ইংল্যান্ডের জন্য রহস্য হয়েই থাকছেন বরুণ চক্রবর্তী। কোনো ভাবেই তাঁর চক্র থেকে আর বের হওয়া হল না ইংল্যান্ড ব্যাটারদের। ভারতের স্পিন নির্ভর বোলিং আক্রমণে প্রতিটা দিনই নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন এই রহস্য স্পিনার।
রহস্যের সেই ধারাবাহিকতায় এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্বিতীয়বারের মত পাঁচ উইকেট পেলেন এই স্পিনার। গোটা সিরিজে এখন পর্যন্ত তিন ম্যাচেই দশ উইকেট। যথারীতি রাজকোটেও তাঁর বোলিংয়ে নাকানি চুবানি খেলেন ইংলিশ ব্যাটাররা।
আসলে বরুণের ক্যারিয়ারের পুরোটাই তো এমন রহস্যে ঘেরা। প্রথম যখন আইপিএল নিলামে নাম ওঠে ভিত্তিমূল্য ছিল ২০ লাখ রুপি। সেবার নিলাম যুদ্ধ শেষে পাঞ্জাব তাঁকে কিনে নিয়েছিল আট কোটি বিশ লাখ রুপিতে। বয়স তখন ২৭।
অবশ্য লড়াইটা তো শুরু আরও আগে। ১৩ বছর বয়সে ক্রিকেট খেলা শুরু। ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত ছিলেন কিপার-ব্যাটসম্যান। সুবিধে করতে পারছিলেন না। বয়সভিত্তিক বিভিন্ন দলগুলিতে জায়গা পাচ্ছিলেন না। হতাশ হয়ে ক্রিকেট ছেড়ে মন দিলেন পড়াশোনায়। চেন্নাইয়ের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ বছরের কোর্স করে কিছুদিন ফ্রিল্যান্স স্থপতি হিসেবে কাজ করলেন। টেনিস বলে ক্রিকেট অবশ্য খেলে যাচ্ছিলেন টুকটাক।
টেনিস বলে খেলতে খেলতেই ক্রিকেটের প্রতি পুরোনো প্রেম তীব্র হয়ে তাঁকে নাড়া দিল আবার। স্থাপত্য পেশা ছেড়ে একটি ক্লাবে খেলা শুরু করলেন ট্রায়াল দিয়ে। কিপার-ব্যাটসম্যান থেকে তিনি ততদিনে পেস বোলিং অলরাউন্ডার।
কিন্তু বিধিবাম, ক্লাবের হয়ে দ্বিতীয় ম্যাচেই ইনজুরি। সেটিই পরে হয়ে উঠল শাপেবর। ইনজুরির কারণেই এবার হয়ে গেলে স্পিনার। তুমুল মার খেয়েছেন শুরুতে। তাতে আরও জেদ চেপেছে, নিজেকে সমৃদ্ধ করতে লড়াই করে গেছেন।
ইনজুরির পর ফিরে খেললেন চেন্নাইয়ের চতুর্থ বিভাগের এক ক্লাবে। সেখানেই বৈচিত্রময় স্পিন দিয়ে পরিচিতি পেয়ে গেলেন রহস্য স্পিনার হিসেবে। এরপর আইপিএল নেটে পেলেন খোদ সুনীল নারাইনের সানিধ্য। বড় পর্যায়ে নজর কাড়েন তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগে (টিএনপিএল)।
সেখান থেকে আইপিএল। বাকিটা তো ইতিহাস। আর্কিটেক্ট পেশা ছেড়ে ভাগ্যিস তিনি ক্রিকেট জীবনে ফিরেছিলেন!