‘ক্রিকেটে মান-অভিমান করলে হবে না’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পনেরো বছর কাটিয়ে দেওয়ারও পর তরুণ একজন উইকেটরক্ষকের সাথে পরীক্ষা দিতে হবে মুশফিককে এটা অপমানজনকই ছিলো তাঁর জন্য। অনেকেই মনে করছেন এই অভিমান থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুশফিক। তবে পাইলট মনে করেন দলের স্বার্থে ভেবে চিন্তে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুশফিক।

টি-টোয়েন্টিতে আর উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পালন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। আলোচনা চলছে অভিমান থেকেই হয়তো এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অভিজ্ঞ এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। তবে বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট মনে করেন অভিমান থেকে নয়; দলের স্বার্থে ভেবে চিন্তেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুশফিক।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে এবং অস্ট্রেলিয়া বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ছিলেন না মুশফিক। এই তিন সিরিজে উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন নুরুল হাসান সোহান। কিন্তু নিউজিল্যান্ড সিরিজ দিয়ে মুশফিক দলে ফেরার পরই আলোচনা শুরু হয় এই সিরিজে উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পালন করবেন কে?

সিরিজ শুরুর আগে প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো সমাধান দিয়েছিলেন প্রথম দুই ম্যাচে উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পালন করবেন সোহান এবং তৃতীয় ও চতুর্থ ম্যাচে উইকেটের পিছনে দেখা যাবে মুশফিককে। আর শেষ ম্যাচে দায়িত্ব দেওয়া হবে উইকেটের পিছনে দু’জনের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করার পর। কোচের এই কথা নিয়েই মূলত আলোচনা শুরু হয়।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পনেরো বছর কাটিয়ে দেওয়ারও পর তরুণ একজন উইকেটরক্ষকের সাথে পরীক্ষা দিতে হবে মুশফিককে এটা অপমানজনকই ছিলো তাঁর জন্য। অনেকেই মনে করছেন এই অভিমান থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুশফিক। তবে পাইলট মনে করেন দলের স্বার্থে ভেবে চিন্তে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুশফিক।

পাইলট বলেন, ‘কোচের মাধ্যমে জানতে পেরেছি মুশফিক আর কিপিং করবে না। অনেকেই বলছেন যে মান অভিমান, মান অভিমান না। দলের স্বার্থে অনেক সময় কোচ বা অধিনায়ককে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সোহানের কথা যেটা আসছে আমি জানিনা মান অভিমান করে কিনা। আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় যে কোচ ও অধিনায়ক যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটাকে স্বাগত জানাতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ক্রিকেট খেলায় আসলে মান অভিমান করলে হবে না। আমার মনে হয় মুশফিক ভেবে চিন্তেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমার মনে হয় মুশফিক মান অভিমান করে নাই। যেহেতু সোহান ভালো কিপিং করছে ও সে ভালো ফিল্ডিং করছে এই চিন্তা করেই হয়তো বলেছে আর কিপিং করবো না।’

জাতীয় দলের সাবেক এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মনে করেন জাতীয় দলের মত একটা পরিবারে কোন কারনে মান অভিমান তৈরি হতেই পারে। যদি কোন কারণে এমন কিছু হয়েই থাকে তবে এই মান অভিমান ভাঙতে দলের সিনিয়র সদস্য ও বোর্ড কর্তাদের এগিয়ে আসতে বলেছেন পাইলট।

তিনি বলেন, ‘আর যদি মান অভিমানে হয় আমি বলবো যে পরিবারের ভিতর যারা আছে ছোট ছোট জিনিস থেকে মান অভিমান আসতে পারে। ক্রিকেট স্বার্থে, দলের স্বার্থে আমি বলবো পরিবারের যারা বড় বা ম্যানেজমেন্টে ও বোর্ডে যারা আছে তাদের দায়িত্ব হচ্ছে কী ভাবে এই মান অভিমান গুলো দূর করা যায়।’

পাইলট মনে করেন যেহেতু সোহান কখনো কোন ধরণের খেলাতেই অন ফিল্ডে ফিল্ডিং করেন নাই। তাই সে ফিল্ডিং করলে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্যাচ ছেড়ে দিতে পারে। অপর দিকে অন ফিল্ডে মুশফিক দুর্দান্ত একজন ফিল্ডার। পাইলট মনে করেন এই ভাবনা থেকেই মুশফিককে সরিয়ে সোহানকে দায়িত্ব দিতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট।

পাইলট বলেন, ‘লিটন দাস ভালো কিপিং করেন, মুশফিককে বিগত দিন গুলোতে ফিল্ডিং করেছে। কিন্তু সোহানকে আমরা কখনো ফিল্ডিং করতে দেখি নাই। ঢাকা লিগ বলেন আর প্রথম শ্রেণী বলেন। সে কেমনে ফিল্ডিং করবে মাঠে, যদি গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ ছেড়ে দেয়। সব কিছু মিলেই হয়তো এমন সিদ্ধান্ত।’

তবে মুশফিক এমন সিদ্ধান্ত নিলেও উইকেটরক্ষক হিসাবে তাঁর যাত্রার এখানেই শেষ দেখছেন না পাইলট। তিনি মনে করেন কোন কারণে সোহান দলে তাঁর জায়গা পাকা করতে না পারলে আবার দায়িত্ব চাপতে পারে মুশফিকের কাঁধেই। পাইলট বিশ্বাস করেন তখন দেশের স্বার্থে অবশ্যই আবার চিন্তা ভাবনা করে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবেন মুশফিক।

তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় যে সোহান কোন কারণে যদি বাংলাদেশ দলে জায়গা পাকাপোক্ত করতে না পারে তবে আবার মুশফিককেই ফিরে আসতে হতে পারে। দলের স্বার্থে দেশের স্বার্থে নিজের চিন্তাটাকে কিন্তু অনেক সময় ত্যাগ করতে হয়। আমি আশাবাদী মুশফিক সেই চিন্তা ভাবনা করবে। ওর কাছে থেকে বাংলাদেশের আরো অনেক কিছু পাওয়ার আছে।’

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...