মুশফিকের কাছে মাহমুদউল্লাহর হার

দুই জনের অপরাজিত হাফ সেঞ্চুরির কাছে বৃথা গেছে সৌম্য সরকারের ৬৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংসটি।। আগের ম্যাচেও হাফ সেঞ্চুরির করেছিলেন এই ওপেনার। দলের পরাজয়ের দিনে ব্যাট হাতে ব্যর্থ ছিলেন জাতীয় দলের দুই অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুমিনুল হক।

ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের পঞ্চম রাউন্ডে এসে মুখোমুখি হয়েছিল তারকা সমৃদ্ধ শিরোপা প্রত্যাশী দুই দল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ও আবাহনী লিমিটেড। জাতীয় দলের সিনিয়র দুই ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দুই দলের নেতৃত্বে থাকায় জমজমাট এক লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত ছিল মঞ্চ।

কিন্তু মাঠের ক্রিকেটে দেখা যায়নি সেই উত্তাপ। আবাহনীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারেনি গাজী গ্রুপ। মুশফিকুর রহিম ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের হাফ সেঞ্চুরিতে ৭ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে আবাহনী। এই জয়ের ফলে পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বরে উঠে এসেছে আবাহনী।

দুই জনের অপরাজিত হাফ সেঞ্চুরির কাছে বৃথা গেছে সৌম্য সরকারের ৬৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংসটি।। আগের ম্যাচেও হাফসেঞ্চুরির করেছিলেন এই ওপেনার। দলের পরাজয়ের দিনে ব্যাট হাতে ব্যর্থ ছিলেন জাতীয় দলের দুই অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুমিনুল হক।

তবে ১৫১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়েছিল না আবাহনীর। দলীয় ২২ রানে মেহেদী হাসানের প্রথম শিকার হয়ে ১০ রান করে নাঈম শেখ ফিরে যাওয়ার পর ৫ রান করে আউট হয়ে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর নাসুম আহমেদ ২৮ রান করা মুনিম শাহরিয়ারকে ফিরিয়ে দিলে ৪৮ রানে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে আবাহনী।

কিন্তু এরপর আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি আবাহনীকে। চতুর্থ উইকেটে ১০৫ রান যোগ করে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন মুশফিকুর রহিম ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ৩৫ বলে ৫৩ রান করে মুশফিক ও ২৮ বলে ৫০ রান করে মোসাদ্দেক অপরাজিত থাকেন। গাজী গ্রুপের পক্ষে একটি করে উইকেট শিকার করেন মেহেদী হাসান ও নাসুম আহমেদ।

এর আগে টেসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামা গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন দুই ওপেনার মেহেদী হাসান ও সৌম্য সরকার। উদ্বোধনী জুটিতে ৯ ওভারে দুজন তুলে ফেলেন ৭৮ রান। ৩২ বলে ৪৩ রান করে মেহেদী ফিরে গেলে ভাঙে এই জুটি। উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পরই পথ হারায় গাজী গ্রুপের ইনিংস।

এক প্রান্ত সৌম্য সরকার আগলিয়ে রাখলেও অন্য প্রান্তের ব্যাটসম্যানরা যোগ দেন যাওয়া আসার মিছিলে। এক মাত্র মুমিনুল হক ছাড়া আর কেউই দুই অংক স্পর্স করতে পারেননি। মুমিনুলের ব্যাট থেকে আসে ১২ রান, ইয়াসির আলী করেন ৯ রান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ করেন ৫ রান।

ভালো শুরু পেয়েও তাই বাকি ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান সংগ্রহ করে গাজী গ্রুপ। সর্বোচ্চ ৫০ বলে ৬৭ রান করেন সৌম্য সরকার। আবাহনীর পক্ষে দুটি করে উইকেট শিকার করেন শহিদুল ইসলাম ও আমিনুল ইসলাম। এছাড়া একটি করে উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও তানজিম হাসান সাকিব।

দিনের অপর ম্যাচে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ৭ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। শেখ জামালের দেওয়া ১৩৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তামিম ইকবাল ও রনি তালুকদারের উদ্বোধনী জুটিতেই ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় প্রাইম ব্যাংক। এই দুই ওপেনার যোগ করেন ৬৯ রান।

তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি কেউই। ২৭ বলে ২৩ রান করে ফিরে যাওয়ার পর ৩৪ বলে ৪৮ রান করে ফিরে যান রনি তালুকদার। দুই ওপেনার ফিরে গেলেও জয় পেতে সমস্য হয়নি প্রাইম ব্যাংকের। তৃতীয় উইকেটে ৫৩ রান যোগ করে দলের জয় অনেকটাই নিশ্চিত করে দেন মোহাম্মদ মিথুন ও এনামুল হক বিজয়।

