মেন ইন অ্যাকশন!

আমাদের শৈশবে সবচেয়ে বেশি টানত শোয়েব আখতার আর ব্রেট লি। ওরকম বাঘের মতো দৌড় দিতে চাইত সবাই, পেস কতটা তা দেখতে বয়েই গেছে! প্রসাদ আর শ্রীনাথের হাত উপরে তোলা বোলিংয়ে আগ্রহ পেতাম না, আবার হারভাজন আসার পর ওকে অনুকরণ করে হাসাহাসি চলত অনেক। ওলোঙ্গার অ্যাকশন-ট্যাকশন না, ওর বাহারি চুলটাই আলোচ্য ছিল। লাসিথ মালিঙ্গা আসার পর অবশ্য ওর চুলের সাথে অ্যাকশন নিয়েও কথা হতো। চাক করে কি না, সেও বিরাট প্রশ্ন তখন!

অ্যান্ডি ক্যাডিকের কথা মনে আছে? বোলিং অ্যাকশনটা কেমন যেন! কোনোদিন ক্যাডিকের অ্যাকশন চেষ্টা করিনি। ড্যারেন গফ ছিলেন ক্যাডিকের বোলিং সঙ্গী। আব্বাস ভাইয়ের বলে বেশ স্পিড ছিল, লাইনটাও দারুণ ছিল ওনার। গফের সাথে মিলত কিছুটা তাঁর বোলিং।

সেই সময় অনেকেই ক্লুজনারের মতো শিকার ধরে বোলিং করতে চাইত, পোলকের অ্যাকশনটা জটিল লাগত বেশ। আমি মোটামুটি সব বোলিং অ্যাকশনই অনুকরণ করতে পারতাম বলে বিশ্বাস ছিল, কেবল পোলক আর ম্যাকগ্রা ছাড়া। ঐ দুটো কেন যেন হত না। ওয়াসিম আকরামেরটাও টানত খুব, অন্যদের তেমন দেখতাম না, তবে আমি প্রায়ই চেষ্টা করতাম।

আমাদের শৈশবে সবচেয়ে বেশি টানত শোয়েব আখতার আর ব্রেট লি। ওরকম বাঘের মতো দৌড় দিতে চাইত সবাই, পেস কতটা তা দেখতে বয়েই গেছে! প্রসাদ আর শ্রীনাথের হাত উপরে তোলা বোলিংয়ে আগ্রহ পেতাম না, আবার হারভাজন আসার পর ওকে অনুকরণ করে হাসাহাসি চলত অনেক। ওলোঙ্গার অ্যাকশন-ট্যাকশন না, ওর বাহারি চুলটাই আলোচ্য ছিল। লাসিথ মালিঙ্গা আসার পর অবশ্য ওর চুলের সাথে অ্যাকশন নিয়েও কথা হতো। চাক করে কি না, সেও বিরাট প্রশ্ন তখন!

ডমিনিক ককের অ্যাকশনের চেয়ে ওর হাঁটা-চলা, অভিব্যক্তি ভাল লাগত। কেমন দাপুটে ভাবভঙ্গি ছিল তার। তিনি আবার আড়াআড়ি রান আপে বল করতেন। কোণাকুণি রান আপ এ কেমন এক মোহগ্রস্ততা পেয়ে বসে! এনটিনি আর স্টেইনের বোলিংও কঠিন লাগত। স্টেইন হতোই না কোনোভাবে। কখনো দেখা গিয়েছে দৌড় শুরু করেছি একভাবে পরে গন্ডগোল পাকিয়ে প্রভীন কুমার হয়ে গিয়েছি! আর পি সিং, জহির খানদের শিকার ধরা বোলিং টানত না মোটেও।

একবার ফ্লিনটফের অ্যাকশন বাসায় প্রচুর শ্যাডো করে মাঠে গিয়েছি প্রয়োগ করতে। বল উড়ে গিয়ে কোনোমতে দেয়ালের ওপারে যেতে যেতে যায়নি। রাজিব রেগে গিয়ে বলে উঠেছিল, বল হারানোর ইচ্ছে হয়েছে নাকি তোমার? হার্মিসনেরটা চেষ্টাই করিনি, সাইমন জোন্সে আগ্রহ হয়নি, অ্যান্ডারসন তখনো সেভাবে টানেননি।

ইলিয়াস ভাইয়ের বোলিংয়ে পেস ছিলই না বলতে গেলে। একটু দৌড়ে এসে চাকিং ছাড়া বল ছুঁড়তেন, সেটাই পেস। অথচ জনসনের সেরা সময়ে তিনিও চাইতেন অমন বাঁ-হাত টেনে বল করতে। একশনে-দৌড়ে তেমনই ক্ষিপ্রতা প্রকাশ করতে চাইতেন। পারতেন না যদিও। তখন আমাদের নিত্য বিকেলে খেলার সময়ের অস্ত বেলা। সতেরার আমির কি যে টানতেন!

আমিরের পর আর একজন বোলারের অ্যাকশনই সামান্য টেনেছে। মিশেল স্টার্ক। ওর উঠতি সময়ে জনসন-সিডলরা কাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন, তখন টেন্ডুলকারের প্যাড ফাঁকি দিয়ে বল স্ট্যাম্পে লেগেছিল একবার। টেন্ডুলকারকে বোল্ড করাটাই যেন তার সেরা সাফল্য। সেটা নিয়ে কত কথা!

সেদিনের স্টার্ক যে এমন বিধ্বংসী হবেন কে ভেবেছিল! আর যেই ভাবুক, আমি তো ভাবিইনি। ইদানিং মুড়ি-মুড়কির মতো উইকেট পাচ্ছেন। পায়ের বুড়ো আঙুল তাক করে যা ছুঁড়ছেন!

আমার খুব জানতে ইচ্ছে হয়, এই সময়ের ছেলেপিলেরা এমন অনুকরণ করাতে আগ্রহ পায় কি না? তাদের পছন্দ কে বা কারা? বুমরাহ? স্টার্ক? বোল্ট? ফার্গুসন? মুস্তাফিজ? কামিন্স? রাসেল? শামি? উড? স্টোকস? নাকি আচ্ছন্ন করে রাখেন এখনো বুড়ো বা পুরনো কেউ? মালিঙ্গা? শোয়েব? লি?

অনুকরণের মজাটা টের পান কি তারা?

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...