প্লে-বয় ইমেজের আড়ালে…
ড্রেসিংরুমে ফিরে যে লোকটা বসে বসে মেয়েদের ফ্যানমেল পড়তেন, তাঁরই ভয়ে গোটা ড্রেসিংরুম কাঁপত! আবার ১৯৯২-তে তাঁর অধিনায়কত্বে খেলতে আপত্তি জানিয়েছিলেন দলের অধিকাংশ সিনিয়র প্লেয়ার। সেখানে বিশ্বকাপের সেমি ফাইনালে মার্টিন ক্রো’র নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আনকোরা ইনজামামকে নামালেন, ইনজির ৩৭ বলে ৬০-এর ঝোড়ো ইনিংসে ম্যাচ পকেটে পুরল পাকিস্তান। পরে প্রেসকে বললেন, ‘আমি হারতে আসিনি, এটা বাকিদের বোঝা উচিত!’
সমস্যা হল, ইমরান খান এমন এক ব্যক্তিত্ব যাকে নিয়ে লিখতে গেলে ভাবতে হয়। কিছু কিছু এমন স্পোর্টস পার্সন থেকেই যায় যাদের নিয়ে লিখতে গেলে পারতপক্ষে চিন্তাশীল হতে হয়। স্বয়ং ওয়াসিম আকরাম একবার তাঁকে বলেছিলেন শোলের গাব্বার সিং!
আরও পড়ুন
- ড্রেসিংরুমে দাউদ ইব্রাহিম, বাতিল হওয়া বিমান টিকেট ও ‘দেবদাস’
- অভিজাত অলরাউন্ডার, অনবদ্য অধিনায়ক
- তোমার তুলনা হয় না
- এক প্রহেলিকার নাম ইমরান খান
- আহত বাঘের বিশ্বজয়
ড্রেসিংরুমে ফিরে যে লোকটা বসে বসে মেয়েদের ফ্যানমেল পড়তেন, তাঁরই ভয়ে গোটা ড্রেসিংরুম কাঁপত! আবার ১৯৯২-তে তাঁর অধিনায়কত্বে খেলতে আপত্তি জানিয়েছিলেন দলের অধিকাংশ সিনিয়র প্লেয়ার। সেখানে বিশ্বকাপের সেমি ফাইনালে মার্টিন ক্রো’র নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আনকোরা ইনজামামকে নামালেন, ইনজির ৩৭ বলে ৬০-এর ঝোড়ো ইনিংসে ম্যাচ পকেটে পুরল পাকিস্তান। পরে প্রেসকে বললেন, ‘আমি হারতে আসিনি, এটা বাকিদের বোঝা উচিত!’
পাকিস্তানের হয়ে ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ জিতে ক্রিকেট ছাড়লেন। ততদিনে ক্যান্সার হসপিটালের কাজে পুরোপুরি মনোনিবেশ করেছেন। লাহোরের পথে পায়ে হেঁটে ঘুরছেন, সেচের সমস্যা দেখছেন। সেইভাবে রাজনীতিতে আসা। এই বিষয়ে একটা ইন্টারভিউতে নিজেই বলেছেন, ‘রাজনীতিতেও জাভেদ মিয়াঁদাদকে নেব?’
নারী ভক্তদের মধ্যে অসম্ভব জনপ্রিয়। হ্যান্ডসাম যুবক তখন, মাঠে বল করতেন জামার দুটো বোতাম খুলে। সে সময় জামার বোতাম খোলাটা ছিল একটা সেক্সি সিগনেচার। ইমরানের মহিলা ফ্যানবেস ছিল চূড়ান্ত। ঠিক সেই সময় বিবিসির একটা ইন্টারভিউতে তাঁকে প্রশ্ন করা হল – এই প্লে বয় ইমেজটাকে কতটা কেয়ার করেন আপনি? উত্তরে এল, ‘আমি একজন হার্ডওয়ার্কিং ক্রিকেটার। আমার পরিচয় সেটাই।’
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, পাকিস্তানের অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপ জেতা। রিটায়ার করার আগেই নিজে লিখেছেন নিজের আত্মজীবনী। এ এক অন্য ইমরান। আসলে ইমরান খান মানে একরাশ নারী ভক্তের মাঝে ঢাকা পড়ে যাওয়া একজন সেরা অলরাউন্ডার।
ইমরান খান মানে নিজেকে সর্বোচ্চের সর্বোচ্চ পর্যায়ে দেখা। বিছানায় ক্লান্ত দুটো চোখ বোজানোর আগে ভোর চারটেয় অ্যালার্ম সেট করে পরদিন ভোরে কুড়ি পাক দৌড়। খাটনি, যেটা আমাদের জেনারেশনে করতে দেখেছি ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে। ইমরান খান, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোরা ঐ লেভেলের, যে লেভেলটা বারবার মনে করায় – বেস্ট হওয়ার খিদে মেটার নয়। মিটবেও না। খাটনি, খাটনি এবং খাটনি।
ইমরান খান আদতে তুমুল লড়াকু। লড়াকুদের নিয়ে লিখতে গেলে একটু তো ভাবতে হয়ই, হুট হাট কিছুই হয় না চাইলেই।