সফলতম টেস্ট অধিনায়ক

ক্রিকেটের সবচেয়ে কঠিন ফরম্যাট হল টেস্ট। আর সাদা পোশাকের এই ফরম্যাটে একজন অধিনায়কের পরিকল্পনাও হতে হয় অন্যরকম। কারণ, পাঁচ দিন, ১৫ টা ভিন্ন ভিন্ন সেশনে ম্যাচের রঙ বদলাতে পারে হাজারোবার। সেই বদলে যাওয়া রঙের সাথে তাল মেলাতে হয় অধিনায়ককে। 

ক্রিকেটের সবচেয়ে কঠিন ফরম্যাট হল টেস্ট। আর সাদা পোশাকের এই ফরম্যাটে একজন অধিনায়কের পরিকল্পনাও হতে হয় অন্যরকম। কারণ, পাঁচ দিন, ১৫ টা ভিন্ন ভিন্ন সেশনে ম্যাচের রঙ বদলাতে পারে হাজারোবার। সেই বদলে যাওয়া রঙের সাথে তাল মেলাতে হয় অধিনায়ককে।

একটা দেশের টেস্ট অধিনায়ক হতে পারাটা সসময়ই ভীষণ গর্বের। তবে টেস্টে এই দায়িত্বটা ভীষণ কঠিন। এই কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে যেই অধিনায়করা সবচেয়ে বেশি টেস্ট জয় পেয়েছেন তাঁদের নিয়েই এই আয়োজন। তালিকায় যারা যারা আছেন – তাঁরা সবাই-ই অধিনায়ক হিসেবে কিংবদন্তি।

  • ক্লাইভ লয়েড (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

ক্লাইভ লয়েড ওয়েস্ট ইন্ডিজের যেই টেস্ট দলটার অধিনায়ক ছিলেন সেটাকে ক্রিকেট ইতিহাসেরই সেরা টেস্ট দল বলা হয়। ১৯৭৪ থেকে ১৯৮৫ সালে সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছিল অপ্রতিরুদ্ধ। সেই সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানো যেনো এক স্বপ্নের মত। এত লম্বা সময় ধরে বিশ্বক্রিকেটের আর কোন দলই এভাবে ডোমিনেট করেনি।

ক্লাইভ লয়েডের নেতৃত্বে টানা ২৭ ম্যাচে জয় পেয়েছিল ক্যারিবীয়রা। এই মুহুর্তে সংখ্যার হিসেবে তিনি বিশ্বের পঞ্চম সফল টেস্ট অধিনায়ক। সবমিলিয়ে তাঁর নেতৃত্বে মোট ৭৪ টি টেস্ট খেলেছিল উইন্ডিজরা। সেখানে ৩৬ টিতেই জয় এনে দিয়েছিলেন ক্লাইভ লয়েড। শতকরা ৪৮.৬৪ ম্যাচেই জয়ে দেখা পেয়েছিলেন তিনি। এছাড়া তাঁর নেতৃত্বেই ১৯৭৫ ও ১৯৭৯ সালে পরপর দুটি ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতে দেশটি।

  • বিরাট কোহলি (ভারত)

এই মুহুর্তে ক্রিকেট বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন বিরাট কোহলি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করাটা মাঝে ডাল-ভাত বানিয়ে ফেলেছিলেন এই ব্যাটসম্যান। যদিও তাঁর অধিনায়কত্ব নিয়ে অনেক সমালোচনাই হয়। বড় কোন শিরোপা নেই কিংবা বড় ম্যাচের চাপ সামলাতে পারেন না এমন অভিযোগও আছে। তবে সংখ্যার বিচারে তিনিই ভারতের সেরা টেস্ট অধিনায়ক।

বিরাট কোহলি নেতৃত্বেই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলেছে ভারত। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে বিরাট ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ৬৮টি টেস্ট ম্যাচে। সাদা পোশাকের এই ফরম্যাটে বিরাটের জয়ের পাল্লাটা বেশ ভারী। শতাংশের হিসাব করলে তা দাঁড়ায় ৫৮.৮২। ৬৮ ম্যাচের মধ্যে ৪০টি ম্যাচ জিতেছে বিরাটের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ক্রিকেট দল। এর বিপরীতে হেরেছে ১৭টি ড্র করেছে ১১টি ম্যাচ।

  • স্টিভ ওয়াহ (অস্ট্রেলিয়া)

স্টিভ ওয়াহর নেতৃত্বে নব্বইয়ের দশকের শেষে এক অন্য দল হয়ে উঠেছিল অস্ট্রেলিয়া। ১৯৯৭-২০০৪ সাল পর্যন্ত দেশটির অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অধিনায়কদের একজন স্টিভ ওয়াহ।

১৯৯৯ সালে টেস্ট অধিনায়ক হবার পর তাঁর নেতৃত্বে খেলা ৫৭ টেস্টের ৪১ টি তেই জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। সেই সময় মাত্র ৯ টি টেস্ট হেরেছিল দেশটি। এছাড়া তাঁর নেতৃত্বে ১৯৯৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপও জিতেছিল অজিরা। এছাড়া ব্যাটসম্যান স্টিভও ৫১.১ গড়ে অজিদের হয়ে ১০ হাজারের বেশি টেস্ট রান করেছিলেন।

  • রিকি পন্টিং (অস্ট্রেলিয়া)

অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম অধিনায়কের নাম রিকি পন্টিং। আরেক সফল অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহর কাছ থেকে ২০০৪ সালে অজিদের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব নেন রিকি পন্টিং। তাঁর নেতৃত্বে জয় একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল অজিদের জন্য।

তাঁর নেতৃত্বে খেলা ৭৭ টেস্টের ৪৮ টেস্টেই জয় পায় অজিরা। ফলে এই তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন এই অধিনায়ক। এছাড়া তাঁর নেতৃত্বে ২০০৩ ও ২০০৭ সালে টানা দুইটি ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। এছাড়া ব্যাট হাতে ৪১ টি সেঞ্চুরি সহ ১৩৩৭৮ রান আছে এই রিকি পন্টিং এর ঝুলিতে।

  • গ্রায়েম স্মিথ (দক্ষিণ আফ্রিকা)

টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা অধিনায়ক বলা হয়া গ্রায়েম স্মিথকে। দক্ষিণ আফ্রিকার খারাপ একটা সময়ে দেশটির টেস্ট ক্রিকেটের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। মাত্র ২২ বছর বয়সেই দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট অধিনায়ক হন গ্রায়েম স্মিথ।

তাঁর নেতৃত্বে দক্ষিণ আফ্রিকা আইসিসি টেস্ট র‍্যাংকিং এর এক নম্বরে পৌছেছিল। অবসররের আগে মোট ১০৮ টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সেখানে কোন টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে সর্বোচ্চ ৫৩ টি জয় পেয়েছেন।  ফলে সংখ্যার বিচারেও তিনিই টেস্টের সেরা অধিনায়ক।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...