ম্যাচসেরাদের সেরা

দলের পক্ষে সেরা পারফরম্যান্স করে দলকে জেতানোটাই প্রতিটা ক্রিকেটাররের মূল লক্ষ্য থাকে। সব ক্রিকেটারই চায় দলের জয়ে অবদান রাখতে। এর মধ্যে অনেকেই নিয়মিত পারফরম করে দলকে সবসময়ই সেরাটা দেন। এমনকি বেশিরভাগ সময়ই একাই দলকে জিতিয়েছেন। ম্যাচের নায়ক বনে যাওয়াটা অনেকেই পরিণত করেছেন ব্যক্তিগত নেশায়।

দলের পক্ষে সেরা পারফরম্যান্স করে দলকে জেতানোটাই প্রতিটা ক্রিকেটাররের মূল লক্ষ্য থাকে। সব ক্রিকেটারই চায় দলের জয়ে অবদান রাখতে। এর মধ্যে অনেকেই নিয়মিত পারফরম করে দলকে সবসময়ই সেরাটা দেন। এমনকি বেশিরভাগ সময়ই একাই দলকে জিতিয়েছেন। ম্যাচের নায়ক বনে যাওয়াটা অনেকেই পরিণত করেছেন ব্যক্তিগত নেশায়।

আজকের আলোচনা এমনই সেরা ক্রিকেটারদের নিয়ে, যারা কিনা সবচেয়ে বেশিবার ম্যাচ সেরার পুরষ্কার জিতেছেন। চলুন দেখে নেই এই তালিকায় আছেন কারা।

  • শহীদ আফ্রিদি – ৪৩

সাবেক পাকিস্তানি অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি ব্যাট হাতে যেমন ছিলেন আগ্রাসী; তেমনি বল হাতে তাঁর লেগ স্পিন জাদু ছিলো নজরকাঁড়া। সাবেক এই পাকিস্তানি অধিনায়ক মাঠে এবং মাঠের বাইরে বেশ কয়েকবার বিতর্কের জন্মও দিয়েছেন।

লেগ স্পিনে প্রতিপক্ষকে কুপোকাত করার পাশাপাশি ব্যাট হাতে অনায়াসে ছক্কা হাঁকাতেন তিনি। ৪১ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান ব্যাট কিংবা বল হাতে পাকিস্তানকে জিতিয়েছেন বহু ম্যাচ। ৫২৪ টি আন্তর্জাতিক ম্যাচের মধ্যে ৪৩ বার ম্যাচ সেরার পুরষ্কার জিতেছেন এই অলরাউন্ডার।

  • রিকি পন্টিং (অস্ট্রেলিয়া) – ৪৯

সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক রিকি পন্টিং ব্যাটসম্যান হিসেবে যেমন সেরাদের একজন; তেমনি অধিনায়ক হিসেবেও ছিলেন সর্বকালের সেরাদের একজন। ১৯৯৫ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ১৭ বছর তিনি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২২ গজ মাতিয়েছেন। টেস্ট এবং ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক রিকি পন্টিং।

অজিরা তাঁর অধীনে দুইটি বিশ্বকাপ ট্রফি এবং এবং দুইবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জয় করে। অধিনায়ক হিসেবে ৭৭ টেস্টের মাঝে ৪৮ টেস্টেই জয়লাভ করেছেন তিনি! ৫৬০ টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৪৯ বার ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক এই অজি অধিনায়ক।

  • কুমার সাঙ্গাকারা (শ্রীলঙ্কা) – ৫০

শ্রীলঙ্কান লিজেন্ড কুমার সাঙ্গাকারা ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্যারিয়ার শেষে নিজেকে রেখে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। তাঁর দৃষ্টিনন্দন কভার ড্রাইভ ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য ছিলো চোখের শান্তি। ২০১১ সালে তাঁর অধীনেই লঙ্কানরা বিশ্বকাপে রানার্সআপ হয়।

পরবর্তীতে তিন বছর পর ২০১৪ সালে খেলোয়াড় হিসেবে লঙ্কানদের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শিরোপা জেতেন তিনি। ৪০০ এর বেশি ওয়ানডেতে ১৪২৩৪ রান সংগ্রহ করেছেন সাঙ্গাকারা! যা কিনা এই ফরম্যাটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। ৫৯৪ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৫০ বার ম্যাচ সেরার পুরষ্কার জিতেছেন সাবেক এই লঙ্কান অধিনায়ক।

