হ্যালো, দিস ইজ কিলিয়ান ফ্রম রিয়াল মাদ্রিদ

নিন্দুকরা তো অনেক আগেই চুপ করে গিয়েছে, এখন এমবাপ্পে ছুটছেন সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে নিজের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় সৃষ্টির লক্ষ্যে। এভাবে ছুটতে থাকলে অবশ্য রোনালদো, বেনজেমার মত তাঁকে নিয়েও বন্দনা হবে সেখানে; মাঠের প্রতিটা ঘাস তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতায় মাথা নত করে রাখবে।

মাটির দিকে আঙুল তাক করে যেন বলতে চাইলেন, ‘আই অ্যাম হিয়ার!’ না তিনি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো নন, তবে রোনালদোর মতই। তিনিও রিয়াল মাদ্রিদেরই প্রাণভোমরা। পারফরম্যান্স কিংবা উদযাপনে, যেকোনো ভাবেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে খুঁজে পাওয়া গেল কিলিয়ান এমবাপ্পের মধ্যে।

সিআর সেভেনের স্মৃতি রোমন্থনের আগে এমবাপ্পে যা করলেন তাঁর পুরোটাই বিস্ময়।  নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক পেয়ে গেলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। রিয়াল ভালাদোদিদকে তিন গোল দেয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে নতন একটা যুগ, যেখানে কেবল এমবাপ্পের শাসন চলবে।

এর আগে অনেকবারই হ্যাটট্রিকের কাছাকাছি পৌঁছে ছিলেন তিনি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়নি। তবে এবার আর অতৃপ্তি রাখেননি তিনি। আর মাইলফলক পূরণ করে এতটাই তৃপ্ত ছিলেন যে শেষটা রাঙিয়ে দিলেন আইকনিক সিআর সেভেন সেলিব্রেশন দিয়ে।

রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে এটা এই তারকার মাত্র উনিশতম ম্যাচ, এত অল্প সময়ে হ্যাটট্রিক ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো কিংবা করিম বেনজেমাও পাননি। কেবল ভ্যান নিস্টেলরয়, গ্যারেথ বেল এবং ইমানুয়েল আদেবায়োর রিয়ালের খেলোয়াড় হিসেবে তাঁর চেয়ে কম ম্যাচ খেলে প্রথম হ্যাটট্রিকের স্বাদ পেয়েছিলেন।

এই স্ট্রাইকারের বিশ্বকাপ ফাইনালে করা গোলটার কথা মনে আছে? বাম দিকে শরীর বাঁকিয়ে বল ডান দিকে কার্ল করিয়ে শট, নিশ্চিত গোল। বহুদিন পর সেই দৃশ্য দেখা গেলো বটে। প্রথম গোলটা যখন আইকনিক স্টাইলে আসে তখনি বলা যায় বিশেষ কিছু ঘটতে যাচ্ছে।

হয়েছেও তাই, ৫৭ এবং ৯১ মিনিটে গোল করে মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন এই ফরাসি ফরোয়ার্ড। প্রতিপক্ষের উঠোনে, তাঁদের দর্শকের সামনেই ভালাদোদিদকে ছিড়েখুঁড়ে খেয়ে নেন তিনি। একা হাতে গুঁড়িয়ে দেন দলটাকে, বুঝিয়ে দেন লা লিগায় নতুন রাজা এসেছে। তাঁর একক অবদানে ৩-০ গোলে জিতেছে মাদ্রিদ জায়ান্টরা।

লিগে তাঁর মোট গোল এখন দাঁড়িয়েছে পনেরোতে, এরই সাথে অ্যাসিস্ট আছে দুইটা। অথচ শুরুটা হয়েছিল মলিন, লস ব্ল্যাঙ্কোসদের হয়ে প্রথম দিকে মানিয়ে নিতে পারছিলেন না এমবাপ্পে। একটা সময় মনে হচ্ছিলো আরো একটা ইডেন হ্যাজার্ড দেখতে যাচ্ছে ফুটবল বিশ্ব, তবে সময়ের কাটা ঘোরার সঙ্গে সঙ্গে তিনি মানিয়ে নিয়েছেন; দারুণ বন্ধন গড়ে তুলেছেন ভিনি, বেলিংহ্যাম আর রদ্রিগোর সঙ্গে।

যেটার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে মাঠেই। এখন পর্যন্ত অল হোয়াইটদের হয়ে ২২ গোল করেছেন কিলিয়ান। যার মধ্যে চারটা অ্যাসিস্ট এসেছে রদ্রিগো থেকে, চারটা বেলিংহ্যাম এবং তিনটা ভিনিসিয়াস থেকে – অন্য কোন সতীর্থ এর চেয়ে বেশি অ্যাসিস্ট করতে পারেননি।

রীতিমতো উড়ন্ত ফর্মে আছেন ২০২২ বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুটজয়ী তারকা। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে তেরো গোল করেছেন তিনি, একই সময়ে তাঁর চেয়ে বেশি গোল করতে পেরেছে কেবল একজনই, আলেক্সান্ডার ইসাক।

নিন্দুকরা তো অনেক আগেই চুপ করে গিয়েছে, এখন এমবাপ্পে ছুটছেন সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে নিজের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় সৃষ্টির লক্ষ্যে। এভাবে ছুটতে থাকলে অবশ্য রোনালদো, বেনজেমার মত তাঁকে নিয়েও বন্দনা হবে সেখানে; মাঠের প্রতিটা ঘাস তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতায় মাথা নত করে রাখবে।

Share via
Copy link