জয় থেকে ২ রান দূরে থাকতে বিজয় ৩৩ বলে ৩৫ রান করে আউট হয়ে গেলেও ১৯ বলে ২১ রান করে অপরাজিত থাকেন মিথুন। শেখ জামালের পক্ষে সালাউদ্দিন শাকিল দুটি ও তানভির হায়দার একটি উইকেট শিকার করেন।

এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রান সংগ্রহ করে শেখ জামাল। আগের ম্যাচ গুলোতে দুই ওপেনার মোহাম্মদ আশরাফুল ও সৈকত আলী ভালো শুরু এনে দিলেও আজ ইনিংস বড় করতে পারেননি কেউই। সৈকত ২৮ রান ও আশরাফুলের ব্যাট থেকে আসে ১৬ রান।

এছাড়া সোহরাওয়ার্দী শুভ করেন ৩০ বলে ৩৪ রান ও তানভির হায়দার করেন ১৪ বলে ১৪ রান ও নাসির হোসেন করেন ১১ বলে ১১ রান। প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে দুটি করে উইকেট শিকার করেন মুস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হোসেন এবং একটি করে উইকেট পেয়েছেন শরিফুল ইসলাম, নাহিদুল ইসলাম, অলক কাপালী ও নাঈম হাসান।

দিনের আরেক ম্যাচে পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবকে ৩৩ রানে হারিয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। ব্রাদার্সের দেওয়া ১৪৭ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ১৯ রানে চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পারটেক্স। এরপর আর ঘুঁড়ে দাঁড়াতে না পেরে এক বল বাকি থাকতেই ১১৪ রানে অল আউট হয়ে যায় পারটেক্স। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন ধীমান ঘোষ। ব্রাদার্সের পক্ষে চারটি উইকেট শিকার করেন রাতুল।

এর আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা ব্রাদার্স শুরুতেই পারটেক্সের বোলারদের তোপের মুখে পড়ে মাত্র ৫৭ রানে হারিয়ে ফেলে ৬ উইকেট। ব্রাদার্সের গুটিয়ে যাওয়া যখন শুধু মাত্র সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিল ঠিক তখনই পাল্টা আক্রমণে দলকে এগিয়ে নেন নাঈম ইসলাম জুনিয়র ও রাতুল ফেরদৌস।

দুজনের সপ্তম উইকেটে ৭৮ রানের জুটিতে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৭ রান সংগ্রহ করে ব্রাদার্স। রাতুলের ব্যাট থেকে আসে ৪৪ বলে ৫৪ রান ও নাঈম করেন ২১ বলে ৩৪ রান। পারটেক্সের পক্ষে দুটি করে উইকেট শিকার করেন শাহাদাত হোসেন, তাসামুল হক ও জয়নাল ইসলাম।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

  • গাজী গ্রুপ-আবাহনী

গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ১৫০/৮ (ওভার: ২০; সৌম্য- ৬৭, মেহেদী- ৪৩, মুমিনুল- ১২, রাব্বি- ৯, মাহমুদউল্লাহ- ৫) (শহিদুল- ৪-০-৪১-২, আমিনুল- ৪-০-১৯-২)

আবাহনী লিমিটেড: ১৫৩/৩ (ওভার: ১৮; নাঈম- ১০, মুশফিক- ৫৩*, মোসাদ্দেক- ৫০*) (নাসুম- ৪-০-৩২-১, নাঈম- ৩-০-১২-১)

ফলাফল: আবাহনী লিমিটেড ৭ উইকেটে জয়ী।

  • শেখ জামাল-প্রাইম ব্যাংক

শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব: ১৩৩/৯ (ওভার: সৈকত- ২৮, আশরাফুল- ১৬, নাসির- ১১, শুভ- ৩৪, তানভির- ১৪) (রুবেল- ৪-০-২৮-২, মুস্তাফিজ- ৪-০-৩১-২)

প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: ১৩৪/৩ (ওভার: ১৯.৩; তামিম- ২৩, রনি- ৪৮, এনামুল- ৩৫, মিথুন- ২১) (শাকিল- ২-০-১২-২)

ফলাফল: প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ৭ উইকেটে জয়ী।

  • ব্রাদার্স-পারটেক্স

ব্রাদার্স ইউনিয়ন: ১৪৭/৮ (ওভার: ২০; রাতুল- ৫৪, নাঈম- ৩৪, মাইশুকুর- ১৭) (শাহাদাত- ৪-০-২৬-২, তাসামুল- ৪-০-১৮-২)

পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব: ১১৪/১০ (ওভার: ১৯.৫; সায়েম- ১১, ধীমান- ৪৪, রাজিবুল- ১৪) (রাতুল- ৪-০-৩৪-৪)

ফলাফল: ব্রাদার্স ইউনিয়ন ৩৩ রানে জয়ী।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...