অকালে ঝরা পাকিস্তানি আফসোস

পাকিস্তান ক্রিকেটে যুগে যুগে অনেক প্রতিভা এসেছে। বিশেষ করে বিস্ময়কর সব তরুণ প্রতিভা জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের কোনো জুড়ি নেই। তাঁদের মধ্যে কেউ নিজের প্রতিভার সম্পূর্ণটুকু দিয়ে নিজেকে সেরা পরিণত করেছেন। আবার কেউ নিজের প্রতিভার সিকিভাগ দেবার আগেই হারিয়ে গেছেন ক্রিকেট থেকে। এদের হারিয়ে যাওয়ার কারণ সব সময় শুধু বাজে পারফরম্যান্স বা অফফর্ম না, বোর্ড রাজনীতিও জড়িত আছে এদের সাথে।

পাকিস্তান ক্রিকেটে যুগে যুগে অনেক প্রতিভা এসেছে। বিশেষ করে বিস্ময়কর সব তরুণ প্রতিভা জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের কোনো জুড়ি নেই। তাঁদের মধ্যে কেউ নিজের প্রতিভার সম্পূর্ণটুকু দিয়ে নিজেকে সেরা পরিণত করেছেন। আবার কেউ নিজের প্রতিভার সিকিভাগ দেবার আগেই হারিয়ে গেছেন ক্রিকেট থেকে। এদের হারিয়ে যাওয়ার কারণ সব সময় শুধু বাজে পারফরম্যান্স বা অফফর্ম না, বোর্ড রাজনীতিও জড়িত আছে এদের সাথে।

পাকিস্তান ক্রিকেটে কয়েকটা ম্যাচ খেলে প্রতিভাবান ক্রিকেটারের তকমা পেয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নেওয়া ক্রিকেটারের সংখ্যা অনেক। শুধু পাকিস্তানের ক্রিকেটেই নয়, আন্তর্জাতিক বিবেচনাতেও তাঁরা বিরাট আক্ষেপের নাম। পাকিস্তান ক্রিকেটে কম বয়সেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন এমন কিছু ক্রিকেটারদেরকে নিয়ে খেলা ৭১ এর আজকের এই আয়োজন।

  • আকিব জাভেদ

পাকিস্তানের অন্যতম প্রতিভাবান পেসার ছিলেন আকিব জাভেদ। পাকিস্তান ক্রিকেটে যুগে যুগে অনেক পেসার এসেছেন তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন আকিব জাভেদ। কিন্তু জাতীয় দলে ওয়াকার ইউনুস এবং ওয়াসিম আকরামের দাপটে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ফলাফল, পারফর্ম করেও দর্শকদের নজরে না আসা এবং এক সময় জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া।

আকিব জাভেদ পাকিস্তান দলের হয়ে সর্বশেষ মাঠে নেমেছিলেন ১৯৯৮ সালে মাত্র ২৫ বছর বয়সে। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলেছিলেন ২২ টেস্ট এবং ১৬৩ ওয়ানডে।

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে টেস্টে ৫৪ এবং ওয়ানডেতে ১৮২ উইকেট শিকার করেন আকিব জাভদ।

  • ইমরান নাজির

পাকিস্তানের আরেক প্রতিভাবান ক্রিকেটার। এই ওপেনারের জাতীয় দলে অভিষেক ১৯৯৯ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে। ব্যাটিং টেকনিক এবং ফুটওয়ার্ক সমস্যার কারণে টিকে থাকতে পারেননি ইমরান নাজির। তিনি সর্বশেষ টেস্ট দলের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন ২০০২ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে। আর ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতে শেষ বারের মত জাতীয় দলে দেখা গিয়েছিল যথাক্রমে ২০০৯ এবং ২০১২ সালে।

ইমরান নাজির জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ৮ টেস্ট, ৭৯ ওয়ানডে এবং ২৫ টি-টোয়েন্টি। তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রান করেছেন টেস্টে ৪২৭, ওয়ানডেতে ১৮৯৫ রান এবং টি-টোয়েন্টিতে ৫০০ রান।

  • সাকলাইন মুশতাক

সাকলাইন মুশতাককে পাকিস্তান ক্রিকেটের অন্যতম সেরা স্পিনার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি পাকিস্তান ক্রিকেটের টেস্ট এবং ওয়ানডে দুই সংস্করণেই স্পিন বোলিং বিভাগের নেতৃত্বও দিতেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশ দুর্দান্ত শুরু পেয়েছিলেন । দ্রুততম বোলার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ১০০ উইকেট নেবার কীর্তি গড়েন সাকলাইন মুশতাক। তিনি ওয়ানডেতে শোয়েব মালিক এবং টেস্টে দানিশ কানেরিয়ার সাথে স্পিন বোলিং জুটি গড়ে তুলেছিলেন।