  • জ্যাক ক্যালিস (দক্ষিণ আফ্রিকা) – ৫৭

১৯৯৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ডারবানের কিংসমিডে টেস্ট অভিষিক্ত হন সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার হিসেবে খ্যাত জ্যাক ক্যালিস। ১৮ বছরের ক্যারিয়ার শেষে ঠিক এই মাঠেই ভারতের বিপক্ষে অবসর নেন তিনি।

প্রায় দুই দশকের ক্যারিয়ারে ক্যালিস নিজেকে রেখে গেছেন সর্বকালের সেরাদের তালিকায়। টেস্টে ৫৫.৩৭ আর ওয়ানডেতে ৪৪.৩৬ গড়ে ব্যাট করেছেন তিনি। দুই ফরম্যাটেই আছে ১০ হাজারেরও বেশি রান। ৫১৭ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৫৭ বার ম্যাচ সেরা হয়েছেন এই কিংবদন্তি অলরাউন্ডার।

  • বিরাট কোহলি (ভারত) – ৫৭

বর্তমান সময়ে নিঃসন্দেহে সেরা খেলোয়াড় হিসেবে সবার উপরের তালিকায় আছেন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি। তিন ফরম্যাটেই সমান তালে রান করে নিজেকে নিয়ে যাচ্ছেন অনন্য এক উচ্চতায়। বিরাট কোহলি বর্তমান সময়ের একমাত্র ক্রিকেটার যার ব্যাটিং গড় টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি তিন ফরম্যাটেই ৫০ এর বেশি।

ওয়ানডেতে প্রায় ৬০ এর কাছাকাছি গড়ে ১২ হাজারের বেশি রান করেছেন বিরাট। ওয়ানডেতে টানা ৩৬ মাস ব্যাটিং র‍্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে ছিলেন তিনি! ৪৩৬ টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৫৭ বার ম্যান অব দ্যা ম্যাচের পুরষ্কার জিতেছেন। ক্যারিয়ার শেষ করার আগে হয়তো নিজেকে এই তালিকার সবার উপরেই রেখে যাবেন।

  • সনাথ জয়সুরিয়া (শ্রীলঙ্কা) – ৫৮

বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত এক নাম সাবেক লঙ্কান তারকা সনাত জয়সুরিয়া। পুরো আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে টেস্টে ৬৫ আর ওয়ানডেতে ৯১ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছেন এই লঙ্কান গ্রেট। বোলারদের উপর শুরু থেকেই চড়াও হয়ে ব্যাট করেন তিনি। তাঁর আগ্রাসী ব্যাটিং প্রতিপক্ষের বোলারদের জন্য ছিলো চিন্তার কারণ।

৪৪৫ ওয়ানডেতে ১৩ হাজারেরও বেশি রান সংগ্রহ করেছেন তিনি! যা এই ফরম্যাটে তৃতীয় সর্বোচ্চ। ১৯৯৬ সালে নিজের খেলা প্রথম বিশ্বকাপেই শিরোপা জয় করেন তিনি। ৫৮৬ টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৫৮ বার ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন ‘মাতারা হ্যারিকেন’ খ্যাত এই লঙ্কান ওপেনার।

  • শচীন টেন্ডুলকার (ভারত) – ৭৬

ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার এই তালিকায় সবার উপরে আছেন। এমনকি তাঁকে ধরার মতো এই তালিকায় আছেন শুধুই বিরাট কোহলি।

১৯৮৯ সালে ক্যারিয়ার শুরু করা টেন্ডুলকার ২০১৩ সাল পর্যন্ত ২৪ বছর ভারতকে সার্ভিস দিয়েছেন। টেস্ট এবং ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই তিনি সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। দুই ফরম্যাটেই তিনি সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলেছেন। ৪৮ বছর বয়সী শচিন ২০০ টেস্টে ৫৩.৭৯ গড়ে ১৫৯২১ রান করেছেন। আছে ৫১ টি সেঞ্চুরি। সর্বোচ্চ স্কোর ২৪৮ রান। ৪৬৩ ওয়ানডেতে ১৮৪২৬ রান সংগ্রাহক তিনি! ওয়ানডেতে করেছেন ৪৯টি সেঞ্চুরি। ৬৬৪ আন্তর্জাতিক ম্যাচে তিনি মোট ৭৬ বার ম্যাচ সেরার পুরষ্কার জিতেছেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...