সব পেলে নষ্ট জীবন

জীবনানন্দ দাসকে বলা হয় প্রকৃতির কবি, নির্জনতার কবি। বিশুদ্ধতম কাব্য প্রতিভা নিয়ে মানুষের বেশে এসেছিলেন তিনি এই বাংলায়। এবি ডি ভিলিয়ার্সও কবি, তিনি ব্যাট হাতে কবিতা লেখেন বাইশ গজের খাতায়। তবে জীবনানন্দ দাসের সাথে তার যত না মিল, তার চাইতেও বেশি মিল ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো একজন কবির সাথে। জীবনানন্দ দাস যদি হন একজন রাহুল দ্রাবিড়, তবে এবি ডি ভিলিয়ার্স হয়ে যান একজন কবি নজরুল। যার সম্পর্কে একটা শব্দই ব্যবহার করা যায়, সেটা হলো, ‘ভার্সেটাইল’ কিংবা ‘সব্যসাচী।

ব্রিটিশ ভারতের বরিশাল থেকে আধুনিক দক্ষিণ আফ্রিকার লিম্পোপো। দূরত্বটা ঠিক কত, সেটা হয়তো গুগল ম্যাপ সবচেয়ে ভালো বলতে পারবে। ১৭ ফেব্রুয়ারিতে ৮৫ বছরের ব্যবধানে এই দুই জায়গায় জন্মেছিলেন দুই জন প্রচণ্ড প্রতিভাবান মানুষ। একজনের নাম জীবনানন্দ দাস, আরেকজনের নাম আব্রাহাম বেঞ্জামিন ডি ভিলিয়ার্স।

জীবনানন্দ দাসকে বলা হয় প্রকৃতির কবি, নির্জনতার কবি। বিশুদ্ধতম কাব্য প্রতিভা নিয়ে মানুষের বেশে এসেছিলেন তিনি এই বাংলায়। এবি ডি ভিলিয়ার্সও কবি, তিনি ব্যাট হাতে কবিতা লেখেন বাইশ গজের খাতায়। তবে জীবনানন্দ দাসের সাথে তার যত না মিল, তার চাইতেও বেশি মিল ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো একজন কবির সাথে। জীবনানন্দ দাস যদি হন একজন রাহুল দ্রাবিড়, তবে এবি ডি ভিলিয়ার্স হয়ে যান একজন কবি নজরুল। যার সম্পর্কে একটা শব্দই ব্যবহার করা যায়, সেটা হলো, ‘ভার্সেটাইল’ কিংবা ‘সব্যসাচী।

বিদ্রোহীর মতো কবিতা লিখেছেন, একই হাত দিয়ে বের হয়েছে শ্যামা সঙ্গীত। একই হাত দিয়ে বের হয়েছে গজল। একই মানুষ আবার তারার ফুল পরিয়ে দিতে চেয়েছেন প্রিয়ার খোঁপায়!

এবার এবি ডি ভিলিয়ার্সকে দেখুন। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট কিংবা ওয়ানডেতে ২০ বলে ৫০ লাগবে? ডাকুন এবিকে। রেগুলার উইকেটরক্ষক নেই বুঝি? উইকেটের পেছনে দাঁড় করিয়ে দিন না তাকে! ফিল্ডিং কেমন? ওটাও দারুণ। এর বাদে রাগবি, গলফ কিংবা টেনিস খেলার দক্ষতা, ব্যান্ডের শখ তো ছেড়েই দিলাম।

আর টেস্টে?

যে মানুষটার ব্যাট থেকে আসে ৪৪ বলে ১৪৯ অথবা ৬৬ বলে ১৬২, যে দুই ইনিংস দেখার পরে মুখ দিয়ে অটোমেটিক বের হয়ে আসে জীবনান্দের সেই অমর লাইন, ‘এ পৃথিবী একবার পায় তারে, পায় নাকো আর’, প্রয়োজনে সেই একই মানুষ দাঁড়িয়ে যান দেয়াল হয়ে, খেলে ফেলেন ২২০ বলে ৩৩ অথবা ২৯৭ বলে ৪৩ রানের ইনিংস। জীবনানন্দ দাসকে চিনলে দক্ষিণ আফ্রিকা দল সেদিন হয়তো নিশ্চিতভাবেই বলতো, ‘আমাকে দু’দণ্ড শান্তি দিয়েছিলো আব্রাহাম ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাট!’

অপ্রাপ্তি কি নেই কিছু?

আছে তো! একটা বিশ্বকাপ না জিততে পারার আক্ষেপ না থেকেই যায় না। ২০১৫ সালে হয়তো হয়েও যেতো। কিন্তু সেমি ফাইনালে নক্ষত্রকেও মরে যেতে হলো নিউজিল্যান্ডের গ্র্যান্ট এলিয়ট নামের এক অতিমানবের সামনে।

থাকুক কিছু অপ্রাপ্তি। অনুপম রায় তো গেয়েই গেছেন, ‘সব পেলে নষ্ট জীবন।’

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...