জবাব দিতে চান না বুমরাহ!

সমালোচনা যেন ক্রিকেটারদের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। কিন্তু এই দু:সময়ে যে জাসপ্রিত বুমরাহও সমালোচনার পাত্র হবেন তা কে জানত! একে তো ব্যাকস্ট্রেস ইনজুরির কারণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েছেন। বুমরাহর না থাকা টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশনে দলকে শঙ্কায় ফেলেছে তাতো সবারই জানা।

সমালোচনা যেন ক্রিকেটারদের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। কিন্তু এই দু:সময়ে যে জাসপ্রিত বুমরাহও সমালোচনার পাত্র হবেন তা কে জানত! একে তো ব্যাকস্ট্রেস ইনজুরির কারণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েছেন। বুমরাহর না থাকা টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশনে দলকে শঙ্কায় ফেলেছে তাতো সবারই জানা।

কিন্তু, ইনজুরির কারণে বুমরাহর নিজস্ব অনুভূতিটাও সুখনীয় হবার কথা নয় এইটুকু তো অনুমেয়। নইলে কোন ক্রিকেটারই চায় বিশ্বকাপের মতো আসরে দলে জায়গা পেয়েও ইনজুরির কারণে সেই সুযোগটি হাতছাড়া করতে? কেই বা চাইবে দলের পেস আক্রমণের প্রধান অস্ত্র হওয়া সত্ত্বেও কেবল দর্শক হয়ে থাকতে?

ঘটনাটি আরেকটু খোলাসা করি। টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াড থেকে ছিটকে পরার খবরটি আনুষ্ঠানিক হওয়ার পর থেকে, টুইটারে অনেক ভারতীয় ভক্ত বুমরাহকে নিয়ে ট্রোল করছেন। এই ভক্তদের অভিযোগ জাসপ্রিত বুমরাহ নাকি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) তাঁর ফ্র্যাঞ্চাইজি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের জন্য বরাবরই ফিট থাকছেন, খেলছেন। কিন্তু টিম ইন্ডিয়ার জন্য বুমরাহকে পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থাৎ দলের প্রয়োজনের সময় বারবার বুমরাহ মাঠের বাইরে চলে যাচ্ছেন।

ইনজুরির কারণে এই পেসার এশিয়া কাপে ছিলেন অনুপস্থিত। এশিয়া কাপে ভারতের অভিজ্ঞতাটা খুব একটা ভাল ছিল না। ভারতীয় দল প্রতিমুহুর্তেই বুমরাহর উপস্থিতি টের পেয়েছে। এশিয়া কাপের পর অস্ট্রেলিয়া সিরিজ দিয়ে আবারও ফিরেছিলেন ক্রিকেটে।

বুমরাহ দলে ফেরায় স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেছেন ভারতীয় ভক্তরা। কিন্তু এক ম্যাচ না যেতেই আবারও ইনজুরির কবলে পড়লেন তিনি। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও বুমরাহকে ভাবা হচ্ছিল ভারতের তুরুপের তাস। সেই আশায়ও গুড়ে বালি! স্বভাবিকভাবে ভারতীয় ভুক্ত সমর্থকরা মনঃক্ষুণ্ণ হতেই পারেন।

গত পাঁচ অক্টোবর বুমরাহ একটি ইনস্টাগ্রাম স্টোরি পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি উইনস্টন চার্চিলের বিখ্যাত উক্তিটি ব্যবহার করেছেন। যার বাংলা করলে দাড়ায়, ‘আপনি যদি প্রতিটি ঘেউ ঘেউ করা কুকুরকে বারবার থেমে পাথর মেরে মোকাবেলা করতে যান, আপনি কখনোই নিজের গন্তব্যে পৌছাতে পারবেন না।’

হয়তো বা এই প্রতীকী বক্তব্যের মাধ্যমে যে বুমরাহ তাঁকে নিয়ে ট্রোল করা ব্যক্তিদের ইঙ্গিত করেছেন। অথবা ব্যাপারটি এমনও হতে পারে যে উইনস্টন চার্চিলের বক্তব্যে বুমরাহ নিজেকেই অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছেন। যেন সব হতাশা, সমালোচনাকে পেছনে ফেলে তিনি দিনশেষে নিজের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছাতে পারেন। নিজের অসহায় ও টানপোড়েনের সময়ে আমরা সকলেই বিখ্যাত ব্যক্তিদের উক্তি থেকে এমন অনুপ্ররণা লাভের চেষ্টা করি।

গেল ৪ অক্টোবর দল থেকে বাদ পড়ার পর বুমরাহ টুইটারে লিখেছেন, ‘আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অংশ না হতে পেরে আমি বেশ হতাশ। তবে আমার প্রিয় মানুষদের কাছ থেকে যে শুভেচ্ছা, ভালোবাসা ও সমর্থন পেয়েছি তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ থাকব। আমি সুস্থ হয়ে ওঠার পাশাপাশি, অস্ট্রেলিয়ায় দলের ক্যাম্পেইনে আমি আমার দলকে উৎসাহ জোগাবো।’

ক্রিকেটারদের ঘিরে ভক্তদের অনেক আশা- ভরসা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। পাশাপাশি এটাও মাথায় রাখতে হবে যে কোন ক্রিকেটারই সেধে সেধে ইনজুরিতে পড়তে চান না। ইনজুরি কেবলই একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। বিশ্বব্যাপী ইনজুরি নামক খলনায়ক অকালেই অনেক ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার নষ্ট করে দিয়েছে।

জাসপ্রিত বুমরাহরও এশিয়া কপ ও টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগ মুহুর্তেই ইনজুরিতে পড়ে যাওয়াটা কেবলই একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও কাকতালীয় ঘটনা। এর জন্য ট্রল বা সমালোচনা না করে প্রিয় ক্রিকেটারকে মানসিকভাবে দৃঢ় রেখে দ্রুত প্রত্যাবর্তনের সুযোগ দেয়া উচিত।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...