ট্রল কাণ্ড ও মেসি-রোনালদোর পার্থক্য

ট্রল নিয়ে নিত্যনতুন ব্যাখ্যা শুনতেছি। সেগুলো নাকি অমানবিক, নিষ্ঠুর। হারলেই বা বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে এমনভাবে ফ্যাঁচফ্যাঁচে কান্না শুরু করেন আপনারা যেন আপনাদের হাত থেকে কোনো মিম বা কোনো ট্রল জীবনে শেয়ার হয়নি। বা ট্রল দেয়ার আগে আপনারা জ্যামিতিক মাপকাঠি করে সত্য-মিথ্যা গুরুগম্ভীর বিশ্লেষণ করেন।

ট্রলে ফ্যাক্ট খুব একটা গুরুত্ব রাখে না, ট্রলে সত্য-মিথ্যাও গুরুত্ব রাখে না। ট্রল হচ্ছে বিভিন্ন কনটেক্সটে নতুন কনটেক্সট যোগ করে করে সেখানে হাস্যরস করা হয়।

ফুটবল ও ফুটবলের নানা সৌন্দর্য্য বলেন বা উপাদানের একটা হচ্ছে এই ট্রল। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার সিটি, বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদ এসব দ্বৈরথের প্রশ্ন, তার উত্তর, তর্ক বিতর্ক, ভুলের অপেক্ষা, তা নিয়ে মজা নেয়া, এগুলা সবই ফুটবলের অংশ।

এক আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য এগুলো ক্ষতিকর হইলে হয় ফুটবল দেখা ছাড়েন না হলে স্যোশাল মিডিয়াতে থাকা ছাড়েন।

কেউই ট্রলের উর্ধ্বে নাই, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মিসের কমপিলেশন যেমন বানানো যায় লিওনেল মেসিরও যায়। রোনালদোর কামব্যাক কমপিলেশন বানানো যায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় মঞ্চগুলোতে। মেসিও তার দলকে টেনে তুলেছে এক ম্যাচের ম্যাজিকে ২০১৮ বিশ্বকাপে।

রোনালদোর রাগ ওঠে, মেজাজ খারাপ হয় প্রতিপক্ষের সাথে খারাপ ব্যবহার করে গার্দিওলাকেও ধাক্কা দেয়। রোনালদোও টানা ৫ বছর ইউসিএল পায়নি, ব্যক্তিগত পুরষ্কারের দিক থেকেও হাত খালি ছিল বহুদিন।

পার্থক্য একটাই রোনালদো হিউমিলেশনে দমে যায় না, বা খেলা ছাড়া বা ক্লাব ছাড়ার ঘোষণা দেয় না। আপনি যাই বলেন না কেন মেসির সাথে বোর্ডের আগের সম্পর্ক বা ক্লাব ছাড়ার ক্লজ রেখে দেয়ার কথা, মেসির বার্সা ছাড়ার ঘোষণায় শেষ পেরেকটা ঠুকেছে মাঠের লজ্জাই। এটা মেসির গোল.কমে দেয়া ইন্টারভিউর শুরুতেও স্পষ্ট।

এখানে বলতে পারেন নাটক না, ঘটনার অনেক প্রেক্ষাপট না ভেবেই বা বার্সেলোনার ক্লাবের সাথে সুনির্দিষ্টভাবে আলোচনা না করেই মেসির ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন। যার আগে পিছে ভাবেন নি। এটা মেসির ইমোশনাল অ্যাসপেক্ট।

আবার যারা নাটক বলতেছে এরা খুব ফুটবলের কোনো বোদ্ধা বা শেষ কথা টাইপ না, যে আপনি স্যালারি ট্রল বা ড্রামা ট্রল নিয়ে মানসিক অবস্থা খারাপ হয়ে মাথা শাবানার মতো ওয়ারড্রবে ঠুকবেন।

স্বাভাবিক থাকেন, মেসি বার্সায় খেলবে এটাই স্বাভাবিক। খেলুক, শুভকামনা জানাই। মেসির গায়ে অন্য জার্সি মানাতো না, বার্সেলোনা ছাড়া। থাকুক সে এখানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link