ক্রিকেটে নামিবিয়ার পুনরুত্থান!

যাই হোক তাঁদের উত্তরসূরীরা কিন্তু বিশ্বকাপের মঞ্চে আবারও আসছেন, এবং আশা করা যায় আগের তুলনায় খানিক তৈরী হয়েই। অবাক হচ্ছেন? নাহ অবাক হওয়ার নেই কিছু, কেনিয়া, জিম্বাবুয়ের মতো দেশ যখন পরবর্তী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাচ্ছে না, সেখানে আগামী কুড়ি বিশের বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়া আফ্রিকার প্রতিনিধি হয়ে টিমটিম করে জ্বলা দল সেই নামিবিয়াই।

তাঁদের নিয়ে বিশেষ কোনো গল্প হয় না কোনোকালেই। আফ্রিকার এই দেশকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট প্রথমবার ভালো মতো দেখেছিলো ২০০৩ এর বিশ্বকাপে। কঠিন এক গ্ৰুপে পড়ে লেজে গোবরে অবস্থা হয়েছিল দলটার।

জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে ক্রেগ উইশার্টের দুরন্ত ইনিংসের সামনে উড়ে গিয়েছিলো তারা, এরপর দুর্ধর্ষ অস্ট্রেলিয়া ৪৫ রানে বান্ডিল করে দেয় তাঁদের স্বয়ং গ্লেন ম্যাকগ্রার ৭ উইকেটের সৌজন্যে। শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলিরাও সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে উড়িয়ে দিয়েছিলেন সেবার ডিওন কোটজের বাহিনীকে।

হ্যাঁ, সেই নামিবিয়া দলের কথাই হচ্ছে। দলের জঘন্য পারফরমেন্সের মধ্যেও বিশেষ ভাবে কিন্তু সেবার চোখ টেনেছিলেন দুজন – ব্যাট হাতে ইয়ান বেরি বার্গার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছুটিয়ে ৮৫ রানের এক ইনিংস খেলে এবং বল হাতে রুডি ভ্যান ভুরেন। এই শেষের জন তো আবার ইতিহাসে ঢুকে যান একই বছরে ক্রিকেট ও রাগবি বিশ্বকাপ একই সঙ্গে খেলে।

যাই হোক তাঁদের উত্তরসূরীরা কিন্তু বিশ্বকাপের মঞ্চে আবারও আসছেন, এবং আশা করা যায় আগের তুলনায় খানিক তৈরী হয়েই। অবাক হচ্ছেন? নাহ অবাক হওয়ার নেই কিছু, কেনিয়া, জিম্বাবুয়ের মতো দেশ যখন পরবর্তী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাচ্ছে না, সেখানে আগামী কুড়ি বিশের বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়া আফ্রিকার প্রতিনিধি হয়ে টিমটিম করে জ্বলা দল সেই নামিবিয়াই।

সেবারের মতো এবারের নামিবিয়া দল কিন্তু মোটেই খুব একটা অপেশাদার নয়, বরং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নামিবিয়া আলাদা দল হিসেবেই খেলে। চোখ টানার মতো উপকরণ ও কিন্তু নামিবিয়ার ও হাজির এই মুহূর্তে, তাঁদের অধিনায়ক জেরহার্ড এরাসমাস নামিবিয়া ব্যাটিং লাইন আপে প্রধান ভরসা।

২০০৩ বিশ্বকাপে খেলা নামিবিয়া প্রথমবার ওয়ান ডে স্ট্যাটাস পেয়েছে এরাসমাস এর চওড়া ব্যাট ও তাঁর উজ্জীবিত নেতৃত্বের ওপর ভর করে। নামিবিয়া ক্রিকেটের এক বড়ো তারকা এরাসমাস ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে ওস্তাদ, তার প্রতিফলন দেখা গেছে গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের টুর্নামেন্টে।

২৬৮ রান করে নিজে শুধু টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ই হননি নামিবিয়াকে পরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করিয়েই ছেড়েছেন তাঁর অনবদ্য নেতৃত্বগুণের সুবাদে। এরাসমাস ও তাঁর দলবল এখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও আলো ছড়ানোর অপেক্ষায়।

এছাড়াও দলের শক্তি বাড়িয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে খেলা জান ফ্রাইলিংক, যিনি নামিবিয়ার এক বড় সম্পদ। ব্যাট হাতে যদি এরাসমাস ঝড় তোলেন, বল হাতে ফ্রাইলিংক আশীর্বাদ নামিবিয়ার জন্য। তাঁর বাঁ-হাতি পেস বোলিং ইনিংসের শুরুতে ভীষণ কার্যকরী, ব্যাট হাতেও স্লগ ওভারে দুর্দান্ত বড়ো সড়ো চেহারার ফ্রাইলিংক।

নামিবিয়ার হয়ে একদিনের ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচেই পাঁচ উইকেট তোলা ফ্রাইলিংক এক লম্বা রেসের ঘোড়া। এছাড়াও ব্যাট হাতে জেপি কোটজে কিংবা বহু যুদ্ধের ঘোড়া ক্রেগ উইলিয়ামস আবার পেস বোলিংয়ে জোনাথন স্মিটস বা বাঁ-হাতি স্পিনার বার্নার্ড স্কোল্টজ এনারা কিন্তু পূর্বসূরীদের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের জঘন্য রেকর্ড কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপে ভাঙতে মরিয়া থাকবেন।

জেরহার্ড এরাসমাসের দলের দিকে নজর থাকবে তো?

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...