তাঁকে সর্বশেষ জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামেন ২০০৪ সালে। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৮ বছর। পাকিস্তানের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন ৪৯ টেস্ট এবং ১৬৯ ওয়ানডেতে। এই সময়ে তিনি টেস্টে শিকার করেন ২০৮ উইকেট এবং রঙিন পোশাকে শিকার করেন ২৮৮ উইকেট।

  • বাসিত আলী

বাসিত আলীকে ক্যারিয়ারের শুরু দিকে বিবেচনা করা হত জাভেদ মিয়াঁদাদের সাথে। তিনি পয়েন্ট এবং কাভার অঞ্চল দিয়ে বেশ দুর্দান্ত খেলতেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগে জরিমানাসহ দল থেকে বাদ পড়েন। এরপর আরো তিন বছর জাতীয় দলের হয়ে বেশ ভালো পারফর্ম করেছেন তিনি।

তিনি পাকিস্তান দলের হয়ে ১৯৯৬ সালে সর্বশেষ বারের মত জাতীয় দলে দেখা গিয়েছিল মাত্র ২৬ বছর বয়সে। পাকিস্তানের হয়ে তিনি খেলেছিলেন ১৯ টেস্ট এবং ৫০ ওয়ানডে। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করার পরও আর জাতীয় দলে ফেরা হয়নি বাসিত আলীর।

  • সোহেল তানভীর

বেশ কিছুদিন আগেও অনেক ফ্রাঞ্চাইজি লিগে নিয়মিত দেখা যেত সোহেল তানভীরকে। তিনি সর্বশেষ কবে জাতীয় দলে খেলেছেন সেটা মনে করা একটু কঠিনই হবে। তবে এখনো ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলে যাচ্ছে তিনি।

অনেক সম্ভাবনা নিয়ে ২০০৭ সালে জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষেক হয় সোহেল তানভীরের। কিন্তু সেই সম্ভাবনার পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটাতে পারেননি তিনি।

জাতীয় দলের হয়ে তাঁকে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল ২০১৬ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়সে।

সোহেল তানভীর জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ২ টেস্ট, ৬২ ওয়ানডে এবং ৫৭ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। এই সময়ের মধ্যে তিনি টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি শিকার করেছেন যথাক্রমে ৫,৭১ এবং ৫৪ উইকেট। নিয়মিত পারফর্ম করতে না পারার কারণে কখনো জাতীয় দলে স্থায়ী হতে পারেননি তিনি।

  • দানিশ কানেরিয়া

টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের স্পিন বোলিং আক্রমণের অন্যতম ভরসার নাম ছিলেন দানিশ কানেরিয়া। ২০০০ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তাঁর। ২০১০ সালে জাতীয় দলের সর্বশেষ বারের মত মাঠে নামেন তিনি। মানে মাত্র ৩০ বছর বয়সে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন তিনি।

কাউন্টি ক্রিকেটে স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে আজীবন নিষিদ্ধ হন দানিশ কানেরিয়া। তিনি মাত্র ৬১ টেস্ট  খেলে শিকার করেছেন ২৬১ উইকেট। এছাড়াও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এক হাজারের উপর উইকেট শিকার করেছেন তিনি।

  • ইজাজ আহমেদ

ইজাজ আহমেদ পাকিস্তান ক্রিকেটের অন্যতম আন্ডাররেটেড ব্যাটসম্যান। সেলিম মালিক এবং ইনজামামের মত তিনিও তিন নাম্বার পজিশনের ব্যাটসম্যান ছিলেন। তবে দলের প্রয়োজনে চার এবং পাঁচ নম্বরেও ব্যাটিং করেছেন তিনি।

পাকিস্তানের হয়ে তিনি খেলেছেন ৬০ টেস্ট এবং ২৫০ ওয়ানডে। জাতীয় দলের ইজাজ আহমেদকে সর্বশেষ মাঠে দেখা যায় ২০০১ সালে ৩৩ বছর বয়সে। এরপর আরো ছয় বছর ক্রিকেটে ছিলেন তিনি। কিন্তু আর কখনো জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামা হয়নি তাঁর।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...