ঘড়ির কাঁটা স্রেফ এক মিনিটের ঘর পার হয়েছে, ফুটবলাররা তো দূরে থাক রেফারিও বোধহয় তখনও পুরোপুরি সতর্ক হয়ে ওঠেননি। এরই মাঝে উদযাপনে মাতোয়ারা কমলা শিবির, রায়ান গ্রাভেনবার্গের অসাধারণ একটা থ্রু বল থেকে গোল করে বসেন রেইজডারস – দুই মিনিটের মাথায় জার্মানির বিপক্ষে এগিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস।
শুরুর ধাক্কা সামলে উঠতে সময় লেগেছে অবশ্য, তবে জামাল মুসিয়ালা কিংবা ফ্লোরিয়ান উর্টজ নন। তাঁদের ত্রাণকর্তা রূপে আবির্ভূত হয়েছেন নিতান্তই অপরিচিত এক স্ট্রাইকার দেনিজ উনদাভ। এর আগে মাত্র চার বার জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ানো দেনিজই এদিন রক্ষা করেছেন জার্মানদের।
৩৮ মিনিটের মাথায় উর্টজের শট ডাচ গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিলে রিবাউন্ডে গোল করেন তিনি। দলকে সমতায় ফিরিয়েই ক্ষান্ত হননি, বিরতিতে যাওয়ার ঠিক আগে জসুয়া কিমিচকে দিয়ে আরো একটি গোল করান এই স্ট্রাইকার – যদিও এতে ভাগ্যের সহায়তা ছিল বটে।
তবে লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি ম্যানুয়েল নয়্যার বিহীন জার্মানি। বল পায়ে ব্রায়ান ব্রবারির দৃঢ়তা আর ডেনজেল ডামফ্রিসের ফিনিশিংয়ের কল্যাণে নেদারল্যান্ডস আবারও ম্যাচে ফেরে।
আমস্টারডামে দুই দলই মাঠে নেমেছিল ৪-২-৩-১ ছকে; নেদারল্যান্ডস অবশ্য ডি লিট, ভ্যান ডাইকদের নিয়ে শক্তিশালী রক্ষণ গড়ে তুলেছিল, সেই সাথে উইং ধরে গতিময় আক্রমণের পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। অন্যদিকে, জার্মানির শক্তির জায়গা মূলত মিডফিল্ড; আর ফরোয়ার্ড লাইনে মুসিয়ালা, উর্টজ আর হাভার্টজের মত ভার্সেটাইল তারকাদের উপস্থিতি বাড়তি সুবিধা দিয়েছে তাঁদের।
একাদশের মত দুই দলের খেলাতেও ছিল অসম্ভব প্রতিদ্বন্দ্বিতা। আক্রমণ, প্রতি আক্রমণে ম্যাচের পরতে পরতে ছিল রোমাঞ্চ; যদিও গোল নামক সোনার হরিণ আর ধরা দেয়নি কারো হাতে, বিশেষ করে চার বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা সুযোগ পেয়েও হাতছাড়া করেছে একাধিকবার। শেষমেশ অবশ্য ২-২ গোলেই নিষ্পত্তি হয়েছে নব্বই মিনিটের রূদ্ধশ্বাস লড়াই। এর ফলে গ্রুপ তিনে শীর্ষস্থান দখলের দ্বৈরথ আরও জমে গেল।