নিভু নিভু প্রদীপ জ্বালিয়ে

সোহানকে নিয়ে বাংলাদেশের বড় একটা ভরসার জায়গা ছিল। সোহান দারুণ একজন টিমম্যান এবং এই মুহূর্তে দেশের সেরা উইকেটরক্ষক। তবে জাতীয় দলে জায়গা থিতু করতে হলে তো ব্যাটিংটাও করা চাই। গতবছর ডিপিএলে ফিনিশার হিসেবে নিজেকে নতুন করে চেনালেন। পাওয়ার হিটিং নিয়ে প্রচুর কাজ করেছেন এবং অফ সাইডে নিজের যে দুর্বলতা ছিল সেটাও কাটিয়ে উঠার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন।

আলোচনায় ছিলেন অনেক দিন ধরেই, তবুও হঠাৎই একটা আলোর দ্যুতি ছড়িয়ে আসলেন। গত বছর এমন সময়েই ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে নিজেকে নতুন করে চেনালেন। নিজের দুর্বলতা নিয়ে কাজ করে আবার ফিরে আসার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলেও ডাক আসলো আবার। তবে নিজের দেয়া সেই প্রতিশ্রুতিটা রাখতে পারেননি কাজী নুরুল হাসান সোহান।

সোহানকে নিয়ে বাংলাদেশের বড় একটা ভরসার জায়গা ছিল। হোক সেটা উইকেটরক্ষণ কিংবা ব্যাটিং। সোহান দারুণ একজন টিমম্যান এবং এই মুহূর্তে দেশের সেরা উইকেটরক্ষক। তবে জাতীয় দলে জায়গা থিতু করতে হলে তো ব্যাটিংটাও করা চাই। গতবছর ডিপিএলে ফিনিশার হিসেবে নিজেকে নতুন করে চেনালেন। পাওয়ার হিটিং নিয়ে প্রচুর কাজ করেছেন এবং অফ সাইডে নিজের যে দুর্বলতা ছিল সেটাও কাটিয়ে উঠার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন।

এছাড়া বাংলাদেশের ক্রিকেটেও একজন ফিনিশারের অভাব নতুন নয়। সেই জায়গাটা পূরণ করতেই সোহানকে জাতীয় দলে আনা হয়েছিল। বিশেষ করে গতবছর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে টানা সুযোগ দেয়া হয়েছে। তবে কখনোই সেই আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি। ফলে এবার আর আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে তাঁকে দলে রাখা হয়নি।

যদিও টেস্ট ক্রিকেটে একেবারে খারাপ করেননি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। তিনি খেললেও লিটনের উপর থেকেও উইকেট সামলানোর চাপটা কমে। তাহলে লিটনকে আরেকটু উপরের দিকে খেলানোর কথাও ভাবতে পারে বাংলাদেশ। এছাড়া নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চে সাত নাম্বারে নেমে দুই ইনিংসে যথাক্রমে করেছিলেন ৪১ ও ৩৬ রান।

ফলে টেস্ট ক্রিকেটে আরো সুযোগ পেতে পারেন এই ব্যাটসম্যান। যদিও তাঁকে নিয়ে বড় স্বপ্নের জায়গাটা ছিল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। তবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে টানা ব্যর্থ হয়েছেন। আবার ওয়ানডে ফরম্যটে তাঁর বাদ পড়া নিয়ে সমালোচনা করা যায়।

এই ফরম্যাটে সোহান যখনই সুযোগ পেয়েছেন ভালো করেছেন। ২০১৬ সালে নিজের অভিষেক সিরিজে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৯ বলে ৪৪ রান করেন। তবে এরপর তাঁকে বাদ দিয়ে দেয়া হয়। আবার জাতীয় দলে নিজের জায়গা ফিরে পেতে সোহানকে পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আবার ওয়ানডে দলে সুযোগ পেলেন।

পাঁচ বছর বাদে ফিরেই ম্যাচ জেতানো একটি ইনিংস খেললেন। তাঁর ৩৯ বলে ৪৫ রানের অপরাজিত ইনিংসেই জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। ফলে এই ফরম্যাটে তিনি আরেকটু সুযোগ পেতেই পারতেন। এরপর মাঝে অনেকদিন ওয়ানডে ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে এবার আর স্কোয়াডেই রাখা হলো না সোহানকে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দিয়ে বিচার করেই তাঁকে দল থেকে বাদ দেয়া হলো। ফলে গত বছর যেই আলোকছটা দেখিয়ে সোহান জাতীয় দলে এসেছিলেন বছর ঘুরতেই তা এখন নিভু নিভু।

তবুও, টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর এখনো নিজেকে প্রমাণ করার জায়গা আছে। তবে তাঁকে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। সাত নাম্বারে নেমে স্লগ করতে পারবেন এমন একজন ব্যাটসম্যান টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের বেশ প্রয়োজন। এছাড়া কিপিং গ্লাভস হাতে তাঁর ক্যারিশমাও অনেক সময় দলকে জিতিয়ে দিতে পারে। তাই এত সহজেই সোহানের হারিয়ে যাওয়াটা বিরাট ক্ষতিই বটে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...