পেস, আগুন, আর বাউন্সারের ঝড়! শরিফুল ইসলামের বোলিং যেন এক অগ্নিপরীক্ষা, যেখানে ব্যাটারদের প্রতিটি ভুল মানে ধ্বংসের লীলাখেলা।
চার ওভার বল করলেন না, এমনকি ফাইফারও পেলেন না। তবু শরিফুল ইসলামের এই স্পেলটাই যেন পাঁচ উইকেটের থেকেও বেশি কিছু। প্রতিটি ডেলিভারি যেন ছুড়ি—সুইং, পেস আর নিখুঁত লাইন-লেন্থের এমন মিশেল যে, ব্যাটারদের সামনে শুধুই অন্ধকার!
মাত্র ২০ বল, তাতেই ১৮ টি ডট! চারটি উইকেট শিকার, আর মোহভঙ্গের মতো এক রানআউট! শেষ ওভারে নিজের ফাইফার নিশ্চিত করা যেত, কিন্তু শরিফুল তখন দলীয় জয়টাই বড় করলেন। বল হাতে নিজের মিশন শেষ, এবার ফিল্ডিংয়েও দিলেন যোগ্য অবদান।
এই বিপিএল পেসারদের মঞ্চ, তবে শরিফুল যেন একটু পিছিয়েই ছিলেন। দেশি-বিদেশি গতিদানবদের সামনে নিজেকে প্রমাণের তাগিদ ছিল প্রবল, আর তাই হয়তো আজকে এই বিধ্বংসী রূপে আবির্ভাব হলেন তিনি।
শুরুটা হয়েছিল তরুণ জাওয়াদকে ইনসাইড এজে বোল্ড করার মধ্য দিয়ে—বোল্ড! সেই শব্দটাই যেন শরিফুলের ট্রেডমার্ক হয়ে উঠল আজ। ফিরতি ওভারে এলেন, হাতে বল, চোখে ঝলসানো আগুন। ব্যাটসম্যান রনি তালুকদার তখনও বুঝে উঠতে পারেননি কী অপেক্ষা করছে। স্যুইঙ্গিং ইয়র্কার! এক ঝটকায় উড়ে গেল স্ট্যাম্প!
ব্যাটসম্যানরা তখন প্রতিরোধের চেষ্টা করছেন, কিন্তু শরিফুল ছিলেন নিজের মুডে। জাকের আলী তখন একটু একটু করে আশার আলো দেখাচ্ছেন সিলেটকে, কিন্তু শরিফুল যেন কফিনের শেষ পেরেকটা ঠুকে দিলেন। ক্যাচ তুললেন জাকের, উইকেট উদযাপনে ফেটে পড়লেন শরিফুল! এরপর? নাভিশ্বাস তোলা এক বাউন্সার! তানজিম সাকিব ব্যাট ঠেকাতে বাধ্য হলেন, ক্যাচ তুললেন, এবং বিদায়! পুরো সিলেট স্ট্রাইকার্স শিবির তখন ধ্বংসস্তূপে।
শেষ ওভারে বাকি ছিল আরেকটা মুহূর্ত—পাঁচ উইকেটের সম্ভাবনা। কিন্তু শরিফুলের কাছে ব্যক্তিগত কীর্তির চেয়ে দলের জয়টাই মুখ্য। তাইতো, নিজের বলে দারুণ এক রানআউট করেই শীর্ষ চার নিশ্চিত করে দিলেন দলকে।
শরিফুল ইসলাম—যেন গর্জে ওঠার অপেক্ষায় থাকা এক বাঘ। আজ যিনি হুঙ্কার দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, কেন তিনি বাংলাদেশের পেস আক্রমণের বর্তমান ও ভবিষ্যতের অন্যতম কান্দারি!