ইয়ে হ্যায় ক্রিকেট

শোকের স্রোতে মিলেছেন শচীন টেন্ডুলকার, বিরাট কোহলিরাও। তবে শচীনদের শোকের একটা আলাদা কারণ আছে। কারণ, বাপ্পী কেবল মিউজিকের লোক ছিলেন না; ক্রিকেটের সাথে অঙ্গাঙ্গী ভাবে মিশে থাকা একজন মানুষ ছিলেন।

একটু কল্পনা করুন দৃশ্যটা।

ভারতের ম্যাচ চলছে। ড্রেসিংরুমে সামান্য একটু উত্তেজনা। এর মধ্যে একজন কিংবন্তী ক্রিকেটার মৃদু শব্দে শুনে চলেছেন গান-ইয়াদ আ রাহা হ্যায়।

শুনতে বিস্ময়কর শোনালেও দৃশ্যটা সত্যি। আর এই ঘটনার নায়ক খোদ শচীন টেন্ডুলকার বলেছেন, এটা ছিলো তার জন্য নিয়মিত ঘটনা। ড্রেসিংরুমে তিনি একটু টেনশন লাগলেই এই ‘ইয়াদ আ রাহা হ্যায়’ গানটা শুনতেন। আর সেই গানটারই স্রষ্ঠা, গায়ক বাপ্পী লাহিড়ি আজ চলে গেলেন।

বাপ্পী লাহিড়ী ছিলেন ভারতীয় মিউজিকের ডিস্কো বয়। মুম্বাই চলচ্চিত্রে এই ধারার গানের পথপ্রদর্শক হিসেবে বাংলার মানুষ বাপ্পী লাহিড়ী ভারতের এক চিরশ্রদ্ধেয় মানুষ। তার প্রয়াণে ব্যথিত সঙ্গীত সহ বিভিন্ন অঙ্গনের তারকারা।

এই শোকের স্রোতে মিলেছেন শচীন টেন্ডুলকার, বিরাট কোহলিরাও। তবে শচীনদের শোকের একটা আলাদা কারণ আছে। কারণ, বাপ্পী কেবল মিউজিকের লোক ছিলেন না; ক্রিকেটের সাথে অঙ্গাঙ্গী ভাবে মিশে থাকা একজন মানুষ ছিলেন।

ভারতের সঙ্গীতার। ফলে অনেক আগে থেকেই বাপ্পী লাহিড়ির সাথে ক্রিকেটের সম্পর্ক থাকাটা স্বাভাবিক। তবে সেই ব্যাপারটা প্রথম বড় পর্দায় আসে ১৯৯০ সালে। দেব আনন্দ পরিচালিত ‘আওয়াল নাম্বার’ সিনেমার সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন বাপ্পী। আর এই সিনেমায় তিনি একটা গান তৈরি করেন ‘ইয়ে হ্যায় ক্রিকেট’। উদিত নারায়ন ও অমিত কুমারের সাথে এই গানে কণ্ঠও দেন বাপ্পী।

এই গানে ক্রিকেট মাঠ, ব্যাটসম্যান ও বোলারের বর্ননা থেকে শুরু করে খেলার বর্ণনা ছিলো। ক্রিকেটের সাথে জীবন মেলানো একটা গান ছিল এটা।

আসলে ছবিটাও ছিল ক্রিকেটকেন্দ্রিক। ৬৭ বছর বয়সী দেব আনন্দ নিজেও অভিনয় করেন। যদিও, বলিউড বক্স অফিস এই ছবি গ্রহণ করেনি।

এরপর বিভিন্ন ক্রিকেট অনুষ্ঠানে বাপ্পী ছিলেন নিয়মিত মুখ। আইপিএলের ষষ্ঠ আসরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মাতিয়েছিলেন বাপ্পী। সেটা ছিলো তার ক্যারিয়ারের অন্যতম বড় একটা সঙ্গীতায়োজন।

২০১১ সালের বিশ্বকাপ উপলক্ষে বাপ্পী লাহিড়ি করেছিলেন বড় একটা আয়োজন। ৬টি ক্রিকেট বিষয়ক গান নিয়ে করেছিলেন পুরো একটা এলবাম। সেই অ্যালবাম ভারতে বেশ সাড়া ফেলেছিলো। ‘কাম অন ইন্ডিয়া’ নামে সেই এলবাম ভারতীয় দলকে অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য করা হয়েছিলো।

বাপ্পীর সাথে সম্পর্ক ছিলো বাংলাদেশের ক্রিকেটেরও। ২০১২ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের থিম সং কম্পোজ করেছিলেন তিনি। সেই থিম সংয়ে বাপ্পী ছাড়াও শান ও কুমার বিশ্বজিত কণ্ঠ দিয়েছিলেন। এখনও বিপিএলের খেলার মাঝে মাঝে বেজে ওঠে সেই গান।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...