অস্ট্রেলিয়ার যত ‘আবদার’

আগামীকাল থেকে মাঠে গড়াচ্ছে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এই সিরিজ আয়োজন করতে কম বেগ পেতে হচ্ছে না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি)। সিরিজ নিয়ে আলোচনা শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দিচ্ছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। তাদের প্রতিটা শর্তই মেনে নিয়েছে বাংলাদেশ। এর কিছু কিছু শর্ত যথেষ্ট ভুতুড়েও।

আগামীকাল থেকে মাঠে গড়াচ্ছে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এই সিরিজ আয়োজন করতে কম বেগ পেতে হচ্ছে না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি)। সিরিজ নিয়ে আলোচনা শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দিচ্ছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। তাদের প্রতিটা শর্তই মেনে নিয়েছে বাংলাদেশ। এর কিছু কিছু শর্ত যথেষ্ট ভুতুড়েও।

অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন শর্তের কারণেই সিরিজটা ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সেই সব শর্ত নিয়ে চারদিকে আলোচনা সমালোচনা কম হয়নি। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ট্রেইনার রিচার্ড স্টোনিয়ার ও জাতীয় দলের কম্পিউটার বিশ্লেষক শ্রীনিবাস পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার শর্ত গুলো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা করে পোস্ট করেছেন।

তবে অস্ট্রেলিয়ার সব শর্ত নিয়ে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন বিসিবি কর্মকর্তারা। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তারা তৎপর ছিলেন শুধু সিরিজটা ভালো ভাবে আয়োজন করা নিয়েই। তো চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক সিরিজ শুরুর আলোচনার পর থেকে এখন পর্যন্ত কি কি শর্ত দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আর তার কতটুকুই বা পূরণ করতে পেরেছে বিসিবি।

  • আবাসিক সুবিধা

সিরিজ নিয়ে আলোচনার শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার প্রধান শর্ত ছিল আবাসিক সুযোগ সুবিধা গুলো নিয়ে। তাদের শর্ত ছিলো তাদের যে হোটেলে রাখা হবে সেই হোটেলে বাইরের কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। মানে পুরো হোটেলই তাদের জন্য বরাদ্ধ দিতে হবে।

অস্ট্রেলিয়ার এই শর্ত মানতে গিয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের ২১৫ টা কক্ষই ভাড়া নিয়েছে বিসিবি। তবে একই হোটেলে রাখা হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদেরও। কিন্তু এখানে তাদের দ্বিতীয় শর্ত ছিলো হোটেলের জিম ব্যবহার করার সুযোগ দিতে হবে শুধু তাদেরই।

মানে স্বাগতিক ক্রিকেটাররা হোটেলের জিম ব্যবহার করার কোন সুযোগ পাবেন না। তবে সুইমিংপুল শুধু ব্যবহার করছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাই। সেটাও অস্ট্রেলিয়া ব্যবহার করতে আগ্রহী নয় বলে।

  • ইমিগ্রেশনে ছাড়

অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় শর্ত ছিলো বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে তাঁদের ছাড় দিতে হবে। অতিরিক্ত ঝুঁকি এড়াতে বিমানবন্দরের ভিতরে প্রবেশ করতে ইচ্ছুক ছিলেন না তাঁরা। অর্থ্যাৎ বিমান থেকে নেমেই সরাসরি হোটেলে আসবেন তারা। অস্ট্রেলিয়ার চাহিদা অনুযায়ী এই শর্তও পূরণ করেছে বিসিবি। হোটেলে এসে পাসপোর্ট জমা নিয়ে তাদের ইমিগ্রেশনের কাজ সম্পূর্ন করা হয়েছে।

  • ভেন্যু

সাধারণত তিন ম্যাচের কোন সিরিজের দুই ম্যাচ মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ও এক ম্যাচ চট্টগ্রাম ও সিলেটে অনুষ্টিত হয়। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার শর্ত ছিলো সব ম্যাচ একই ভেন্যুতে আয়োজন করতে হবে। তাদের শর্ত পূরণ করতে গিয়েই সব ম্যাচ মিরপুরে হচ্ছে। তারা শর্ত দিয়েছে ম্যাচ চলার সময় মিরপুরে জনসাধারণের প্রবেশও সীমিত করতে হবে।

ভেন্যু নিয়ে সফরকারীদের শর্ত এখানেই শেষ নয়। তাদের শর্ত ছিল ম্যাচ চলাকালীন মাঠে কোন মাঠকর্মী প্রবেশ করতে পারবে না এবং যদি বিশেষ প্রয়োজনে প্রবেশ করতে হয় তবে পাঁচ মিটার দুরুত্ব বজায় রাখতে হবে। এছাড়া বৃষ্টি আসলে ক্রিকেটাররা মাঠ ছাড়ার আগে দল বেঁধে উইকেট ঢাকতে কোন মাঠকর্মী মাঠে প্রবেশ করতে পারবেন না।

মাঠে পানীয় খাবার ব্যতিত অন্য কোন খাবার আনা যাবে না এটাও তাদের শর্তের একটা অংশ। ম্যাচ চলাকালীন মাঠে ক্যামেরা ক্রু ও সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীদেরও প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার শর্ত অনুযায়ীই। এছাড়া সিরিজ চলাকালীন বিসিবির কোন কর্মকর্তাও স্টেডিয়ামের প্রধান গেট দিয়ে মাঠে প্রবেশ করতে পারবেন না।

  • কোয়ারেন্টাইন জটিলতা ও মুশফিক

\অস্ট্রেলিয়ার শর্তের কারণেই ঘরের মাঠের এই সিরিজে খেলতে পারছেন না মুশফিকুর রহিম। পারিবারিক কারণে গত জিম্বাবুয়ে সফরের মাঝপথে দেশে ফিরেছিলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। যার কারণে জৈব সুরক্ষা বলয়ের বাইরে ছিলেন মুশফিক। অস্ট্রেলিয়ার শর্ত ছিল জিম্বাবুয়ের সফরে যারা জৈব সুরক্ষা বলয়ের ভিতরে আছেন তারাই শুধু স্কোয়াডে থাকতে পারবেন।

জৈব সুরক্ষা বলয়ের বাইরে থেকে কাউকে স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত করতে হলে সিরিজ শুরুর দশ দিন আগে থেকে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। কিন্তু মুশফিক কোয়ারেন্টাইনে প্রবেশ করতে না পারায় অস্ট্রেলিয়ার কাছে আবেদন করে ছিল বিসিবি। বিসিবির আবেদনে সাড়া না দিয়ে নিজেদের সিদ্বান্তেই অনঢ় থেকেছে অস্ট্রেলিয়া। কোয়ারেন্টাইন জটিলতায় মাঠে প্রবেশ করতে পারবেন না কিউরেটর গামিনি ডি সিলভাও।

  • অন্যন্য

এই সব বিষয় ছাড়াও আরো কিছু শর্ত ছিল অস্ট্রেলিয়ার। তাদের শর্ত ছিল হোটেল স্টাফ থেকে শুরু করে বাসের চালক ও কর্মী এবং মাঠকর্মীদের কোয়ারেন্টাইনে রেখে জৈব সুরক্ষা বলয়ে প্রবেশ করাতে হবে। তাদের শর্ত অনুযায়ীই মাঠকর্মী, হোটেল স্টাফ ও বাস চালকরা জৈব সুরক্ষা বলয়ে রয়েছেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...