মুখে হাত, জার্মানির ভিন্নধর্মী প্রতিবাদ

কাতার বিশ্বকাপকে বলা হচ্ছে বিধি নিষেধের বিশ্বকাপ। আরব দেশে প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপ আয়োজন। তবে সেই বিশ্বকাপে ইতোমধ্যে আরোপিত হয়েছে অনেক কঠিন বিধিনিষেধ। এ নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা, বিতর্কও কম হয় নি। অনেকেই কাতার বিশ্বকাপকে বয়কটের ডাক দিয়েছেন। আর এত বিধিনিষেধের বেড়াজালে ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থাও বেশ নিশ্চুপ। বরাবরই ফিফা বলে এসেছে, যে দেশে বিশ্বকাপ আয়োজন হবে সেখানকারই সংস্কৃতি ধারণ করতে হবে।

তবে, ফিফার এমন বিবৃতিতে বিপক্ষে ছিল ইংল্যান্ড সহ বহু ইউরোপের দেশ। ইংল্যান্ড ফিফার নির্দেশনার বাইরে গিয়ে বিশেষ এক আর্মব্যান্ড পরে ম্যাচ খেলতে চেয়েছিল। কিন্তু ফিফা আর আয়োজক দেশ কাতারের নিষেধাজ্ঞার খড়গের ভয়ে শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়।

অবশ্য ফিফার এমন নিরব থাকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে নিরব একটা প্রতিবাদই করলো জার্মানি। জাপানের বিপক্ষে আজকের ম্যাচে নামার আগে তারা মুখে হাত দিয়ে ভিন্ন এক প্রতিবাদের আভাস। সেটি যে প্রতিবাদই ছিল তা অবশ্য পরিস্কার করেই জানিয়ে দিয়েছে জার্মান ফুটবল ফেডারেশন।

তারা এক বিবৃতিতে বলে, ‘এটি কোনো রাজনৈতিক বিবৃতি না। মানবাধিকার কোনো আলোচনার বিষয় না। এটা সর্বজনীন হওয়া উচিত। কিন্তু এটা এখনো হয়নি । এই কারণে এই বার্তা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আর্মব্যান্ড পরাতে নিষেধাজ্ঞা মানে বাক স্বাধীনতাও হরণ করা। আমরা আমাদের জায়গা থেকে দাঁড়িয়েছি।’

কাতার বিশ্বকাপকে রক্ষণশীল রাখার জন্য লম্বা একটা তালিকায় করেছিল আয়োজক কমিটি। কাতারের আইন অনুযায়ী ফুটবল বিশ্বকাপ খেলতে আসা দলগুলো ছাড়াও মাঠে এসে খেলা দেখতে আসা দর্শকদের জন্য ও রয়েছে বিধি নিষেধ। ফিফা ওয়েবসাইটে সেটা উল্লেখ করে বলা আছে,  নারী বা পুরুষ উভয়েরই খোলামেলা পোশাক পরা নিষিদ্ধ।

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার সময় কোনো পুরুষ যদি আবেগে শার্ট খুলে ফেলে, তবে তাকে পেতে হবে শাস্তি, গুনতে হবে জরিমানাও। যেকোনো পাবলিক প্লেসে আটসাঁট জামা কাপড় কখনই পরা যাবে না কাতারে। পোশাক এমন হতে হবে যেন কাঁধ এবং হাঁটু অবশ্যই ঢাকা থাকে। এ ছাড়া মাঠেও বিয়ার খাওয়া বা মাদক দ্রব্য গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা আছে।

মূলত এমন কড়া নজরদারির জন্য ইউরোপের বেশ কিছু দেশ নিজেদের অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছে। তবে মাঠে গিয়ে সেই প্রতিবাদের শিকিভাও তাদের কাছ থেকে দেখা যায় নি। তাই বাক স্বাধীনতা কে ইঙ্গিত করে এমন প্রতিবাদ করে বেশ সাহসিকতারই পরিচয় দিয়েছে জার্মান ফুটবল দল।

অবশ্য এর কারণে জার্মানিকে এখন কোনো শাস্তির মুখে পড়তে হয় কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে ফুটবল বিশ্বকাপ শুরুর মাঝে তেমন কিছু হলে ফিফা আর অংশগ্রহনকারী দলগুলোর মধ্যে বিরোধের সুরটাই বরং দীর্ঘায়িত হবে। এমন অরাজকতা নিশ্চয় কোনো পক্ষই চাইবে না।

 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link