‘বাবা’দের কীর্তি

ভারতের অন্যতম মর্যাদার এবং ক্রিকেটারদের কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ এক টুর্নামেন্ট রঞ্জি ট্রফি। এই রঞ্জি ট্রফি খেলেই ভারত জাতীয় দলের রাস্তা মসৃণ করেছেন বহু কিংবদন্তি ক্রিকেটার। সে টুর্নামেন্টে তামিল নাড়ুর হয়ে খেলছে দুই জমজ ভাই। বাবা অপরাজিত ও বাবা ইন্দ্রজিৎ। ইন্দ্রজিৎ টপ অর্ডার ব্যাটার আর অপরাজিত অলরাউন্ডার।

দুই জমজ ভাই। ক্রিকেট খেলছে একই দলে। ক্রিকেটের ময়দানে একটু বিরল চিত্র। তবে একেবারেই যে নেই তা কিন্তু নয়। একটু খোঁজখবর নিলেই তাঁদের গল্প খুঁজে পাওয়া যাবে। এমনকি খেলা ৭১-এ চোখ রাখলেও বেশকিছু জমজ ক্রিকেটারদের খোঁজ খবর জানতে পারবেন। তবে আজকে এক জমজ ভাইয়ের জুঁটির গল্প বলবো। সেই জমজ সহোদর গড়েছেন অনন্য এক রেকর্ড।

ভারতের অন্যতম মর্যাদার এবং ক্রিকেটারদের কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ এক টুর্নামেন্ট রঞ্জি ট্রফি। এই রঞ্জি ট্রফি খেলেই ভারত জাতীয় দলের রাস্তা মসৃণ করেছেন বহু কিংবদন্তি ক্রিকেটার। সে টুর্নামেন্টে তামিল নাড়ুর হয়ে খেলছে দুই জমজ ভাই। বাবা অপরাজিত ও বাবা ইন্দ্রজিৎ। ইন্দ্রজিৎ টপ অর্ডার ব্যাটার আর অপরাজিত অলরাউন্ডার।

দুইভাই এবারের রঞ্জি ট্রফিতে এক ম্যাচে শতক হাঁকিয়ে করেছেন রেকর্ড। একসাথে খেলার দুই জমজ ভাইয়ে একই ম্যাচে দুইটি সেঞ্চুরি হাঁকানোর দৃশ্য এর আগে দেখেনি ভারত ক্রিকেট অঙ্গন। অপরাজত ও ইন্দ্রজিৎ এই দুই ভাই জুঁটি প্রথম ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে প্রথম শ্রেণি ক্রিকেটে এমন রেকর্ড গড়লেন।

তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্য গ্রেট ইয়ান ও গ্রেগ চ্যাপেল ভাতৃদ্বয় এই রেকর্ড গড়েছেন বহু আগেই। কিন্তু তাঁরা জমজ ভাই ছিলেন না। সেদিক থেকে এই বাবা ভাতৃদ্বয়ের প্রথম শ্রেণি ক্রিকেটের এক ইনিংসে করা দুই শতক অনন্য।

তামিল নাড়ুর হয়ে ইন্দ্রজিৎ ও অপরাজিত দুইজনে মিলে তৃতীয় উইকেট জুঁটিতে সংগ্রহ করেন ২০৬ রান। চত্রিশগড়ের বিপক্ষে ভারতের গোয়াহাটিতে অবস্থিত নেহরু স্টেডিয়ামে এই অনন্য রেকর্ডটি করেন তাঁরা। প্রথম দিন শেষে ১২৭ রানে ইন্দ্রজিৎ আউট হয়ে গেলেও অপরাজিত ছিলেন ১০১ রানে অপরাজিত।

এর আগে অবশ্য এই দুই ভাই একই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন। তবে তখন তাঁরা ছিলেন দুই ভিন্ন দলে। ২০১৮ সালে দুলিপ ট্রফিতে অপরাজিত ভারত লাল দলের হয়ে এবং ইন্দ্রজিৎ ভারত সবুজ দলের হয়ে একই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন।

নিজেদের এই নতুন এক রেকর্ড গড়া নিয়ে বেশ উচ্ছসিত দুই ভাই। তাছাড়া ভাইয়ের সাথে ব্যাট করাটা উপভোগ করেন ইন্দ্রজিৎ। তিনি বলেন, ‘ছোট বেলা থেকে আমরা দুই ভাই একসাথে ব্যাটিং করাটা বেশ উপভোগ করি। আমরা সবসময় একজন আরেকজনকে সাপোর্ট দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। আমরা শেষ যেবার একই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলাম সেবার আমরা দুইজন দুই দলে ছিলাম। কিন্তু সেই কাজটাই আবার তামিল নাড়ুর হয়ে একসাথে করতে পেরে আমরা দু’জনেই বেশ আনন্দিত।’

অন্যদিকে ভাইকেই সব কৃতীত্ব দিতে চেয়েছেন অপরাজিত। তিনি বলেন, ‘সে(ইন্দ্রজিৎ) সাবলীলভাবে খেলে যাচ্ছিলো। তাই আমি চাইনি অহেতুক কোন বাজে শট খেলে আউট হতে চাইনি। আমার পরিকল্পনা ছিলো আগে বাইশ গজে থিতু হওয়া এবং পরে হাতখুলে শট চালানো।’

দুইভাই একই ইনিংসে দুইটি সেঞ্চুরি করলেও তাঁদের ব্যাটিং অ্যাপ্রোচে ছিলো ভিন্নতা। ইন্দ্রজিৎ তাঁর রান সংগ্রহে অধিক ভরসা করেছেন বাউন্ডারির উপর। ব্যাটে-বলে দারুণ মেলবন্ধনও হচ্ছিলো তাঁর। নিজের ১২৭ রানের ইনিংসে ২১টি চার মেরেছিলেন ইন্দ্রজিৎ।অপরদিকে অপরাজিত খেলেছেন খানিকটা রয়েসয়ে, দেখেশুনে। তিনি সময় নিয়েছেন। তাছাড়া একপাশে যখন তাঁরই সহোদর মেরে খেলছিলো তিনি তখন তাঁকে সঙ্গ দিতে চেয়েছিলেন। 

মারমুখি মেজাজে থাকা ইন্দ্রজিৎ দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগেই আউট হয়ে যান ১২৭ রানে। তবে অপরপ্রান্তে ১০১ রানে অপরাজিত থাকেন তাঁর ভাই অপরাজিত। পরদিন তিনি আরো একটি জুঁটি গড়েন শাহরুখ খানের সাথে। শেষমেশ দ্বিতীয় দিনে ১৫টি চার ও চারটি ছয়ের বদৌলতে ১৬৬ রানে আউট হয়ে যান অপরাজিত। সেই যাই হোক এই দুই বাবা সহোদরের রেকর্ডটা একটা লম্বা সময় ধরে রয়ে যাবে ধরাছোঁয়ার বাইরে সেটা বলে দেওয়া যায় নির্দ্বিধায়।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...