নাসুম নাকি পরী!

আফগানিস্তান তখন সবেমাত্র ব্যাটিং করতে নেমেছে। আর ইনিংসের প্রথম ওভারেই সেই চেনা নাসুম। তুলে নিলেন উইকেট এবং পুরো মিরপুরে শোনা গেল নাসুমের নাম। ঠিক তখনই শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের মিডিয়া সেন্টারের ছাদের দিকে নজরটা পড়লো। দাঁড়িয়ে আছেন ঢাকাই সিনেমার নায়িকা পরিমনি। দর্শকরা এক মুহূর্তের জন্য বোধহয় দ্বিধায় পড়ে গেলেন। কার নাম ধরে চিৎকার করবেন, নাসুম নাকি পরী।

আফগানিস্তান তখন সবেমাত্র ব্যাটিং করতে নেমেছে। আর ইনিংসের প্রথম ওভারেই সেই চেনা নাসুম। তুলে নিলেন উইকেট এবং পুরো মিরপুরে শোনা গেল নাসুমের নাম। ঠিক তখনই মিরপুরই শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের মিডিয়া সেন্টারের ছাদের দিকে নজরটা পড়লো। দাঁড়িয়ে আছেন ঢাকাই সিনেমার নায়িকা পরীমনি। দর্শকরা এক মুহূর্তের জন্য বোধহয় দ্বিধায় পড়ে গেলেন। কার নাম ধরে চিৎকার করবেন, নাসুম নাকি পরী।

দ্বিধা কেটে যেতে বেশিক্ষণ লাগলো না। পুরো গ্যালারি ভর্তি দর্শক একদিকে দেখছেন বাইশ গজে নাসুমের আগুন ঝড়ানো বোলিং। অন্যদিকে মাঠের একপাশে পরিমনির অপার সৌন্দর্য্য। এরপরই মিরপুরে তৈরি হলো এক সুন্দর মুহূর্ত। দর্শকদের একইসাথে নাসুম-পরী স্লোগানে যেন কেঁপে উঠলো মিরপুরের আকাশ-বাতাস।

ওদিকে মিরপুরে ব্যাট হাতে ১৫৫ রান করার কঠিন কাজটা লিটনরা আগেই করে গিয়েছিলেন। হোম অব ক্রিকেটে এই টার্গেট যেকোন দলের জন্যই কঠিন। আফগানিস্তানও স্বাভাবিকভাবেই এই রান তাড়া করতে পারেনি। তবে গল্পটা এখানেই শেষ হয় না। লিটন বন্দনার দিনে আলোটা কেড়ে নিলেন নাসুম আহমেদও।

এই ম্যাচ শুরুর আগেই যে কেউ বলে দিতে পারতো যে ম্যাচের আলোটা কোন স্পিনারের দিকেই পড়বে। আর সবচেয়ে বড় বাজি হিসেবে ছিলেন রশিদ খান, মুজিবুর রহমান কিংবা মোহাম্মদ নবীরা। তবে প্রথম ইনিংসে লিটন দাস সেই বোলিং লাইন আপকে দাঁড়াতেই দেননি। তবে স্পিনারদের মান ঠিকই রাখলেন বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের বড় ভরসা নাসুম আহমেদ।

কী অবিশ্বাস্য ফর্মেই না আছেন এই স্পিনার। বাংলাদেশের ক্রিকেটে নাসুম প্রথম নিজের গুরুত্বটা বোঝালেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। সিরিজের প্রথম ম্যাচেই নাসুমের ঘূর্নিতে জয়ের দেখা পেয়েছিল বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অজি বধের নায়ক হয়ে গেলেন এই স্পিনার।

এরপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নাসুমের ঘূর্নি অব্যাহত থাকলো। বল হাতে যেন ব্যাটসম্যানদের নাচাচ্ছেন। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের পর এবার আফগান ব্যাটিং লাইন আপকে একাই ধ্বসিয়ে দিলেন। আফগানদের প্রথম চার উইকেটই গেল নাসুম আহমেদের পকেটে। আসলেই একজন স্পিনার এই ম্যাচের আলোটা কেড়ে নিলেন। তবে তিনি রশিদ বা মুজিব নন, আমাদের নাসুম।

বাংলাদেশের হয়ে ছোট্ট ক্যারিয়ার তাঁর। তবে এখনই টি-টোয়েন্টি দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠেছেন। সাকিব, মেহেদীদের সাথে নাসুমের কম্বিনেশনটা বিপক্ষ দলকে চোখ রাঙানি দিচ্ছে। আর নাসুমও যেন দিন দিন আরো পরিণত হচ্ছেন। তাঁর উইকেট নেয়ার ক্ষুধাও যেন বেড়েই চলেছে।

আজ শুরুটা করেছেন আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজের উইকেট নিয়ে। ইনিংসের ও নাসুমের প্রথম ওভারেই ফেরান এই ব্যাটারকে। পরের ওভারের প্রথম বলে এসেই আগ্রাসী ব্যাটসম্যান হজরতুল্লাহ জাজাই এর উইকেট। আফগানিস্তানের এরপরের দুই ব্যাটসম্যানও নাসুমের পকেটেই।

সবমিলিয়ে চার ওভার বোলিং করে খরচ করলেন মাত্র ১০ রান। ডট বলই দিয়েছেন মোট ১৭ টি। আর টপ অর্ডারের চার উইকেট তুলে নিয়ে শুরুতেই আফগানদের ম্যাচ থেকে ছিটকে দিলেন। মিরপুরে ঠিক দুই বছর পর গ্যালারি ভর্তি দর্শক। আর সেই দর্শকদের গলায় যেন নাসুম নামটাই সবচেয়ে বেশি শোভা পাচ্ছিল। নাসুম নাসুম চিৎকারে প্রকম্পিত হচ্ছিল গোটা মিরপুর স্টেডিয়াম। যেন পরিমনির দিকে একট নজর দেয়াটা নাসুম পছন্দ করেননি। পুরো আলোটা নাসুমের দিকেই পড়া চাই। নাসুমই তো বাইশ গজের নায়ক।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...