ভারে কাটা বনাম ধারে কাটা

মিরাজ, সাইফউদ্দিন বা শান্তকে শুধু বারবার জাতীয় দলে সুযোগ করে দেয়া ছাড়া আর কি দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)? তাদের শানিত হয়ে ওঠার ধাপগুলো কি ছিল? ভাঙাচোরা ডোমেস্টিক লিগ আর এইচপি দলে অনুশীলন কি তরবারি বানাতে সক্ষম? ভারে কাটা এবং ধারে কাটার ভেতর পার্থক্য নিশ্চয়ই বুঝতে পারেন!

সরফরাজ খান, ঈশান কিষাণ, ঋষাভ পান্ত, ওয়াশিংটন সুন্দর, পৃথ্বী শ।

সাইফ হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদি রানা।

রশিদ খান, মুজিব উর রহমান।

শিমরন হেটমায়ার, আলজারি জোসেফ।

২০১৬ আর ২০১৮ সালের অনূর্ধ্ব বিশ্বকাপে এই নামগুলোকে আলাদাভাবে উচ্চারন করা হয়েছিল। ট্যালেন্টের বিচারে এদেরকেই ভাবা হয়েছিল ভবিষ্যৎ ক্রিকেটের কান্ডারি।

আজ প্রায় ৩/৫ বছর পর এসে কে কোথায় দাঁড়িয়ে?

মেহেদী হাসান মিরাজ ছাড়া বাংলাদেশি ট্যালেন্টগুলো এখনও কুড়ি হয়েই আছে, প্রস্ফুটিত হতে পারেনি। মিরাজই বা তার প্রতিভার কতটুকু বিকাশ করতে পেরেছে?

রশিদ খান, মুজিব, এরা আন্তর্জাতিক অ্যারেনায় প্রতিষ্ঠিত নাম।

হেটমায়ার বা আলঝারি জোসেফ হয়ত এখনও মহীরুহ হয়নি, কিন্তু উইন্ডিজ দলকে এই দুজন অলরেডি একা হাতে বেশ কয়েকটি ম্যাচ জিতিয়েছে।

ঈশান কিষাণের অভিষেক হয়ে গেল ক’দিন আগে। কি দুর্দান্ত!

পান্ত বিশ্ব ক্রিকেটেই চর্চা হওয়া এক নাম। ওয়াশিংটন সুন্দর স্টিডিলি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলছে! পৃথ্বী শ নিজের ক্যালিবার দেখিয়েছে, ভারতের ভবিষ্যৎ ওপেনার কোন সন্দেহ ছাড়াই। শুধু সরফরাজ খানই হতাশ করেছে!

সাঞ্জু স্যামসনও কম না। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) অধিনায়ক হিসেবে অভিষেকেই দারুণ এক সেঞ্চুরি করার অনন্য রেকর্গ গড়েছেন।

আলোচনার খোরাকটা পেলাম আজ ঈশান কিষাণের ইনিংসটা দেখে। তার অভিষেকের মধ্য দিয়ে একটা সার্কেল পূর্ণ হল ভারত শিবিরে! ইনভেস্ট এবং প্রসেসের এই সার্কেল আবারও প্রমান করল প্ল্যানিং কতটা জরুরী!

একটা শক্ত ডোমেস্টিক স্ট্রাকচার, বয়সভিত্তিক লেভেল টু জাতীয় দল পর্যন্ত ধাপগুলো এবং নির্দিষ্ট প্লেয়ারের উপর ইনভেস্টমেন্ট! এই তিনটি বিষয়ের মিলবন্ধনে ঈশান কিষাণ, ঋষাভ পান্ত বা সুন্দরেরা বিকশিত হয়, পারিজাতের সুবাস আসে ড্রেসিংরুমে!

আপনি আইপিএল এবং রঞ্জ্রির নাম জানেন, হয়ত বিজয় হাজারে ট্রফির নামও জানেন। কিন্তু অসংখ্য আন্তস্টেট, আন্তজেলা প্রতিযোগিতার কথা জানেন না! আপনি জানেন না বয়সভিত্তিক লেভেল থেকে জাতীয় দল অবধি আর কতগুলো ধাপ রয়েছে। প্রতিটি ধাপে ট্যালেন্টকে ঘসামাজা করা হয়, প্রতিটি ধাপে গরম লোহাগুলো একটু একটু করে তরবারি হয়, এরপর যখন সেই তরবারিগুলো সঠিক সেনানায়কদের হাতে আসে, প্রতিপক্ষের রক্ত বাইশ গজে ঝরে!

মিরাজ, সাইফউদ্দিন বা শান্তকে শুধু বারবার জাতীয় দলে সুযোগ করে দেয়া ছাড়া আর কি দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)? তাদের শানিত হয়ে ওঠার ধাপগুলো কি ছিল? ভাঙাচোরা ডোমেস্টিক লিগ আর এইচপি দলে অনুশীলন কি তরবারি বানাতে সক্ষম? ভারে কাটা এবং ধারে কাটার ভেতর পার্থক্য নিশ্চয়ই বুঝতে পারেন!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...