২৩ এপ্রিল কী দু:সহ!

নানা কারণেই কোন একটি নির্দিষ্ট দিন কোন দলের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকতে পারে৷ ট্রফি জয়, বড় কোন রেকর্ড ইত্যাদি কারনে অনেক তারিখ-ই স্মরণীয় হয়। কিন্তু একটি নির্দিষ্ট দিন অস্বাভাবিক পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তির জন্য স্মরণীয় হয়ে উঠলে কি মনে হবে?

নানা কারণেই কোন একটি নির্দিষ্ট দিন কোন দলের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকতে পারে৷ ট্রফি জয়, বড় কোন রেকর্ড ইত্যাদি কারনে অনেক তারিখ-ই স্মরণীয় হয়। কিন্তু একটি নির্দিষ্ট দিন অস্বাভাবিক পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তির জন্য স্মরণীয় হয়ে উঠলে কি মনে হবে?

ঠিক এমনটিই ঘটেছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর সঙ্গে। তিনটি ভিন্ন ভিন্ন বছরের ২৩ এপ্রিলে ফ্রাঞ্চাইজিটি অবাক করার মতই পারফরম্যান্স করেছে।

  • ২৩ এপ্রিল, ২০১৩

২০১৩ সালের আইপিএলে পুনে ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে ২৩ এপ্রিল খেলতে নেমেছিল ব্যাঙ্গালুরু। তবে খেলার চেয়ে বেশি তান্ডব চালিয়েছিলেন ব্যাঙ্গালুরুর ব্যাটসম্যানেরা, বিশেষ করে গেইলের অতিমানবীয় একটি ইনিংস আজো চোখে লেগে আছে দর্শকদের।

ব্যাঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে সেদিন টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় পুনে। ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন ক্রিস গেইল ও তিলকারত্নে দিলশান। প্রথম ওভার থেকেই বোলারদের উপর চড়াও হয়ে ব্যাট করতে থাকেন ক্রিস গেইল।

চার ছক্কার ফুল ঝুড়ি ছুটিয়ে শেষ পর্যন্ত ৬৬ বলে ১৭৫ রান করেছিলেন ইউনিভার্স বস। গড়েছিলেন টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের দ্রুততম সেঞ্চুরি এবং এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।

গেইলের ১৭৫ এবং শেষদিকে ডি ভিলিয়ার্সের আট বলে ৩১ রানে ভর করে বিশ ওভার শেষে ২৬৩ রান করেছিলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স। যা কিনা ছিল তৎকালীন সর্ব্বোচ্চ দলীয় স্কোর এবং বর্তমান টি-টোয়েন্টিতে চতুর্থ সর্বোচ্চ।

দ্বিতীয় ইনিংসে পুনে ওয়ারিয়র্সকে মাত্র ১৩৩ রানে থামিয়ে দিয়ে শেষ পর্যন্ত ১৩০ রানের বিশাল এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্যাঙ্গালোর।

  • ২৩ এপ্রিল, ২০১৭

চার বছর পর আরেকটি ২৩ শে এপ্রিল। এদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর প্রতিপক্ষ ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। চার বছর আগের সুখস্মৃতি কল্পনা করে গেইল, কোহলিরা হয়তো ব্যাট করতে নেমেছিলেন। কিন্তু এবার কোন ব্যাটিং ঝড় নয়, বরং ব্যাঙ্গালুরুর ব্যাটিং লাইনআপের উপর ঝড় বইয়ে দিয়েছিল কলকাতার বোলাররা।

প্রথম ইনিংসে কলকাতার করা ১৩১ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই ওপেনার ভিরাট কোহলি’কে হারায় ব্যাঙ্গালোর। এরপরই শুরু হয় ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিল। ক্রিস ওকস, নাথান কোল্টার-নাইলদের দাপটে ১০ ওভারের আগেই অলআউট হয়ে যায় দলটি।

মাত্র ৪৯ রানে গুটিয়ে যাওয়া ব্যাঙ্গালুরু সেদিন আইপিএলের ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানের লজ্জাজনক এক রেকর্ড গড়েছিল। এমনকি, তাদের কোন ব্যাটসম্যানের রানসংখ্যা দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারেনি।

  • ২৩ এপ্রিল, ২০২২

আগের দুইটি ২৩ এপ্রিলে ভিন্নরকম স্বাদ পেয়েছিল ব্যাঙ্গালুরু। সে কথা মাথায় রেখে তৃতীয়বারের মত ২০২২ সালের ২৩ শে এপ্রিল সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু।

টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই মার্কো জানসেনের তোপের মুখে পড়ে ব্যাঙ্গালুরুর ব্যাটসম্যান। দলীয় দ্বিতীয় ওভারেই এই প্রোটিয়া ফাস্ট বোলার একে একে সাজঘরে ফেরান ডু প্লেসিস, বিরাট কোহলি এবং অনুজ রাওয়াতকে। এরপর অবশ্য গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এবং সুয়াশ প্রভুদেশাই চেষ্টা করেছিলেন প্রতিরোধ গড়ার কিন্তু তাঁদের চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে নটরাজন, জগদীশ সুচিথরা ধ্বসিয়ে দিয়েছে ব্যাঙ্গালুরুর মিডল অর্ডার।

শেষ পর্যন্ত আর কেউ ব্যাট হাতে দাঁড়াতে না পারায় মাত্র ৬৮ রানেই থামতে হয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সকে। আইপিএলের ইতিহাসে এটি ষষ্ঠ সর্বনিন্ম রানের ইনিংস বটে। মজার ব্যাপার, ২০১৭ সালের ম্যাচটির মত ২০২২ সালের ম্যাচেও গোল্ডেন ডাক মেরেছেন বিরাট কোহলি।

এপ্রিলের ২৩ তম দিনটি একেকবার একেকটি ভিন্ন ভিন্ন চমক নিয়েই হাজির হচ্ছে চ্যালেঞ্জার্সদের জন্য। তবে প্রথমবার সেটি গর্বিত করলেও পরের দুবারই লজ্জার রেকর্ড গড়তে হয়েছে তাদেরকে। আইপিএলের এবারের আসরে অবশ্য আট ম্যাচে পাঁচ জয় নিয়ে ভালো অবস্থানেই রয়েছে ডু প্লেসিসের নেতৃত্বাধীন ব্যাঙ্গালুরু কিন্তু এমন বিধ্বস্ত হওয়ার পর দলের মানসিকতা ইতিবাচক রাখাই এখন চ্যালেঞ্জার্সদের গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...