ইংলিশদের স্পিন দূর্বলতায় ভারতের শিকারির চোখ

ভারতের এই দলটা যে নিজেদের পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঘটাতে পারে, সে প্রমাণ তো এত বাউন্ডারির পরও ১৬৫ রানে ইংল্যান্ডকে আটকে দেওয়া।

ভারতের একাদশে চার জন স্পিনার। শেষ কবে, এরকম পরিকল্পনায় খেলেছিল ভারত – খুঁজে বের করা দুস্কর। পার্ট টাইমার অভিষেক শর্মা মিলিয়ে পাঁচজন স্পিনার নিয়ে খেলতে নেমেছে তারা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। কন্ডিশনের পূর্ণ ফায়দা তুলে নেওয়ার চেষ্টা। চেন্নাইয়ের এম চিদাম্বরাম স্টেডিয়ামে টিম ইন্ডিয়ার পরিকল্পনা বিফলে যায়নি।

একমাত্র জেনুইন পেসার হিসেবে আর্শদ্বীপ সিংয়ের হাতেই উঠেছিল নতুন বল। সে বলে সফলতা এনে দিতে কোন প্রকার ভুল করেননি বা-হাতি এই পেসার। ইংলিশ ওপেনার ফিল স্লট আউট হয়েছেন আর্শদ্বীপের বলে। এরপরের ইনিংসের প্রায় পুরোটা জুড়েই রয়েছে ভারতীয় স্পিনারদের দাপট।

এতটা স্পিন নির্ভরতার ভারতকে একটু নতুন ঠেকছে নিশ্চয়ই। কিন্তু ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এবারের সিরিজে ভারতের সার্বিক পরিকল্পনা পরিষ্কার। দলে স্পিনারদের সংখ্যা বাড়িয়ে, স্পিন বান্ধব উইকেটে সফরকারীদের কাবু করতে হবে।

দ্বিতীয় ম্যাচে ঘটেছে ঠিক তেমনটাই। ১৬৫ রানে থেমেছে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ইনিংস। ইংলিশদের নয় উইকেটের মধ্যে ছয় উইকেটই গিয়েছে স্পিনারদের পকেটে। বরুণ চক্রবর্তীর গুগলি ধরতে ব্যর্থ হ্যারি ব্রুক। উড়ে গেছে তার স্ট্যাম্প। একই কায়দায় আউট হয়েছেন অভিষিক্ত জেইমি ওভারটনও।

এদিন অবশ্য ভারতীয় স্পিন আক্রমণের বিপক্ষে ইংলিশ ব্যাটাররা আক্রমণ চালাতে পিছপা হয়নি। কিন্তু প্রায় প্রতিবার শেষ হাসিটা হেসেছে অভিষেক শর্মারা। পার্টটাইম বোলার হিসেবে বোলিং প্রান্তে আসেন অভিষেক। প্রথম দুই বলে একটি করে ছক্কা-চার হজম করেন বা-হাতি অলরাউন্ডার।

তৃতীয় বলেও শট চালান জেইমি স্মিথ। কিন্তু লং অফে কাঁটা পড়তে হয় তাকে। অক্ষর প্যাটেল দুইটি উইকেট তুলে নিয়েছেন। অভাগা ছিলেন স্রেফ রবি বিষ্ণ। তার ভাগ্যে জোটেনি কোন উইকেট। ইনিংস শেষে অক্ষর খোদ জানিয়েছেন প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তা বিচারে একাদশে স্পিনারদের আধিক্য।

সাম্প্রতিক সময়ে রোলার কোস্টার রাইডের সবচেয়ে বাজে সময়টা পার করেছে ভারত। তাইতো নিজেদের আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধারে প্রতিপক্ষের দূর্বলতা ও কন্ডিশনের ফায়দা তুলে নিতে চেয়েছে গৌতম গম্ভীরের শীষ্যরা। এতে দোষের কিছু নেই। যদিও টি-টোয়েন্টি দলটা ভয়ংকর এক গতিতে ছুটে চলছে অমরত্বের পথে।

সঠিক পরিকল্পনা ও খেলার মাঠে ঠিকঠাক বাস্তবায়ন তাদের সেই লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে নিশ্চয়ই। অক্ষরের মতে চিপকের উইকেট বেশ ভাল। একটু ভুল স্থানে বল করলেই বাউন্ডারি হজম করতে হয়েছে তাদের। ক্রমাগত উইকেট পতনের পরও দশটি চার ও নয়টি ছক্কা হাঁকিয়েছে ব্যাটাররা।

ভারতের এই দলটা যে নিজেদের পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঘটাতে পারে, সে প্রমাণ তো এত বাউন্ডারির পরও ১৬৫ রানে ইংল্যান্ডকে আটকে দেওয়া। বলাই বাহুল্য, ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলও স্পিন নির্ভর। ফলে, সেই আসরের রূপরেখাটাও এখান থেকে নির্মানের সূচনা করে ফেলেছে ভারত।

Share via
Copy link