দূর্ধর্ষ সব স্পেলের দৌরাত্ম্য

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট মানেই ব্যাটারদের রাজত্ব। ব্যাটারদের দাপটের সামনে বোলারদের খুব একটা পাত্তা মিলে না বললেই চলে। আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র‍্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট হল ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। আইপিএল মানে বিশ্বসেরা ক্রিকেটারদের মিলনমেলা। ব্যাটারদের রাজত্বটা এখানেও বেশি। কিন্তু এর মাঝেই বেশ কিছু বোলার নিজের প্রতিভা আর সামর্থ্য দেখিয়ে দুর্দান্ত স্পেলে ম্যাচের মোড় পালটে দিচ্ছেন।

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট মানেই ব্যাটারদের রাজত্ব। ব্যাটারদের দাপটের সামনে বোলারদের খুব একটা পাত্তা মিলে না বললেই চলে। আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র‍্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট হল ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। আইপিএল মানে বিশ্বসেরা ক্রিকেটারদের মিলনমেলা। ব্যাটারদের রাজত্বটা এখানেও বেশি। কিন্তু এর মাঝেই বেশ কিছু বোলার নিজের প্রতিভা আর সামর্থ্য দেখিয়ে দুর্দান্ত স্পেলে ম্যাচের মোড় পালটে দিচ্ছেন।

আইপিএলের পঞ্চদশ আসরে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকজন বোলারকেই দেখে গেছে দুর্দান্ত কিছু স্পেল উপহার দিতে। তাঁদের বোলিং নৈপুণ্যে ম্যাচের মোড় পালটে জয়ের দেখাও পেয়েছে দল। এবারের বল হাতে অসাধারণ স্পেলে দলের জয়ে প্রভাব ফেলেছেন এমন কিছু বোলিং ফিগার নিয়ে আলোচনা করা যাক।

  • যুজবেন্দ্র চাহাল (৫/৪০ প্রতিপক্ষ কলকাতা নাইট রাইডার্স)

এবারের আইপিএলে বল হাতে উড়ন্ত ফর্মে আছে স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল। গেল আসরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা না পাওয়ার পর থেকেই বল হাতে বিধ্বংসী রূপে প্রত্যাবর্তন করেছেন চাহাল। রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে এবারের আসরে এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী তিনি।

কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে এক ম্যাচে শিকার করেছেন পাঁচ উইকেট। তাও আবার হ্যাটট্রিক সহ পাঁচ উইকেট নেন তিনি। শেষ ৪ ওভারে কলকাতার জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৪০ রানের, হাতে ৬ উইকেট। এমন এক ম্যাচে এক ওভারেই মোড় পালটে দেন চাহাল। ১৭তম ওভারে হ্যাটট্রিক সহ শিকার করেন পাঁচ উইকেট। আইপিএল ইতিহাসের ২১ ও এবারের আসরে প্রথম হ্যাটট্রিক করেন এই লেগ স্পিনার।

  • কুলদ্বীপ যাদব (৪/৩৫ প্রতিপক্ষ কলকাতা নাইট রাইডার্স)

বছর দুয়েক ধরেই জাতীয় দলের অনিয়মিত মুখ কুলদ্বীপ যাদব। খারাপ পারফরম্যান্স আর ফিটনেসে ঘাটতির কারণে প্রায়ই ছিলেন দলের বাইরে। নিজেকে প্রমাণের জন্য দিতে হত সেরাটা। আর সেজন্য প্রত্যাবর্তনের মঞ্চ হিসেবে বেছে নিয়েছেন আইপিএলকেই। চাহালের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হিসেবে আছেন এই চায়নাম্যান।

কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক স্পেলে ৪ উইকেট শিকার করেন কুলদ্বীপ। এটিই এখন অবধি এবারের আসরে তাঁর সেরা পারফরম্যান্স। কুলদ্বীপের ৩৫ রানে ৪ উইকেট শিকারে কলকাতার বিপক্ষে ৪৪ রানে জয় পায় দিল্লি। দিল্লির দেওয়া ২১৬ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে খলিল আহমেদের ৩ উইকেট ও কুলদ্বীপের ৪ উইকেট শিকারে ১৭১ রানে থামে কলকাতার ইনিংস।

  • উমেশ যাদব (৪/২৩ প্রতিপক্ষ পাঞ্জাব কিংস)

চলতি আসরে বল হাতে অসাধারণ দাপট দেখাচ্ছেন পেসার উমেশ যাদব। রান খরুচে হিসেবে দুর্নাম থাকলেও এবার খানিকটা ভিন্ন চিত্রই দেখা গেছে উমেশের বলে। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় শুরুর দিকেই আছেন তিনি। পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে যাদবের অনবদ্য স্পেলে দুর্দান্ত এক জয় পায় কলকাতা।

টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে উমেশের বোলিং তোপে মাত্র ১৩৭ রানেই গুড়িয়ে যায় পাঞ্জাবের ইনিংস। ৪ ওভারে ১ মেইডেন দিয়ে ২৩ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট শিকার করেন উমেশ। সহজ লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে ৬ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় কলকাতা। দুর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন উমেশ যাদব।

  • আবেশ খান (৪/২৪ প্রতিপক্ষ সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ)

গেল আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী। এর মধ্যেই খুঁজে পেয়ে গেছেন জাতীয় দলের দরজা। এবারের আসরেও বল হাতে উইকেটের দেখা পাচ্ছেন নিয়মিতই। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ব্যক্তিগত সেরা স্পেল করেছেন এবারের আসরে।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক লোকেশ রাহুল ও দীপক হুডার ফিফটিতে ৭ উইকেটে ১৬৯ রান সংগ্রহ করে আবেশের লখনৌ সুপার জায়ান্টস। লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে আবেশ ও জেসন হোল্ডারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১৫৭ রানের বেশি করতে পারেনি হায়দ্রাবাদ। আবেশের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১২ রানের জয় তুলে নেয় লখনৌ। ৪ ওভারে ২৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন আবেশ।

  • ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (৪/২০ প্রতিপক্ষ কলকাতা নাইট রাইডার্স)

১০ কোটি রুপিতে মোটা অঙ্কে এবারের আইপিএলে লঙ্কান অলরাউন্ডার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে দলে ভেড়ায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের চতুর্থ সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি এই লঙ্কান তারকা অলরাউন্ডার।

কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে হাসারাঙ্গার ম্যাজিকাল স্পেলে দাপুটে জয় পায় ব্যাঙ্গালুরু। হাসারাঙ্গার বোলিং নৈপুণ্যে মুখ থুবড়ে পড়ে কলকাতার ব্যাটিং শিবির। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১২৮ রানেই গুড়িয়ে যায় কলকাতা। ৪ ওভারে মাত্র ২০ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট নেন হাসারাঙ্গা। শ্রেয়াস আইয়ার, সুনীল নারাইন, শেলডন জ্যাকসনের মত গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেন এই স্পিনার। হাসারাঙ্গার অনবদ্য বোলিংয়ের পরেও ৪ বল বাকি থাকতে ৩ উইকেটের কষ্টার্জিত জয় পায় ব্যাঙ্গালুরু।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...