দেশের লিগে দেশিদেরাই নেই দৃশ্যপটে!

লিগের পঞ্চম রাউন্ড শেষে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় নেই কোনো বাংলাদেশি খেলোয়াড়ের নাম। গোল লিস্টে নামতে নামতে ১০ নম্বরে নামলে দেখা মিলবে প্রথম বাংলাদেশি খেলোয়াড়কে। নাম তার জুয়েল রানা। ২ গোল করে তিনি তালিকার ১০ নম্বরে।

গত পরশু শেষ হয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) পঞ্চম রাউন্ড শেষ। ৩০ ম্যাচ শেষে প্রিমিয়ার লিগের টেবিলটাও দেখার মতন। বসুন্ধরা ৫ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে আছেন সবার উপরে। যদিও ১ ম্যাচ কম খেলে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে শেখ জামাল। লিগ ভালো চললেও যে জন্য বাংলাদেশি লিগ, তার কিঞ্চিতাংশও পূরণ হয়নি। লিগে বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের দেখাই মিলছে না এই মৌসুমে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের আগে গোলমুখে খবরই নেই তাঁদের।

করোনাভাইরাসের ধাক্কা কাটিয়ে লিগে মাঠে ফেরেছে বেশ অনেকদিন। কিন্তু এতোদিনেও ভরসার পাত্র হয়ে উঠতে পারেননি তাঁরা। বরং বিদেশি খেলোয়াড়দের উপর ভরসা করেই চলছে বড় দলগুলো। ছোট্ট পরিসংখ্যানেই তা স্পষ্ট।

লিগের পঞ্চম রাউন্ড শেষে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় নেই কোনো বাংলাদেশি খেলোয়াড়ের নাম। গোল লিস্টে নামতে নামতে ১০ নম্বরে নামলে দেখা মিলবে প্রথম বাংলাদেশি খেলোয়াড়কে। নাম তার জুয়েল রানা। ২ গোল করে তিনি তালিকার ১০ নম্বরে।

অথচ গত মৌসুমেও শীর্ষ ১০ জনের তালিকায় ছিলেন জাতীয় দলের দুই স্ট্রাইকার। ১৬ গোল নিয়ে তৃতীয় নবীব নেওয়াজ জীবন আর ১১ গোল করে মতিন মিয়া। আবাহনী আর বসুন্ধরার দুই স্ট্রাইকারকে নিয়ে বেশ আশা পেয়েছিল বাংলার দর্শকেরা। ভাবা হচ্ছিল পরবর্তী বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচের আগে হয়তো তাদের কাছ থেকে গোলের দেখা পাওয়া যাবে। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি।

প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা আপাতত বসুন্ধরা কিংসের রবিনহো আর শেখ জামালের পা ওমর জোবে। আর তাদের পরেই ৪ গোল নিয়ে আছেন চট্টগ্রাম আবাহনীর নিক্সন আর মোহামেডানের সুলেমান দিয়াবাতে। এরপরেও বাংলাদেশি স্ট্রাইকারের দেখা নেই। নিচে নামতে নামতে ১০ নম্বরে নেমে দেখা মিলে আবাহনীর জুয়েল রানা, শেখ জামালের নুরুল আবসার, শেখ রাসেলের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মেহেদি হাসান রয়্যালকে। সবাই আছেন ২ গোল নিয়ে ১০ নম্বরে।

ভাবছেন এদের কেউই তো জাতীয় দলে নিয়মিত নন। তারা কোথায়? তাদের কথা শুনলে আরো কষ্ট বাড়বে বৈকি কমবে না। এখনও গোলের খাতাই খুলতে পারেননি জীবন। মতিন মিয়াও গোলশূণ্য। জাতীয় দলের আরেক নিয়মিত ফরোয়ার্ড মাহবুবুর রহমান সুফিলও আর্যভট্টের আবিষ্কারকে অবলম্বন করে আছেন। বাংলাদেশ পুলিশের এম এস বাবলু, ঢাকা আবাহনীর সাদ উদ্দীন সবাই সমান। আরেক ফরোয়ার্ড রবিউল তো ম্যাচই খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না।

পঞ্চম রাউন্ড শেষে মাত্র একবার করে গোলের দেখা পেয়েছেন সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের আরিফুর রহমান, ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, কিংসের মোহাম্মদ ইব্রাহিম, তৌহিদুল আলম সবুজ ও উত্তর বারিধারার সুমন রেজা।

সামনেই আসছে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচ। তাঁর আগে আগে এমন গোলক্ষরা চিন্তার উদ্রেগ জমাচ্ছে। আগামী ২৫ মার্চ আফগানিস্তানের মুখোমুখি হতে হবে টাইগারদের। তখন এই রবিনহো-নিক্সনরা গোল করে দিবে না, সেই দায়িত্ব তুলে নিতে হবে জীবন-মতিন মিয়াদের। এখন থেকেই গোল না ফিরলে আরেকটা বড় ব্যবধানে হার দেখার অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।

জাতীয় দল গোছানোর জন্য আনা ইংলিশ টেকনিশিয়ান পল স্মলি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছেন লিগের ম্যাচ দেখে। ফেডারেশন কাপ ও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ দেখেই দলে জায়গা দিবেন খেলোয়াড়দের। কোচ জেমি ডেও বলেছেন চমকের অপেক্ষায় থাকতে। দেখা যাক, সেই চমকের সাথে ভালো কিছুই মিশ্রণ হয় কী না?

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...