ঢাকায় উইল জ্যাকসের এক কাপড়ে দুই দিন

গত বছরখানেক জুড়েই দারুণ সময় কাটাচ্ছেন ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যান উইল জ্যাকস। বিশ্বজুড়ে ফ্যাঞ্চাইজি লিগগুলোর নিয়মিত মুখ হয়ে উঠছেন। টেস্টের পাশাপাশি ওডিয়াইতেও অভিষেকটা হয়ে গেলো বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। দম ফেলবারও ফুসরত নেই এই ব্যাটারের কাছে। অথচ বাংলাদেশে পা রাখতেই কি বিড়ম্বনাতেই না পড়তে হয়েছিল তাঁকে, বিমানবন্দরে লাগেজ আটকে প্রায় দুই দিন থাকতে হয়েছে এক কাপড়ে। 

বাংলাদেশে আসা অবশ্য এবারেই প্রথম নয় জ্যাকসের জন্য। বিপিএলের ২০২১-২২ মৌসুমে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে মাঠ মাতিয়েছিলেন তিনি। সেবারে তাঁর মারকুটে ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ হয়েছিল সবাই। ১১ ম্যাচে ৪১ গড় এবং ১৫৫ স্ট্রাইকরেটে ৪১৪ রান করেছিলেন তিনি। এবারের ওডিয়াই সিরিজে ডাক পাওয়ার পেছনের কারণও ছিল এটাই, পরিচিত কন্ডিশনের সুযোগ কাজে লাগানো। শুরুতে অবশ্য দলে ছিলেন না, পরে ট্ম অ্যাবেলের চোটের সুবাদে ডাকা হয় তাঁকে। 

দ্বিতীয়বারে বাংলাদেশে পা রাখার শুরুটা অবশ্য মোটেই সুখকর হয়নি জ্যাকসের জন্য। তাঁর লাগেজ আটকে গিয়েছিল শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। অথচ সেই লাগেজেই কিনা প্র্যাকটিস কিট থেকে শুরু করে পোশাক-পরিচ্ছদ সবকিছু ছিল তাঁর। ফলে সফরের প্রথম দুই দিন নিদারুণ যন্ত্রণায় কেটেছে এই ক্রিকেটারের। 

অনুশীলন কিট না থাকায় ঠিকভাবে অনুশীলনও করতে পারেননি প্রথম ম্যাচের আগে। সতীর্থদের কাছে থেকে রীতিমতো ধার করে দলের সাথে অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন তিনি। ফিল সল্টের কাছে থেকে নিয়েছিলেন গ্লাভস, অন্যদিকে ব্যাট নিয়েছিলেন ডেভিড মালানের কাছে থেকে। কিন্তু অন্যের ব্যাট দিয়ে কি আর মনমতো অনুশীলন হয়!

তাছাড়া পোশাক নিয়েও কি কম বিড়ম্বনা! একই পোশাকে তাঁকে থাকতে হয়েছে টানা ৪৮ ঘন্টা। দুইদিন কোনোপ্রকার পোশাক বদলের সুযোগই পাননি। একবার কল্পনা করুন তো, জাতীয় দলের হয়ে আপনার অভিষেকের সময়টা ঘনিয়ে আসছে অথচ আপনি কিনা দুদিন যাবত পোশাকই বদলাতে পারছেন না!

তবে এহেন বিড়ম্বনা সত্ত্বেও অভিষেকটা কিন্তু মন্দ হয়নি জ্যাকসের। সিরিজের শুরুটা ইংল্যান্ড করেছে জয় দিয়েছে এবং তাতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে এই ক্রিকেটারের। এমনিতে টপ অর্ডারে ব্যাট করলেও জাতীয় দলে নামতে হয় মিডল অর্ডারে। তাতে জ্যাকসের থোড়াই কেয়ার, ছয়ে নেমে মিরপুরের স্লো পিচে খেলেছেন ৩১ বলে ২৬ রানের মূল্যবান এক ইনিংস। এছাড়া বল হাতে তুলে নিয়েছেন আফিফ হোসেনের উইকেট। সবমিলিয়ে বলা যায় জ্যাকসের শুরুটা মন্দ হয়নি!

জ্যাকস অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন বাংলাদেশে খেলার অভিজ্ঞতা সাহায্য করেছে তাঁকে। এমনকি যে মেহেদি মিরাজের বলে আউট হয়েছেন, সেই মিরাজ ছিলেন চট্টগ্রাম দলে তাঁর সতীর্থ। ফলে ম্যাচে বাকি স্পিনারদের সামলাতে বিশেষ বেগ পোহাতে হয়নি এই তারকাকে। 

ইংল্যান্ড জাতীয় দলে খেলার সুযোগ মিললেও এখনো দলে নিয়মিত নন এই তারকা। পায়ের তলার মাটিটা শক্ত করাই এখন জ্যাকসের মূল লক্ষ্য। পরিচিত বাংলাদেশ সফর দিয়েই তিনি শুরু করতে এই যাত্রা।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link