বিশ্বকাপ ও আইপিএল: আইসিসির সিদ্ধান্তহীনতা, নাছোড়বান্দা ভারত!

আইসিসি সময় নিচ্ছে। আইসিসি সময় নেওয়ায় বিসিসিআইও আইপিএল নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। আইপিএল না হলে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হবে বিসিসিআইয়ের। আর এজন্যই সৌরভ গাঙ্গুলির কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।

ভারতীয় ক্রিকেট তো বটেই, ভারতের অর্থনীতিও নির্ভরশীল ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ওপর। তাই, এবছর যে করেই হোক আইপিএল আয়োজন করতে বদ্ধপরিকর বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)। প্রয়োজনে দর্শকশূণ্য গ্যালারিতে এই ফ্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি আসর আয়োজন করতে কোনো আপত্তি নেই বোর্ড সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির।

বৃহস্পতিবার সমস্ত রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাগুলোর কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন গাঙ্গুলী। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘এ বছরই আইপিএল আয়োজন করার জন্য আমরা সব রকম চেষ্টা করছি। দর্শকশূন্য মাঠেও যদি খেলা আয়োজন করতে হয়, সেটাও করা হবে। আইপিএল-এর দিকে তাকিয়ে রয়েছে- ক্রিকেটপ্রেমী, ফ্র্যাঞ্চাইজি, খেলোয়াড়সহ অন্যান্যরা। বিসিসিআই এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিবে।’

ভারত ছাড়া, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ক্রিকেটাররাও আইপিএল খেলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আইপিএল খেলার জন্য খেলোয়াড়রা মুখিয়ে আছেন বলে জানান গাঙ্গুলি। তিনি লিখেন, ‘শুধু ভারত নয়, বাইরের দেশের অনেকে খেলোয়াড় আইপিএলের ব্যাপারে নিজেদের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আইপিএল খেলতে চায় তারা। আমরাও আশাবাদী। বিসিসিআই খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।’

কিন্তু আইপিএলের ভাগ্য ঝুলে আছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ওপর। এখনও টি-২০ বিশ্বকাপ নিয়ে কোন সিদ্বান্ত নিতে পারেনি আইসিসি। করোনা পরিস্থিতি আরও পর্যবেক্ষণ করে আগামী মাসে অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আইসিসি থেকে জানানো হয়।

আইসিসি প্রধান নির্বাহী মানু সাহানি বলেন, ‘মহামারীর কারণে বিশ্বব্যাপী পরিস্থিতি খুব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। এ অবস্থায় কোনো তাড়াহুড়ো করা উচিত হবে না। সব দিক বিবেচনা করে, পুরোপুরি নিশ্চিত হয়েই সিদ্বান্ত নিতে হবে। এই ইভেন্টের সাথে জড়িত সকলের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয় সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’

সকলের সাথে আলাপ-আলোচনা করেই বিশ্বকাপ আয়োজনের পরিকল্পনা করবে বলে জানান সাহানি, ‘সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য আমাদের কাছে শুধু একটাই সুযোগ। সিদ্বান্ত নিলে, তা বুঝেশুনেই নিতে হবে। আমাদের সদস্য দেশ, ব্রডকাস্টার, পার্টনার, সব দেশের সরকার এবং খেলোয়াড়দের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবো। সবার মতামতের ওপর ভিত্তি করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া যায়।’

আগামী ১৮ অক্টোবর থেকে বিশ্বকাপ শুরু হবার কথা রয়েছে। করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে ১৬ দলকে নিয়ে নিজেদের দেশে বিশ্বকাপ করতে অস্ট্রেলিয়াও আগ্রহী নয়।

আইসিসি সময় নিচ্ছে। আইসিসি সময় নেওয়ায় বিসিসিআইও আইপিএল নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। আইপিএল না হলে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হবে বিসিসিআইয়ের। আর এজন্যই সৌরভ গাঙ্গুলির কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।

শুধু আইপিএল নয়, দেশের ঘরোয়া ক্রিকেট শুরুর কথাও ভাবছে বিসিসিআই। গাঙ্গুলি লিখেন, ‘দেশের সব প্রাদেশিক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের জন্য আমরা যথাযথ কোভিড-১৯ অপারেশন পদ্ধতি তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছি। যাতে করে একযোগে সারাদেশে ক্রিকেট ফেরানো যায়। যেকোন সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সংশ্লিষ্ট সকলের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথাই ভাবতে হবে আমাদের।’

গত, ২৯ মার্চ থেকে আইপিএল শুরুর কথা ছিলো। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারনে গেল মার্চ থেকে বিশ্ব ক্রিকেট বোতলবন্দি। ভারতে কয়েকদফা লকডাউন দেওয়ার হলে আদৌ মাঠে গড়ায়নি আইপিএল। বিশ্বকাপ আয়োজিত না হলে, সেই ফাঁকা সময়টাতেও আইপিএল আয়োজনের ভাবনা আছে ভারতের।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...