সনদ জাল করে পুলিশের চাকরি পান হারমানপ্রীত

গত সেপ্টেম্বরের কথা, হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর জন্য ভারত নারী দলের বিপক্ষে লড়ছিল ইংলিশ নারীরা। দশম উইকেট জুটিতে জয়ের দিকে এগুতে থাকা ইংলিশদের থামিয়ে দেন দিপ্তি শর্মা, মানকাড আউট করেন চার্লি ডিনকে।

সেই আউট নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই অনেক আলোচনা সমালোচনা হয়েছে। তবে ক্রিকেট মাঠে ঘটা বিতর্কিত ঘটনাকে ‘পার্ট অব গেম’ বলে মত দেন অধিনায়ক হারমান প্রীত কৌর। হ্যাঁ, সত্যিই আইনত সেই আউটে কোনো সমস্যাও নেই।

তবে, বছর ঘুরে আরেকটা সেপ্টেম্বর আসার আগেই অবশ্য ঘুরে গিয়েছে হারমানপ্রীত কৌরের চিন্তাধারণা। বাংলাদেশের বিপক্ষে আম্পায়ারের ৫০-৫০ সিদ্ধান্ত নিজেদের দিকে না যাওয়াতে তিনি ভুলেই গিয়েছেন এটাও ‘পার্ট অব গেম’। মাঠেই স্ট্যাম্পে আঘাত করেছেন ব্যাট দিয়ে, এরপর প্রেজেন্টেশনে অভিযোগ করেছেন আর সবশেষে বাজে মন্তব্য ছুঁড়েছেন জ্যোতি, মারুফাদের দিকে।

আজকের অমন অপেশাদারি হারমানপ্রীত কৌর ব্যক্তি জীবনেও অবশ্য পুরোপুরি নির্ভেজাল নন। মিথ্যে সনদপত্র দেখানোর মত গুরুতর অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে।

২০১৭ বিশ্বকাপে তাঁর অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং এই অলরাউন্ডারকে পাঞ্জাব প্রদেশের ডেপুটি সুপারিডেন্ট অব পুলিশ (ডিএসপি) পদে যোগদানের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সে-সময় তিনি তখন পশ্চিম রেলওয়েতে অফিস সুপারিনটেনডেন্ট হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন।

নতুন চাকরিতে নিয়োগ পাওয়ার সময় চৌধুরী চরণ সিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাসের সনদ জমা দেন হারমানপ্রীত।সাময়িকভাবে সেটা যাচাই করে সত্যতা নিশ্চিত করে পাঞ্জাব পুলিশ। পুলিশের ডিএসপি হিসেবে চাকরিও পেয়ে যান হারমান।

কিন্তু, এরপরই হঠাৎ চিত্রনাট্যে চমক নেমে আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ জানায় হারমানপ্রীতের রোল নম্বর তাদের রেকর্ডবুকে নেই। এরপরই সাড়া পড়ে যায় পুরো দেশে; মুহূর্তের মাঝে জাতীয় তারকা থেকে ট্রলের বিষয়ে পরিণত হন এই ক্রিকেটার।

তবে ভাগ্য ভালো বলতেই হয়, তখন সোশ্যাল মিডিয়া এতটা জনপ্রিয় ছিল না, তা না হলে আরো ছড়িয়ে পড়তো সেই ঘটনা। আরো একটা কারণেও হারমানপ্রীতের ভাগ্য সহায় ছিল বলতে হয়।

কেননা এত বড় প্রতারণার শিকার হওয়া সত্ত্বেও তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনেনি পাঞ্জাব পুলিশ। যদিও ডিএসপি থেকে কনস্টেবল করে দেওয়া হয়। কিন্তু মামলা করা হলে মনে রাখার মত শাস্তি পেতে পারতেন তিনি, কেড়ে নেয়া হতো অর্জুনা পুরস্কার (ক্রীড়া ক্ষেত্রে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মাননা)।

লম্বা একটা সময় মিতালি রাজ ছিলেন ভারতীয় নারী দলের অধিনায়ক, এরপরই অধিনায়কত্ব আসে হারমানপ্রীত কৌরের কাঁধে। তবে ব্যক্তি জীবনে বিতর্কিত এই ক্রিকেটার অন্যতম সেরা পারফর্মার হলেও পেশাদারি হতে পারেননি পুরো। তাই তো ৫০-৫০ সিদ্ধান্ত নিজেদের পক্ষে না গেলেই সরাসরি আঙুল তোলেন আম্পায়ারের দিকে, প্রকাশ্যে ছোট করেন প্রতিপক্ষকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link