পল-টাইসন, বিশ্ব কাঁপানো এক ‘পাবলিসিটি স্টান্ট’

জেইক পল আট রাউন্ডের হেভিওয়েট লড়াইয়ে মাইক টাইসনকে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পরাজিত করেছেন। টাইসন, যিনি ৫০-৭ (৪৪ নকআউট) ক্যারিয়ার রেকর্ড নিয়ে অবসর নিয়েছেন। ১৯৮৬ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন।

জেইক পল আট রাউন্ডের হেভিওয়েট লড়াইয়ে মাইক টাইসনকে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পরাজিত করেছেন। অবশ্য, বিশ্ব কাঁপিয়ে দেওয়া এই লড়াই আদতে লড়াই ছিল, নাকি স্রেফ একটা পাবলিসিটি স্টান্ট – সেই নিয়ে প্রশ্ন তোলাই যেতে পারে। অবশ্য, জয়-পরাজয় ছাপিয়ে বিরাট অংকের ব্যবসাই হয়েছে এই দ্বৈরথে।

টাইসন এই লড়াইয়ে অংশ নেওয়ার জন্য ২ কোটি ডলার পেয়েছেন। এর আগে গত আগস্টে পল জানিয়েছিলেন তিনি এই লড়াই থেকে আয় করবেন ৪ কোটি ডলার। স্রেফ নেটফ্লিক্সেই দু’জনের এই লড়াই দেখা হয়েছে ৬০ মিলিয়ন বার। এটা খোদ নেটফ্লিক্সের ইতিহাসেরই বিরাট এক রেকর্ড। ফলে, স্রেফ ব্যবসার বসতির জন্যই এই আয়োজন কি না – এমন বলার লোকের অভাব নেই।

মাইক টাইসন – তাঁকে কে না চেনে! মোহাম্মদ আলীর পর সবচেয়ে সেলিব্রেটেড বক্সার। ৪৪ টা নকট আউট জয়ের রেকর্ড নিয়ে তিনি অবসরে চলে যান। ১৯৮৬ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন। এক বছর পর তিনি তিনটি প্রধান বেল্ট একত্রিত করে নিরঙ্কুশ চ্যাম্পিয়ন হন। তবে, ১৯৯০ সালে জেমস ‘বাস্টার’ ডগলাসের কাছে দশম রাউন্ডে নকআউট হয়ে তার রাজত্ব শেষ হয়।

যেখানে আশির দশকে টাইসন বক্সিং রিংয়ে তার রাজত্ব দেখাচ্ছে। তখনও পল জন্মগ্রহণই করেননি। জেইক পল ১৯৯৭ সালে, ক্লেভল্যান্ড, ওহাইওতে জন্মগ্রহণ করেন। তার টাইসনের সাথে ১৯৯৯ সালের খুব জনপ্রিয় একটি ছবি রয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে টাইসন ছোট্ট জেইকের সাথে খুনসুটি করছে। অবশ্য, ছবিটার সত্য মিথ্যা যাচাইয়ের জন্য অন্তরজালে পর্যাপ্ত তথ্য নেই।

ঠিক ২৫ বছর পর আবারও তাদের দু’জনার দেখা। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। তারা মুখোমুখি হলেন বক্সিং রিংয়ে। শুক্রবার রাতে এই ম্যাচটি টেক্সাসের আর্লিংটনের এটিঅ্যান্ডটি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।

তিনজন বিচারকই পলের পক্ষে রায় দেন, স্কোর ছিল ৮০-৭২, ৭৯-৭৩ এবং ৭৯-৭৩। টেক্সাস ডিপার্টমেন্ট অব লাইসেন্সিং অ্যান্ড রেগুলেশনের অধীনে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হলেও কিছু বিশেষ নিয়ম প্রয়োগ করা হয়। রাউন্ডগুলো ছিল দুই মিনিট করে। ১৪ আউন্স ওজনের গ্লাভস ব্যবহার করা হয়। যেখানে সাধারণত হেভিওয়েট লড়াইয়ে ১০ আউন্স গ্লাভস ব্যবহৃত হয়।

ম্যাচটি মূলত ২০ জুলাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, ৫৮ বছর বয়সী মাইক টাইসন, মে মাসে একটি ফ্লাইট চলাকালীন আলসারজনিত সমস্যার কারণে চিকিৎসাধীন হন। ফলে তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হয়। আর যখন হল – তখন যেন পুরোই বক্সিং বিশ্বের হিসাব-নিকাশ পাল্টে গেল।

পলের ব্যাপারে না বললেই নয়। পলের উত্থানও খুবই মুখরোচক গল্প। তিনি ছিলেন ইউটিউবার, বনে গেছেন বক্সার। টাইসনকে হারিয়ে তিনি নক আউটে জয়ে নিজের জয় সাতে উন্নীত করেছেন। ২০২০ সালে বক্সিংয়ে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি।

তিনি মূলত সাবেক এমএমএ ফাইটারদের বিরুদ্ধে লড়াই করে ছয়টি টানা জয় পান। তার একমাত্র পরাজয় হয়েছিল ফেব্রুয়ারি ২০২৩-এ টমি ফিউরির বিপক্ষে। তবে সেই হারের পর, টানা পাঁচটি ম্যাচ জিতে টাইসনের বিরুদ্ধে বক্সিং রিংয়ে নামেন। বাকিটা তো ইতিহাস!

 

Share via
Copy link