সেরা অলরাউন্ডারদের সেরা একাদশ

ক্রিকেটে সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার কে? - এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুব কঠিন। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে যদি প্রশ্নটি করা হয় তবে তো এর উত্তর আরো জটিল থেকে জটিলতর হয়। স্যার গ্যারি সোবার্স, ইয়াম বোথাম, কপিল দেব, ইমরান খান দের দিয়ে যে যাত্রা শুরু হয় সেখানে পরবর্তীকালে যোগ হয়েছে জ্যাক ক্যালিস বা ভেট্টরিদের মত নাম। কিংবা বর্তমান সময়ের বেন স্টোকস বা সাকিব আল হাসানদেরই বা বাদ দেয়া যায় কি করে।

ক্রিকেটে সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার কে? – এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুব কঠিন।

তিন ফরম্যাট মিলিয়ে যদি প্রশ্নটি করা হয় তবে তো এর উত্তর আরো জটিল থেকে জটিলতর হয়। স্যার গ্যারি সোবার্স, ইয়াম বোথাম, কপিল দেব, ইমরান খান দের দিয়ে যে যাত্রা শুরু হয় সেখানে পরবর্তীকালে যোগ হয়েছে জ্যাক ক্যালিস বা ভেট্টরিদের মত নাম।

কিংবা বর্তমান সময়ের বেন স্টোকস বা সাকিব আল হাসানদেরই বা বাদ দেয়া যায় কি করে। ফলে এই সেরা অলরাউন্ডারদের একাদশ তৈরি করা আরো দু:সাহসিক হয়ে উঠে। আবার তিন ফরম্যাটের পারফর্মেন্স ও টিম কম্বিনেশনের জন্যও বাদ পড়েন অনেক গ্রেট কিকেটাররা। তবুও সব বাঁধা পেড়িয়ে খেলা-৭১ নিয়ে এসেছে সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের একাদশ।

  • তিলকারত্নে দিলশান (শ্রীলঙ্কা): উইকেটরক্ষক

শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান তিলকারত্নে দিলশান। এই উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান ৮৭ টেস্টে ৪০.৯৮ গড়ে করেন ৫৪৯২ রান। ওয়ানডে ক্রিকেটেও ১০ হাজারের বেশি রানের মালিক এই ব্যাটসম্যান। তাই আমাদের একাদশের হয়ে ওপেন করবেন শ্রীলঙ্কার এই ব্যাটিং গ্রেট।

তাঁর আক্রমনাত্মক ব্যাটিং ও এই একাদশে ওপেন করার ক্ষেত্রে এগিয়ে রেখেছে। তবে এই একাদশে জায়গা পাওয়ার জন্য বিবেচনায় আনা হয়েছে তাঁর বোলিং দক্ষতাও। সবমিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫৪ উইকেটের মালিক এই অলরাউন্ডার।

  • জ্যাক ক্যালিস (দক্ষিণ আফ্রিকা)

আমাদের আরেক ওপেনার দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার জ্যাক ক্যালিস। সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারদের সংক্ষিপ্ত তালিকায়ও থাকবেন ক্রিকেটার। ব্যাট, বল দুটোতেই দলের হয়ে ওপেন করতে পারেন তিনি। টেস্ট ও ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই ১০ হাজারের বেশি রানের মালিক ক্যালিস। এছাড়া বল হাতেও টেস্ট ও ওয়ানডে তে যথাক্রমে ২৯২ ও ২৭৩ উইকেটের মালিক তিনি।

  • গ্যারি সোবার্স (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

টেস্ট ক্রিকেটে সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার বলা হয় স্যার গ্যারি সোবার্সকে। বিশেষ করে ব্যাট হাতে তিনি নিজেকে নিয়ে গিয়েছিলেন অনন্য উচ্চতায়। ৯৩ টেস্টে ৫৭.৭৮ গড়ে করেছিলেন ৮০৩২ রান। টেস্টে ২৬ টি সেঞ্চুরি ও ৩০ টি আফ সেঞ্চুরি আছে এই ক্রিকেটারের। এছাড়া টেস্টে বল হাতেও ২৩৫ টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। তিনি আমাদের একদশে নামছেন তিন নম্বর পজিশনে।

  • সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ)

গত এক দশক ধরে বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার বাংলাদেশের এই ক্রিকেটার। সবমিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় ১২ হাজার রানের মালিক সাকিব। এছাড়া বাহাতি এই স্পিনার বল হাতেও যথেষ্ট কার্যকর। টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে যথাক্রমে নিয়েছে ২১০ ও ২৬৯ উইকেট। এছাড়াও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও তাঁর আছে ৯২ উইকেট।

  • বেন স্টোকস (ইংল্যান্ড)

এই সময়ের আরেক সেরা অলরাউন্ডার ইংল্যান্ডের এই ক্রিকেটার। এই পেস বোলিং অলরাউন্ডারও নিজেকে নিয়ে গিয়েছেন সেরাদের কাতারে। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে যথাক্রমে করেছেন ৪৬৩১ ও ২৮১৭ রান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও যথেষ্ট কার্যকরী এই অলরাউন্ডার। এছাড়া ডান হাতি এই পেস বোলার নিয়েছেন ১৬৩ টেস্ট ও ৭৪ ওয়ানডে উইকেট।

