ঘাম ঝরিয়ে দিল্লীর প্রথম জয়

কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়ে এবারের আইপিএলে প্রথম জয়ের স্বাদ পেল দিল্লী ক্যাপিটালস। অবশ্য দিল্লীর পাওয়া প্রথম এ জয়টা এসেছে অনেকটা ঘাম ঝরিয়েই। কলকাতার দেওয়া সহজ লক্ষ্য টপকাতে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে শেষ ওভার পর্যন্ত।

টানা ৫ ম্যাচ হেরে এবারের আইপিএলে এক প্রকার ব্যর্থতার বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছিল দিল্লী ক্যাপিটালস। তবে টানা হারের সেই বৃত্ত অবশেষে ভাঙতে সক্ষম হয়েছে তাঁরা। কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়ে এবারের আইপিএলে প্রথম জয়ের স্বাদ পেল দিল্লী ক্যাপিটালস। অবশ্য দিল্লীর পাওয়া প্রথম এ জয়টা এসেছে অনেকটা ঘাম ঝরিয়েই। কলকাতার দেওয়া সহজ লক্ষ্য টপকাতে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে শেষ ওভার পর্যন্ত।

নিজেদের এ প্রথম জয় তুলে নেওয়ার দিনে টসভাগ্যও ছিল দিল্লীর পক্ষে। টসে জিতে এ দিন দিল্লীর অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন। তবে সে সব কিছু ছাপিয়ে এ দিন আগ্রহের বিষয় হয়ে উঠেছিল আইপিএলের মঞ্চে লিটন দাসের অভিষেক। অভিষেকেই জেসন রয়ের সাথে ইনিংস শুরুর দায়িত্ব উঠেছিল লিটনের কাঁধে।

আর তাতে শুরুটা ভালই করেছিলেন বাংলাদেশের এ উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ইশান্ত শর্মার ফুল লেংথের বলে দারুণ এক কাভার ড্রাইভে বল পাঠান বাউন্ডারিতে। এতেই  আইপিএল অভিষেকে প্রথম বলে বাউন্ডারি পেয়ে যান লিটন। তবে এমন আত্মবিশ্বাসী শুরু শেষ পর্যন্ত দারুণ কিছু যোগ করতে পারেনি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ঐ ৪ রানেই থামে লিটনের ইনিংস।

লিটনের এ ইনিংসের পথ ধরে পরবর্তীতে কলকাতার অন্য ব্যাটাররাও এ দিন ব্যর্থ হয়েছেন। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া ভেঙ্কটেশ আইয়ার এ দিন ফিরে যান শূন্য রানেই। এরপর অধিনায়ক নিতিশ রানাও ফিরে যান দ্রুতই। কলকাতার ব্যাটারদের উইকেটে এমন যাওয়া আসার মিছিলে যোগ দেন রিঙ্কু সিংও।

কলকাতার হয়ে এ দিন উইকেট আগলে রেখেছিলেন ওপেনিংয়ে নামা জেসন রয়। তবে তাঁর ৪৩ রানের ইনিংসও তেমন কোনো পথ দেখাতে পারেনি। জেসন রয় আউট হয়ে ফিরে যাওয়ার পর ৯৬ রানের মাঝেই ৯ উইকেট হারিয়ে ফেলে কলকাতা নাইট রাইডার্স।

এমতাবস্থায় ১০০ এর নিচে অলআউট হওয়ার সম্ভাবনা জেগেছিল কলকাতার ইনিংসে। তবে আন্দ্রে রাসেলের শেষ দিকের ঝড়ে কিছুটা মান বাঁচানো সংগ্রহ পায় কলকাতা। মুকেশ কুমারের করা ইনিংসের শেষ ওভারে টানা ৩ ছক্কা হাঁকিয়ে কলকাতার ইনিংসে ১২৭ রানের সংগ্রহ এনে দেন ড্রে রাস।

১২৮ রানের সহজ লক্ষ্য। দিল্লী ক্যাপিটালসের ইনিংসও শুরু হয় দৌর্দণ্ড্য প্রতাপে। দলীয় ৩৮ রানে পৃথ্বী শ আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে গেলেও উইকেট আগলে রেখে সাবলীল ব্যাটিং করতে থাকেন অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। গ্যাপ খুঁজে চার মারার দিকেই যেন এদিন মূল লক্ষ্য ছিল অজি এ ব্যাটারের। ৩৩ বলে ব্যক্তিগত পঞ্চাশে পৌঁছে যান। যার মধ্যে চারই মারেন ১১ টি।

ডেভিড ওয়ার্নারের ব্যাট হাতে এমন উজ্জ্বল থাকার দিনে আবার ব্যর্থ হয়েছেন আরেক অজি ব্যাটার মিশেল মার্শ। মাত্র ২ রানেই শেষ হয়ে যায় তাঁর ইনিংস। মার্শের পথ ধরে প্রথম বারের মতো আইপিএল ম্যাচ খেলতে নেমে নিজেকে রাঙাতে পারেননি ফিলিপ সল্টও। ইংলিশ এ ব্যাটার ফিরে যান ৫ রানে।

অবশ্য এ দুই ব্যাটারের ব্যাটিং ব্যর্থতা দলের তেমন বিপত্তি ঘটাতে পারেনি। ওয়ার্নারের ব্যাটে চেপে সহজ জয়ের পথেই এগিয়ে যায় দিল্লী। ওয়ার্নার অবশ্য ম্যাচ শেষ করে আসতে পারেননি। ব্যক্তিগত ৫৭ রানে বিদায় নেন এ ব্যাটার।

ওয়ার্নার আউট হওয়ার কিছুক্ষণ বাদে মানিষ পাণ্ডেও ফিরে যান ব্যক্তিগত ২১ রানে। এরপর ১ রানের মাঝে আরো একটি উইকেট হারিয়ে ফেলে দিল্লী। কলকাতার স্পিন বিষে তখন ম্যাচ কিছুটা জমে ওঠে। প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচে কিছুটা আলো ফিরতে শুরু করে কলকাতা শিবিরে।  তবে শেষ পর্যন্ত সে সব কোনো কিছুই দিল্লীর জয়ের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। ৪ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় দিল্লী ক্যাপিটালস।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...