ভিনিসিয়াস, ক্লাবের রাজা ব্রাজিলে হতশ্রী!

সুতরাং, নেইমারের জুতায় পা গলানোটা আপাতত ভিনির জন্য যে বড্ড কঠিন তা একদম দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট। ভিনি কি আদৌও ব্রাজিলের সুপারস্টার হতে পারবে, নাকি রয়ে যাবে ক্লাব তারকা হয়ে সেটিই এখন দেখার বিষয়!

ভিনিসিয়াস জুনিয়র – সমগ্র ইউরোপে যেন এক ত্রাসের নাম। অল্পের জন্য তিনি জিততে পারেননি ব্যালন ডি’অরের পুরস্কার। ক্লাব ফুটবলে বাঘা বাঘা দলকে একাই গুড়িয়ে দিতে দেখা যায় তাঁকে।

অ্যানফিল্ড থেকে ন্যু ক্যাম্প অথবা ম্যানচেস্টার সিটির ইতিহাস কিংবা অন্য কোন বড় নামের স্টেডিয়াম, কিছুই থোড়াই কেয়ার করেন ভিনি! রীতিমতো সেগুলোকে ট্রেনিং গ্রাউন্ড বানিয়েই নিজের বীরত্বগাথা লেখে চলেছেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র।

চলতি মৌসুমে ইতিমধ্যেই লা-লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগ মিলিয়ে ১৬ ম্যাচে ১২ গোল, ৬ অ্যাসিস্ট করে ফেলেছেন তিনি। গত মৌসুমেও ক্লাব ফুটবলে ৩৯ ম্যাচে ২৪ গোল, ১১ অ্যাসিস্ট ছিল।

চারদিকেই জয়জয়কার আছে এই উঠতি তারকার , ছিলেন ব্যালন ডি’অরের ও দাবিদার। এত দূরেও না, এই আন্তর্জাতিক বিরতির আগেই সর্বশেষ রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলা ম্যাচটা তেই হ্যাট্রিক আছে তার ঝুলিতে।

তবে জাতীয় দলে এলেই যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলেন ভিনি। কালকের ম্যাচে পেনাল্টি মিস করেছেন, সেখান থেকে ফিরতি আসা সুযোগটাও কাজে লাগাতে পারেননি। ফলাফল পুঁচকে ভেনিজুয়েলার সাথে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে ব্রাজিলকে। ব্রাজিলে তার অধারাবাহিকতাটা যেন বেশ ‘ধারাবাহিক’।

ব্রাজিলের হয়ে ৩৬ ম্যাচ খেলা ভিনির গোল ও অ্যাসিস্ট মোটে পাঁচটি করে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ১৩ ম্যাচে একটি করে গোল আর অ্যাসিস্ট। কোপা অ্যামেরিকায় সাত ম্যাচে দুই গোল। বিশ্বকাপেও এক দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচটি বাদ দিলে তিনি আরও নিষ্প্রভ।

তিনি ব্রাজিলের শ্রেষ্ঠত্বের উত্তরসূরি, সেখানে পেলে-রোনালদো নাজারিও কিংবা নেইমাররা ছিলেন একটা সময়। অথচ জাতীয় দলের হয়ে নেইমারের পারফরম্যান্স অতিমানবীয়।

বিশ্বকাপে ১৩ ম্যাচ খেলে ৮ গোল, ৪ অ্যাসিস্ট তাঁর। কোপা অ্যামেরিকায় ১২ ম্যাচে পাঁচ গোল, চার অ্যাসিস্ট। কনফেডারেশনস কাপে পাঁচ ম্যাচে চার গোল, দুই অ্যাসিস্ট। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ২৮ ম্যাচে ১৬ গোল, ১৯ অ্যাসিস্ট তার।

এমনকি ২০২২ বিশ্বকাপ বাছাইয়েও ১০ ম্যাচে ৮ গোল, আট অ্যাসিস্ট ছিল তাঁর। ২০১০ সালের পরের থেকে নেইমার খেলেছে এমন ম্যাচে ব্রাজিলের মোট গোলের প্র‍ায় ৬০ শতাংশ অবদান নেইমারের। এ সময়ে ব্রাজিলের করা ২৬৫ গোলের মধ্যে তারই গোল আর অ্যাসিস্ট ১৩৮ টি।

সুতরাং, ব্রাজিলিয়ার প্রত্যাশার বিরাট জুতায় পা গলানোটা আপাতত ভিনির জন্য যে বড্ড কঠিন তা একদম দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট। ভিনি কি আদৌও ব্রাজিলের সুপারস্টার হতে পারবেন, নাকি রয়ে যাবে ক্লাব তারকা হয়ে – সেটিই এখন দেখার বিষয়!

Share via
Copy link