব তুলবে এমনটা চলতে থাকলে আদতে ক্ষতি হবে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট টিমটার। আমরাও কারো না কারো fanbase হয়েই থেকে যাব। সামগ্রিকভাবে দলটার ফ্যান হতে পারব না আর।
প্লিজ ফিরে এসো মাহি। অন্তত একবার। এসে তাদেরকে বলে যাও, ‘ক্রিকেট জীবনের প্রথম পাঁচটা ইনিংসে আমি চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছি। তারপরেও বহু ক্যাচ, স্ট্যাম্প মিস করেছি। সেসময় কেউ গেল গেল রব তোলেনি বলেই আমি সবার প্রিয় মহেন্দ্র সিং ধোনি হতে পেরেছি। একটু সময় দিয়ে, সাপোর্ট করে আর্শদ্বীপ, ঋষাভ, রোহিতদেরকে এবার আর্শদ্বীপ, ঋষাভ ও রোহিত হতে দাও প্রিয় ক্রিকেটবোদ্ধাগণ।”