মানসপট থেকে হারিয়ে যাওয়া ফুটবল

কখনো কখনো আমরা নিজেদের ভারতের সমান শক্তির দলই মনে করতাম। কিন্তু ১৯৮৪ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত টানা ১৫ বছর আমরা সাফের গেমসের মতো একটা প্রতিযোগিতা থেকে সাফল্য পাইনি। অনেকের মতে, বাংলাদেশের ফুটবলকে শেষ করে দিয়েছে এই টানা ব্যর্থতাই।

১৯৯৩ সালের সাফ গেমসে জাতীয় ফুটবল দলের ব্যর্থতা ছিল অমার্জনীয়। সেবার মালদ্বীপ, নেপালের বাধা পার হতে না পেরে ৬ দলের মধ্যে ষষ্ঠ হয়েছিল ‘তারকাখচিত’ বাংলাদেশ ফুটবল দল। আজ থেকে ২৭ বছর আগে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে ভারতের পরই সবচেয়ে শক্তিধর দল হিসেবে মনে করা হতো বাংলাদেশকে।

কখনো কখনো আমরা নিজেদের ভারতের সমান শক্তির দলই মনে করতাম। কিন্তু ১৯৮৪ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত টানা ১৫ বছর আমরা সাফের গেমসের মতো একটা প্রতিযোগিতা থেকে সাফল্য পাইনি। অনেকের মতে, বাংলাদেশের ফুটবলকে শেষ করে দিয়েছে এই টানা ব্যর্থতাই।

এই ব্যর্থতাই আমাদের আরও বড় স্বপ্ন দেখতে দেয়নি। সামনের দিকে তাকাতে দেয়নি। পরবর্তী সময়ে দুইবার সাফ গেমস ফুটবলে সোনার পদক জিতলেও ততদিনে যা সর্বনাশ হওয়ার হয়ে গেছে।

১৯৯৩ সালে ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত সাফে বিদেশি কোচ ছিল। দলের প্রতিটি পজিশনে ছিল তারকা ফুটবলার। জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা ছিল অতীতে যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো। প্রস্তুতির যথেষ্ট সময়ও পেয়েছিল দল। কিন্তু মূল আসরে বাংলাদেশ এমন হতাশাজনক খেলা খেলল যে গোটা দেশ শোকগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল।

প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করার পর (ওই বছর মালদ্বীপের চ্যাম্পিয়ন ক্লাব মোহামেডানের কাছে ৮–০ গোলে হেরেছিল) দ্বিতীয় ম্যাচে নেপালের কাছে ১–০ গোলে হেরে যায় বাংলাদেশ। আমার এখনো মনে আছে নেপালের কাছে হারের পর সেই সন্ধ্যাটার কথা। পরদিন সব জাতীয় দৈনিকে জাতীয় দলের ব্যর্থতার খবর প্রথম পেজে ছাপা হয়েছিল।

সে সময়ের জনপ্রিয় দৈনিক ভোরের কাগজ প্রথম পৃষ্ঠায় এই কার্টুনটি ছেপেছিল। শিশির ভট্টাচার্যের সেই কার্টুনে ফুটে উঠেছে জাতীয় দলের প্রতি মানুষের হতাশা আর ক্ষোভের বিষয়টি। ব্যাপারটি এমন দাঁড়িয়েছিল যে সে সময় মানুষ জাতীয় ফুটবল দলের কথা শুনলেই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠত। হুমায়ূন আহমেদও তাঁর একটি লেখায় নেপালের বিপক্ষে হারের সেই কষ্ট, বেদনার কথা বলেছিলেন।

১৯৯৩ সাফই আসলে ছিল ক্রান্তিকাল। এরপর ফুটবল মানুষের মানসপট থেকে হারিয়ে গেছে ধীরে ধীরে।

– ফেসবুক থেকে

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...