  • ইয়ান বোথাম (ইংল্যান্ড)

বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার হিসেবেও উচ্চারিত হয় স্যার ইয়ান বোথামের নাম। ব্যাট হাতে টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর নামের পাশে আছে ৫২০০ রান। এছাড়া ওয়ানডে ক্রিকেটেও করেছেন ২১১৩ রান। এই পেস বোলার বল হাতেও টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে যথাক্রমে নিয়েছেন ৩৮৩ ও ১৪৫ উইকেট।

  • কপিল দেব (সহ-অধিনায়ক)

ভারতের সর্বকালের সেরা পেস বোলিং অলরাউন্ডার কপিল দেব। ভারতকে ওয়ানডে বিশ্বকাপও এনে দিয়েছিলেন সাবেক এই অধিনায়ক। ব্যাট হাতে টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে যথাক্রমে ৫২৪৮ ও ৩৯৮৩ রানের মালিক এই কিংবদন্তি। বল হাতে আরো ধারালো ছিলেন এই পেসার। টেস্টে তাঁর ঝুলিতে আছে ৪৩৪ উইকেট। এছাড়া ওয়ানডে ক্রিকেটেও ২৫৩ উইকেটের মালিক তিনি।

  • ইমরান খান (অধিনায়ক)

আমাদের একাদশের অধিনায়ক পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক ইমরান খান। পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশটির সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারদের একজন। টেস্ট ও ওয়ানডে মিলিয়ে প্রায় ৮ হাজার রানের মালিক এই অলরাউন্ডার। ওদিকে বল হাতেও এই পেস বোলার ছিলেন অনন্য। টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে যথাক্রমে ৩৬২ ও ১৮২ উইকেটের মালিক তিনি। এছাড়া তাঁর অনন্য নেতৃত্ব গুন বিবেচনায় রেখেই আমাদের একাদশের অধিনায়ক এই গ্রেট।

  • রবীন্দ্র জাদেজা (ভারত)

এই সময়ে ভারতের ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং তিন ডিপার্টমেন্টেই দিন দিন নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন এই ক্রিকেটার। এছাড়া সকল ফরম্যাটেই তিনি অত্যন্ত কার্যকর ক্রিকেটার। বাঁহাতি এই স্পিনার টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে বল হাতে যথাক্রমে নিয়েছেন ২২০ ও ১৮৮ উইকেট।

  • রিচার্ড হ্যাডলি (নিউজিল্যান্ড)

নিউজিল্যান্ডকে টেস্ট ক্রিকেটে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন এই অলরাউন্ডার। বিশ্বের প্রথম পেস বোলার হিসেবে ৪০০ উইকেট নেন রিচার্ড হ্যাডলি। সবমিলিয়ে ৮৬ টেস্টে ২২.২৯ গড়ে নিয়েছেন ৪৩১ উইকেট। এছাড়া ব্যাট হাতেও ৩১২৪ রানের মালিক তিনি।

  • ড্যানিয়েল ভেট্টরি (নিউজিল্যান্ড)

নিউজিল্যান্ডের এই অলরাউন্ডার বিশ্বক্রিকেটেরও সেরাদের একজন। নিখুঁত বাঁ-হাতি স্পিন বোলিং দিয়ে নিজেকে নিয়ে গিয়েছিলেন অনন্য উচ্চতায়। ১১৩ টেস্টে তাঁর ঝুলিতে আছে ৩৬২ উইকেট। এছাড়া ব্যাট হাতেও ৩০ গড়ে ৪৫৩১ রানের মালিক তিনি।

  • দ্বাদশ ব্যক্তি: শহীদ আফ্রিদি (পাকিস্তান)

পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ক্রিকেটার আফ্রিদি। স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবেও তিনি পাকিস্তানের সেরা। মারকাটারি ব্যাটিং ও কার্যকর বোলিং দিয়ে নিজেকে নিয়ে গিয়েছেন সেরাদের কাতারে। ওয়ানডে ক্রিকেটে তাঁর ঝুলিতে আছে ৮ হাজারের বেশি রান। এছাড়া বল হাতেও ওয়ানডে ক্রিকেটে নিয়েছেন ৩৯৫ উইকেট।

এখানে একটু না বললেই নয় যে – একাদশ নির্বাচনের ক্ষেত্রে খেলা ৭১ আরো কয়েকজন শীর্ষ স্থানীয় অলরাউন্ডারের কথা মাথায় রেখেছে। এর মধ্যে ভারত থেকে ভিনু মানকড়, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, হার্দিক পান্ডিয়া ছিলেন, পাকিস্তান থেকে ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক, আজহার মেহমুদ কিংবা ওয়াসিম আকরামরা। আবার নিউজিল্যান্ডের জ্যাকব ওরাম, ক্রিস কেয়ার্নস বা ইংল্যান্ডের অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ, মঈন আলী, অথবা ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইরেন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেল, জেসন হোল্ডাররা ছিলেন। কিন্তু টিম কম্বিনেশনের স্বার্থে তাঁরা বাদ পড়েছেন। আসলে, পুরো একটা স্কোয়াড করলেও সবাইকে জায়গা দেওয়া সম্ভব নয়।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...