সাফল্যে নতুন, তবে ক্রিকেটে নতুন নয় আমেরিকা। প্রথম দ্বিজাতীয় ম্যাচের সাথেও জড়িয়ে আছে তাঁদের নাম। ২০০৬ সালে তাঁর প্রথমবারের মত খেলে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ।
সেবার বিশ্বকাপের আগে কলম্বোতে বাংলাদেশের বিপক্ষে একটা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ দল তো বটেই, মজার ব্যাপার হল, সেদিন যুক্তরাষ্ট্র যুব ক্রিকেট দলের হয়েও ওপেন করতে নেমেছিলেন একজন বাংলাদেশি। তাঁর নাম সুমন বারি।
বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ থেকে উঠে আসা প্রথম ক্রিকেটার তিনি। এখন পর্যন্ত একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে মার্কিন মুল্লুকের জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন তিনি। কিশোর বয়সে ভাগ্যের অন্বেষণে পারিবারিক ভাবেই চলে যান আমেরিকায়। সেখানেই ক্রিকেট জীবনের বিকাশ হয় তাঁর।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি মুশফিকুর রহিমের ভাল বন্ধু। সেই যুব দলের সময় থেকেই দু’জনের বন্ধুত্ব। ২০০৬ সালে যে বিশ্বকাপটা সুমন খেলেছিলেন, সেখানে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন মুশফিকুর রহিম। দেশে আসলেই মুশফিকের সাথে জমিয়ে আড্ডা দেন।
তিনি বলেন, ‘২০০৬ সালে মুশফিক অনেক তরুণ। ততদিনে অবশ্য টেস্ট অভিষেক হয়ে গেছে, লর্ডসে টেস্ট খেলেছে। ম্যাচটা আমি দেখেছিলাম।’
‘বাংলাদেশ ক্রিকেটার্স’ নামের একটি ক্লাব থেকে সুযোগ আসে আমেরিকার অনূর্ধ্ব ১৯ দলে। নিউ ইয়র্কের যে তিনজন ক্রিকেটার সেই বিশ্বকাপ খেলেছিলেন তাঁদের একজন এই সুমন। ঘুরেফিরে ২০০৬ সালটাই তাই তাঁর জীবনের সেরা স্মৃতি। সেবার ছোটদের বিশ্বকাপ আসরে বসেছিল তারকার মেলা।
তিনি বলেন, ‘ওই বিশ্বকাপে সেরা সব ক্রিকেটাররা ছিলেন। বাংলাদেশের তামিম ইকবাল, মুশফিক, সাকিব আল হাসান, ডলার মাহমুদ, শামসুর রহমান শুভরা ছিলেন। ভারতের রোহিত শর্মা, চেতেশ্বর পূজারা, পিযুষ চাওলা, পাকিস্তানের সরফরাজ আহমেদ, ইমাদ ওয়াসিম, কিংবা অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার ছিলেন।’
যদিও, পরবর্তীতে আর আমেরিকার আর মূল দলে খেলা হয়নি। এই নিয়ে আক্ষেপ আছে। আছে অভিযোগও। তিনি বলেন, ‘আমাদের ওই সময় আসলে এত সুযোগ ছিল না। উইকেন্ডে ক্রিকেট খেলতাম। ক্রিকেট থেকে টাকা আয় করার উপায় ছিল না। খেলতাম মনের আনন্দে।’
জীবন অবশ্য তাতে থেমে নেই সুমনের। এখনও ক্রিকেট খেলছেন কাজের পাশাপাশি। শুক্রবার রাত অবধি কাজ করে, সকাল আটটায় মাঠে গিয়ে হাজির হচ্ছেন। মাইনর ক্রিকেট লিগে খেলেছেন শিকাগো ব্লাস্টার্সের হয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের ইদানিংকালের ক্রিকেটারদের সাথেও খেলেছেন। এখনকার দলের আলী খান কিংবা কোরি অ্যান্ডারসনদের সাথে খেলেছেন একটা সময়।
শুধু আমেরিকা নয়, সিরাজগঞ্জ প্রিমিয়ার লিগে (এসপিএল) খেলেছেন, দলে সতীর্থ ছিলেন খোদ শামিম পাটোয়ারি। সেখানে ৩৫ বলে ৫০ রানের ইনিংসও খেলেন। সুযোগ পেলে, একবার বিপিএলের কোনো দলে অনুশীলনের সুযোগ চান। সুমন কি পাবেন সেই সুযোগ?