More

Social Media

Light
Dark

লঙ্কা দ্বীপে ঘূর্ণি-রহস্যের গোলকধাঁধা

একসময় যার কাণ্ডারি মুরালিরা ছিলেন। তারই হাল ধরলেন মেন্ডিসরা। সেই রহস্যময় ঘূর্ণির হালই আবার তুলে নেন হাসারাঙ্গারা। ক্রিকেটপাড়াও অধীর আগ্রহে বসে আছে। কেমন হবে আগামীর রহস্যে ঘেরা লঙ্কান ঘূর্ণিবাজ।

শ্রীলঙ্কা দ্বীপের বোলিং, এই প্রসঙ্গে প্রথমেই হয়তো মুত্তিয়া মুরালিধরন কিংবা লাসিথ মালিঙ্গার ধার ঘেঁষে জবাব আসবে। সত্যিই তাই। মুরালির মতো স্পিনার কেবল শ্রীলঙ্কাতেই, ক্রিকেট বিশ্বে বিরল। আরও একটু গভীরে যদি যেতে বলি?

তাহলেই নাম এসে পরবে রঙ্গনা হেরাথ বা অজন্তা মেন্ডিসের। এবার যদি ইতিহাস পেরিয়ে একটু সাম্প্রতিক কালে ফেরত আসি? সাথে সাথেই নাম চলে আসবে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মাহিশ থিকশানাদের। এদের মধ্যে একটা মজার মিল আছে। লক্ষ করেছেন কী? 

এদের মধ্যে হেরাথ বা মালিঙ্গা বাদে সবাই কিন্তু রহস্যময় স্পিনার। শ্রীলঙ্কা যেন রহস্যময় স্পিনার তৈরির এক আতুরঘর। হয় বোলিং অ্যাকশনে নইলে ঘূর্ণিতে এরা প্রত্যেকেই রহস্যে ঘেরা।

আসলেও তো! সেই ছোট্টবেলায় আমাদের এই তরুন প্রজন্ম এক মুরালিকে দেখে বড় হয়েছে। আজ অব্দি কেউ তার বোলিং নকল করতে পারলো না তো! শুধু বাংলাদেশেই নয়।

সারাটা বিশ্বজুড়েই এক সময়কার তোলপাড়ের কারণ ছিলেন এই মুরালিধরন। ১৯৯০ সালের দিকে ক্রিকেট বিশ্বে রাজত্ব গাড়েন তিনি। কব্জির মোচরে কখনও করতেন অফস্পিন। কখনও বা টপ স্পিন। মুরালির আসল যাদু ছিল দুসরা বলে। 

৮০০ উইকেট শিকারী মুরালির জাদু তখন শেষের দিকে। তখনই রাবনের দ্বীপ তার ঝাঁপির দিকে হাত বাড়ান। নিয়ে আসেন অজন্তা মেন্ডিসকে। অজন্তা যেন আরও রহস্যময়। ২০০৮ সালে দলে আসেন তিনি। প্রথম টেস্টেই তুলে নেন ১৩২ রানে ৮ উইকেট।

কিছুটা দৌঁড়ে এসে কখনও করেন অফ ব্রেক। কখনও বা করে বসেন টপ স্পিন। হঠাৎ করেই ছোড়েন গুগলি। আবার এই তো করে বসেন ক্যারম বল। টি-টোয়েন্টিতেও কম যাননি তিনি। ছয় উইকেট নেয়া যেন তার জন্য নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। 

ইনজুরিতে কাবু মেন্ডিসও একসময়ে ছিটকে পড়েন। কিন্তু লঙ্কা কিন্তু তাতেও দমে যায়নি। উপহার দেন আরও রহস্যময় ঘুর্ণিবাজকে। 

প্রথমেই নাম আসে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার। পেসার হিসেবে খেলা শুরুটাই যেন তাকে বিশেষভাবে এগিয়ে রাখে। এইতো কখনও বা করে বসেন লেগব্রেক। আবার হঠাৎ করেই জায়গায় দাঁড়িয়ে যান। কিছুটা নিচু অবস্থায় করে বসেন অনুভূমিক কোনে বল। কিছুটা যেন মালিঙ্গার মতো করেই ছোড়েন।

পরের নামটাই মাহিশ থিকশানার। প্রধানত ডান-হাতি অফস্পিনার তিনি। কিন্তু কখনও কখনও করেন ক্যারম বল। কব্জির অস্বাভাবিক মোচড়ে বলকে যেকোনো দিকেই ঘোরাতে সক্ষম ২৪ বছরের এই ঘূর্ণিবাজ। আবার করতে পারেন বাঁ-হাতিদের মতো গুগলি। যা ‘রঙআন’ নামে পরিচিত।  

শ্রীলঙ্কা কিন্তু এবারের ক্ষান্ত দেয়নি। তার ভূমিতেই গড়ে ওঠা কামিন্দু মেন্ডিস ডান-বাম উভয় হাতেই ঘূর্ণিতে পারদর্শী।  পাক ক্রিকেট যেমন ক্রিকেট জগতে এনে দিচ্ছে নিত্য নতুন গতি দানব। শ্রীলঙ্কাও যেন নিজ হাতেই গড়ে তুলছেন একের পর এক রহস্যে ঘেরা ঘূর্ণিরত্ন।

একসময় যার কাণ্ডারি মুরালিরা ছিলেন। তারই হাল ধরলেন মেন্ডিসরা। সেই রহস্যময় ঘূর্ণির হালই আবার তুলে নেন হাসারাঙ্গারা। ক্রিকেটপাড়াও অধীর আগ্রহে বসে আছে। কেমন হবে আগামীর রহস্যে ঘেরা লঙ্কান ঘূর্ণিবাজ।

Share via
Copy link