পরাভূত হারিস রউফ!

বিশ্বকাপ শুরুর কিছুদিন আগে ভারতকে এক প্রকার হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন পাকিস্তানের হারিস রউফ। দুই প্রতিবেশী দেশের লড়াইয়ে মাঠের বাইরের বাকযুদ্ধ নতুন কিছু নয়।

‘মেলবোর্ন আমার নিজের মাঠ। আমি মেলবোর্ন স্টার্সের হয়ে খেলি। আমি যদি নিজের সেরাটা দিতে পারি তাহলে ভারতীয় ব্যাটাররা আমাকে সহজে খেলতে পারবে না।’

বিশ্বকাপ শুরুর কিছুদিন আগে এই কথা বলেই ভারতকে এক প্রকার হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন পাকিস্তানের হারিস রউফ। দুই প্রতিবেশী দেশের লড়াইয়ে মাঠের বাইরের বাকযুদ্ধ নতুন কিছু নয় ৷ সাবেক ক্রিকেটাররাও তর্ক বিতর্কে শামিল হন। কারণ ভারত-পাকিস্তান মহারণ ক্রিকেটীয় লড়াইয়ের ঊর্ধ্বেও অনেক কিছু। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় এ বিশ্বকাপ শুরুর আগে হারিস রউফের এমন আগ্রাসী মন্তব্য বেশ হইচই-এ ফেলে দিয়েছিল। 

তবে হারিস রউফও সম্ভবত নিজে আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর ছিলেন। নিজের কথা মত মেলবোর্নে এসেই ভারতের টপ অর্ডারকে বলতে গেলে একাই ধসিয়ে দিয়েছিলেন। ভারতকে ১৬০ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেওয়ার পর বোলিংয়ে এসে রোহিত শর্মা আর ইনফর্ম সুরিয়া কুমার যাদবকে দাঁড়াতেই দেননি তিনি।

রোহিতকে আউট করার পর দারুণ কিছু শট খেলে ক্রিজে সেট হতে যাওয়া সুরিয়াকেও আটকে দিয়েছেন। এক্সট্রা পেস আর বাউন্সে পরাস্ত করেছেন সুরিয়াকে। কিন্তু দিনশেষে পরাজয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। নিজের শুরুর ছন্দটাও শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেননি তিনি। মেলবোর্ন থেকে তাই তাঁর প্রস্থান হয়েছে এক রাশ হতাশায়। 

পাকিস্তানের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের আগেই বিগব্যাশে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন হারিস রউফ। মেলবোর্ন স্টার্সের হয়ে প্রথম আসরে হ্যাটট্রিকসহ ৫ উইকেট নিয়ে হঠাৎই লাইমলাইটে চলে আসেন তিনি। 

আর সে সময় থেকেই মেলবোর্নে আসলেই রুদ্র মূর্তিতে আবির্ভূত হন হারিস রউফ। তাই বিশ্বকাপে মেলবোর্নের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে কোনো রকম রাখ ঢাক না রেখেই ভারতকে অকপটে সতর্কবাণী দিয়ে রেখেছিলেন। 

তবে নিজের সেই আগ্রাসন ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দেখাতে পারেননি রউফ। শেষ দুই ওভারে ভারতের ৩১ রানের সমীকরণে উনিশতম ওভারে শুরুটা ভাল করলেও বিরাট কোহলির কাছে শেষ দুই বলে হজম করেন দুই ছক্কা। আর ম্যাচের চিত্রটা পাল্টে যায় সেখানেই। নাওয়াজের করা শেষ ওভারের রোমাঞ্চে ম্যাচটি জিতে যায় ভারত। 

তবে দিনশেষে ম্যাচটি একজন বিরাট কোহলির কাছেই হেরেছে পাকিস্তান। ৮ বলে ২৮ রানের সমীকরণে হারিস রউফের টানা দুই বলে দুই ছক্কা মেরে, ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন তিনি। এমনি শেষ ওভারে গিয়েও গুরুত্বপূর্ণ এক ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচজয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান কোহলিই।

একই সাথে, এ দিন হারিস রউফের আগ্রাসন ম্লান হয়ে যায় বিরাট কোহলির বিধ্বংসী ইনিংসে। অশ্বিন নিজেও হয়তো উইনিং শট খেলে হারিস রউফের সে কথার উত্তর দিয়েছেন। ম্যাচ শেষে তাঁর উদযাপনই তো সেটি বলে দেয়। এমন ম্যাচে জয় মানেই তো বাধ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়ার মত। বিরাট কোহলি তরীতে আপাতত তাই ভাসতে থাকুক টিম ইন্ডিয়া। 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...