নব্বইয়ের লড়াকু সেনা

স্কটের ২২ গজের শুরুটা হয় রাজকীয় ভাবেই! কেননা রঙিন পোশাকের প্রথম ম্যাচে শচীন আর সাদা পোশাকের ম্যাচে লারার মতো ব্যাটসম্যানকে অভিষেক শিকার হিসেবে পুড়েছিলেন পকেটে। ক্যারিয়ার শেষে নিজেকে খুব বেশিদূর না নিতে পারলেও, রেকর্ড বা প্রাপ্তির খাতায় যুক্ত করেছেন অসংখ্য রেকর্ড; ইতিহাস।

লড়াকু সৈনিক; কথাটি আমার নিজের বানানো নয়, এই বানী ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসাইনের দেওয়া। আচ্ছা এই লড়াকু সৈনিকটি কে? ক্রিকেটের ২২ গজে ‘দ্য রাস’ নামে কি কোনো ক্রিকেটার মাঠ মাতিয়েছেন? ইতিহাসের পাতা উল্টিয়ে খুঁজতে থাকুন! এবার আপনি যাকে খুঁজে পাবেন তিনি আর কেউ নন, তিনি নিউজিল্যান্ডের স্কট বার্নার্ডো স্টাইরিস।

স্কট স্টাইরিস; অলরাউন্ডার হিসেবেই পরিচিত ছিল বিশ্ব ক্রিকেটে। জন্ম ১৯৭৫ সালের ১০ জুলাই। একজন স্কটের ২২ গজের শুরুটা হয় রাজকীয় ভাবেই! কেননা রঙিন পোশাকের প্রথম ম্যাচে শচীন আর সাদা পোশাকের ম্যাচে লারার মতো ব্যাটসম্যানকে অভিষেক শিকার হিসেবে পুড়েছিলেন পকেটে। ক্যারিয়ার শেষে নিজেকে খুব বেশিদূর না নিতে পারলেও, রেকর্ড বা প্রাপ্তির খাতায় যুক্ত করেছেন অসংখ্য রেকর্ড; ইতিহাস। যা তাঁকে নিউজিল্যান্ডের সেরা অলরাউন্ডারের কাতারে রাখতে বাধ্য করবে!

স্কটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শুরুটা হয় ১৯৯৯ সালে ভারতের বিপক্ষে একদিনের ম্যাচ দিয়ে। এবং সাদা পোশাকে অভিষেক হয় ২০০২ সালে। ক্যারিয়ারে নিউজিল্যান্ডের হয়ে ২৯ টেস্ট, ৩১টি টি-টোয়েন্টি এবং ১৮৮ টি একদিনের ম্যাচে খেলার সুযোগ হলে ব্যাট হাতে ৬৬৪৭ রানের পাশাপাশি বল হাতে শিকার করেছেন ১৭৫ উইকেট।

ক্যারিয়ারে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন ৯ বার এবং ফিফটি করেছেন ২৯ বার! আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বল হাতে ৫ উইকেটের দেখা পেয়েছেন ১ বার! ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ২৫ রানে ৬ উইকেট। এছাড়াও ২০০৭ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।

স্কট একজন লড়াকু সৈনিকের নাম; অবশ্য সেটি ক্রিকেট মাঠে। ক্যারিয়ারে অনেকবার দলের বিপদে ব্যাট হাতে দিয়েছেন সামনে থেকে নেতৃত্ব! বিশ্বকাপের মতো আসরে প্রায় একা হাতে দলকে জিতিয়েছেন তিনি। রয়েছে বিশ্বকাপ আসরে দু’টি তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার।

ক্যারিয়ারে একা হাতে লড়াই করে দলকে না জেতানোর আক্ষেপও কম নেই। একদিনের ক্রিকেটে ক্যারিয়ার সেরা ১৪১ রানের দিনেও দল হেরেছে বাকি ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং ব্যর্থতায়! তবে ৪ সেঞ্চুরির ২ সেঞ্চুরি ঠিকই নিউজিল্যান্ডকে এনে দিয়েছিল জয়ের হাসি। সাদা পোশাকে করা ৫ সেঞ্চুরির ২ ম্যাচে হেসেছে নিউজিল্যান্ড! বাকি ৩ সেঞ্চুরির ম্যাচে ২ ড্র এবং ১ হার নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাকে।

স্কট! অভিষিক্ত টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান। নিজের প্রথম টেস্টেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেছিলেন ১০৭ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। শুধু তাই নয় অভিষেক ম্যাচের ২ ইনিংস মিলিয়ে সেঞ্চুরি এবং ফিফটির রেকর্ডও গড়েছেন স্কট। এখানেই শেষ নয়, নিজের অভিষেক টি-২০ ম্যাচে ফিফটি করে নামটি তুলেছেন রেকর্ড বুকে।

স্কট একজন লড়াকু সৈনিকের নাম। ২২ গজে এমন অসংখ্য রেকর্ডের সাক্ষী হয়ে আছেন তিনি। দলের বিপদে বহুবার ব্যাট হাতে এগিয়ে নিয়েছেন। বল হাতেও কম ছিলেন না। নিজের সেরা দিলেন পেস বোলিংয়ে শিকারে পরিণত করেছেন বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের।

যদিও স্কট নামটি এখন অনেকটাই অপরিচিত। কিন্তু একটা সময় ক্রিকেটের ২২ গজের অনেক পরিচিত মুখ ছিলেন সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। যদিও, আইপিএলে ধারাভাষ্য দেওয়ার সুবাদে তিনি এখনো আছেন ক্রিকেটের সাথেই।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...