মিশন সোহান ২.০

দায়িত্বটা খুব বেশি দিনের জন্য ছিল না। কেবল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিনটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। এরমধ্যে আবার শেষ ম্যাচটা খেলতে পারেননি ইনজুরির কারনে। আঙুলে চোটটা তিনি দ্বিতীয় ম্যাচ চলাকালীনই পেয়েছিলেন। তবুও বাকিটা সময় কিপিং করে গিয়েছেন। এমনকি হাতের গ্লাভসটাও খোলেননি। কেননা সোহান বুঝতে পারছিলেন আঘাতটা গুরুতর। আর গ্লাভস খুলে আঙুলের সেই বেহাল দশাটা তিনি দেখতে চাচ্ছিলেন না। নিজের কাজ শেষ করে আসাটাই তাঁর কাছে মূখ্য হয়ে উঠেছিল।

সোহানের ব্যাটিংটা এখন বাংলাদেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। সেজন্যই নুরুল হাসান সোহান ও কোচ মিজানুর রহমান বাবুলকে প্রায়ই একসাথে কাজ করতে দেখা যায়। যেমন প্রায় দিনই মিরপুরে নুরুল হাসান সোহানকে ব্যাটিংটা দেখিয়ে দিচ্ছেন এই কোচ।

একটু পেছনে তাকানো যাক। সোহানের পায়ের তলায় তখন মাটিটা খুব বেশি শক্ত হয়েছে এমন বলা যাবে না। মাত্র আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে মেলে ধরতে শুরু করেছেন। নানা সমালোচনাকে পাশ কাটিয়ে আস্তে আস্তে নিজের একটা জায়গা করে নিচ্ছেন। এমন সময়ই হঠাৎ বলা হতো তিনি নাকি হবেন দেশের নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। নুরুল হাসান সোহানও পিছপা হলেন না, সাহস দেখালেন।

দায়িত্বটা খুব বেশিদিনের জন্য ছিল না। কেবল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিনটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। এরমধ্যে আবার শেষ ম্যাচটা খেলতে পারেননি ইনজুরির কারনে। আঙুলে চোটটা তিনি দ্বিতীয় ম্যাচ চলাকালীনই পেয়েছিলেন। তবুও বাকিটা সময় কিপিং করে গিয়েছেন। এমনকি হাতের গ্লাভসটাও খোলেননি। কেননা সোহান বুঝতে পারছিলেন আঘাতটা গুরুতর। আর গ্লাভস খুলে আঙুলের সেই বেহাল দশাটা তিনি দেখতে চাচ্ছিলেন না। নিজের কাজ শেষ করে আসাটাই তাঁর কাছে মূখ্য হয়ে উঠেছিল।

নুরুল হাসান সোহানের সবচেয়ে বড় শক্তিটা আসলে তাঁর এই সাহসই। ব্যাট হাতে তিনি যে খুব নিখুঁত এমন বলা যাবে না। তবে বলটাকে পেটাতে জানেন। বাইশ গজে বুকে সাহস নিয়ে লড়াই করতে জানেন। খুব বেশি প্রতিভাবান না বলে তাঁকে নিয়ে তেমন আলোচনাও হয়না। বরং সোহানরা কোনদিন না পারলে তাঁদের নিয়ে সমালোচনাটাই বেশি হয়।

চোখের শান্তি দিতে না পারলেও নুরুল হাসান সোহান হতে পারেন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের সবচেয়ে কার্যকর ক্রিকেটার। শেষ দিকে ব্যাট হাতে নেমে কেউ যদি দ্রুত রান করে দিতে পারেন সেটা সোহানই। আর সোহানের এই কার্যকারিতাটাই ব্যবহার করতে চায় বাংলাদেশ। সেজন্যই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তাঁকে নিয়ে আলাদাভাবে পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ।

এই যেমন এশিয়া কাপেই তিনি না থাকার অভাবটা বোধ করেছে বাংলাদেশ। ব্যাটিং এর পাশাপাশি উইকেটের পেছনে তাঁর সার্ভিসটাও যে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। ওদিকে নতুন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও পরামর্শক শ্রীধরন শ্রীরাম একটা নতুন ধারার টি-টোয়েন্টি দল গঠন করতে চাচ্ছেন। আর সেই দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হতে পারেন সোহান। সেভাবেই পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ দল।

সেজন্যই সোহানের ইনজুরি থেকে দ্রুত সেরে ওঠাটা ভীষণ গুরত্বপূর্ণ। সবাই যখন এশিয়া কাপ নিয়ে ব্যস্ত তখন নিজের ফিটনেস নিয়ে কাজ করে যাচ্ছিলেন সোহান। তবে আঙুলটা পুরোপুরি ঠিক হয়নি বলে ব্যাট ধরা হচ্ছিল না তাঁর। তবে আজ আবার অনেকদিন পর ব্যাটটা হাতে নিলেন তিনি।

আর নতুন করে ফিরে আসার এই লড়াইয়ে আবারও ফিরে গিয়েছেন পুরনো গুরুর কাছেই। সোহানের এতদূর আসার পেছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান যে মানুষটার তিনি হলেন মিজানুর রহমান বাবুল। এই কোচ শুরু থেকেই সোহানকে নিয়ে কাজ করে আসছেন। ব্যাটিং নিয়ে কোন সমস্যা হলেই সোহানের জন্য সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দের জায়গা এই কোচ।

সোহানের ব্যাটিং নিয়ে তখন বেশ ভুগছিলেন। সেই সময় আলাদা করে প্রচুর কাজ করেছেন এই কোচের সাথে। এখন ঘরোয়া ক্রিকেটের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও রানের দেখা পাচ্ছেন সোহান। ব্যাটসম্যান সোহানের এমন রূপান্তরের নৈপথ্যে আছেন কোচ মিজানুর রহমান বাবুল। নিজের ব্যাটিংটাকে উন্নত করার জন্য সোহান সবচেয়ে বেশি ভরসা করেন এই কোচের উপরেই।

সেজন্যই ইনজুরি কাটিয়ে আবার ফিরে আসার সময়টাতেও বাবুলের সাথে আলাদাভাবে কাজ করতে শুরু করেছেন সোহান। আজও নিজের ব্যাটিংটা একটু ঝালিয়ে নিচ্ছিলেন এই কোচের সাথে। বাংলাদেশের ক্রিকেটও সোহানের ফিরে আসার অপেক্ষায়। অন্তত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যে তাঁকে চাই-ই চাই।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...