মেসির বিশেষ জুতোর বিশেষত্ব

বিশ্বকাপ কিংবা নানা টুর্নামেন্ট সামনে রেখে প্রচারণার স্বার্থে বিশেষ ধরনের জুতা কিংবা বুট তৈরির প্রচলন বেশ পুরনো। কিন্তু এর আগের কোনোটি মেসির সোনালি বুটের মত আলোচনা ছড়াতে পারেনি। তাছাড়া কেবল প্রচারণা কিংবা ব্যবসায়িক স্বার্থ নয়, মেসির এই বুটে খেলার সময়েও সুবিধা পাবেন মেসি। সে কারণেই বিশ্বব্যাপী মেসি সমর্থকেরা দারুণ খুশি জুতা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি।

বিশ্বকাপ শুরুর আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন কাতার বিশ্বকাপই হতে যাচ্ছে লিওনেল মেসির শেষ বিশ্বকাপ। বৈশ্বিক আসরে সবুজ গালিচায় বল পায়ে কারিকুরিতে দর্শকদের মুগ্ধ করতে আর দেখা যাবে না ক্ষুদে জাদুকরকে।

মেসির শেষ বিশ্বকাপটা যাতে স্মরণীয় হয়ে থাকে সেজন্য সতীর্থ থেকে শুরু করে সমর্থকরা সকলেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বাদ যায়নি মেসির জুতা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান, বিশ্বকাপ উপলক্ষে মেসির জন্য বিশেষভাবে তাঁরা বানিয়েছে ‘অ্যাডিডাস এক্স মেসি ২০২২ ওয়ার্ল্ড কাপ স্পিডপোর্টাল বুটস’।

সোনালি রঙের এই বুট পড়েই এবারের বিশ্বকাপ খেলবেন মেসি। নতুন বুট ক্যামেরায় ধরা পড়ার পর থেকেই গোটা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে। গুজব ছড়িয়ে পড়ে বুটের গায়ে স্বর্ণের প্রলেপ দেয়া। পরে জানা যায় গুজবটি সত্য নয়। তবে দেখতে মোহনীয় বুটটি স্বর্ণের না হলেও বেশ কিছু বিশেষত্ব রয়েছে। 

যেমন ডান পায়ের বুটে খোদাই করা আছে ‘থিয়াগো ০২ ১১ ১২ এবং মাতেও ১১ ০৯ ১৫’ ; অর্থাৎ মেসির বড় দুই ছেলের জন্ম তারিখ। বড় ছেলে থিয়াগোর জন্ম ২০১২ সালের ২ নভেম্বর এবং মেজো ছেলে মাতেও জন্ম নেন চার বছর বাদে, ২০১৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। বাঁ পাশের বুটে জায়গা করে নিয়েছে সবার ছোট সিরোর জন্মতারিখ, “সিরো ১০ ০৩ ১৮”। মেসির সহধর্মিণী আন্তোনেলা রোকুজ্জেও বাদ যায়নি।

যে বাম পায়ের জাদুতে মেসি গোটা বিশ্বকে মোহাবিষ্ট করে রেখেছেন গত পাঁচ বিশ্বকাপ জুড়ে, সেই বাঁ পায়ের বুটে লেখা আছে ‘আন্তো’। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই আপাদমস্তক ফ্যামিলিম্যান মেসি নিজের শেষ বিশ্বকাপেও মাঠে নামবেন পরিবারকে সঙ্গে নিয়েই। সেদিনের ছোকরা মেসি থেকে আজকের মহাতারকা মেসি হয়ে ওঠার যাত্রায় তাঁর পরিবারের অবদানই যে সবচেয়ে বেশি। 

কেবল পরিবারই নয়, মেসির দুই বুটেই স্থান পেয়েছে তাঁর জার্সি নম্বর, ১০। যে নম্বরটাকে আইকনিক বানিয়েছেন মেসি। এছাড়া আর্জেন্টিনার পতাকা এবং জার্সির আদলে জুতায় রয়েছে আকাশি-সাদা স্ট্রাইপ। এছাড়া জুতা প্রস্তুতকারী ব্র্যান্ডের লোগো ছাড়াও মেসির নিজের ব্র্যান্ড “এলএম১০” এর লোগোও স্থান পেয়েছে বুটে। ইতোমধ্যেই হইচই ফেলা দেয়া এই বুটের নকশা করেছেন বিশ্বখ্যাত একজন শিল্পী। 

কেবল নকশা কিংবা বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়, এই বুট তৈরির সময় মাথায় রাখা হয়েছে বিশ্বকাপে খেলার ব্যাপারটাও। বুটের স্পাইক তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ ধরনের উড। এতে  মাটির সাথে আটকে যাবে না জুতা। ফলে দ্রুত গতিতে দৌড়ে যাওয়া কিংবা দ্রুত ঘুরে শট নেবার সময় শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে খানিকটা সুবিধা পাবেন মেসি। এছাড়া শট নেবার সময়ও খানিকটা স্বাছন্দ্য পাবেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।

বিশ্বকাপ কিংবা নানা টুর্নামেন্ট সামনে রেখে প্রচারণার স্বার্থে বিশেষ ধরনের জুতা কিংবা বুট তৈরির প্রচলন বেশ পুরনো। কিন্তু এর আগের কোনোটি মেসির সোনালি বুটের মত আলোচনা ছড়াতে পারেনি।

তাছাড়া কেবল প্রচারণা কিংবা ব্যবসায়িক স্বার্থ নয়, মেসির এই বুটে খেলার সময়েও সুবিধা পাবেন মেসি। সে কারণেই বিশ্বব্যাপী মেসি সমর্থকরা দারুণ খুশি জুতা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি। মেসির মত ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো কিংবা নেইমারেরও শেষ বিশ্বকাপ এটি। তাঁদের সমর্থকরা কি খানিকটা দু:খী হয়েছেন মেসির বুটের কথা জেনে! 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...