বিশ ওভারের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান!

দর্শকের আগ্রহ ফেরাতেই অভিনব এক ফরম্যাট আবিস্কার করে বসে ইসিবি। হ্যাঁ, সেই ফরম্যাটই টি-টোয়েন্টি। অন্য ঘরানার মতো নিয়মগুলো প্রায় একই ছিল। তবে সীমিত ওভার, ফিল্ডিং পজিশনের সীমাবদ্ধতা, দ্রুত স্কোর করার জন্য অনেক বেশি বাউন্ডারির মাধ্যমে এ ঘরানায় আক্রমণাত্মক ব্যাটিংকে উৎসাহিত করা হয়।

টি-টোয়েন্টি কাপের প্রথম সংস্করণটি ২০০৩ সালে শুরু হয়েছিল। ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) তাঁদের ঐতিহ্যবাহী কাউন্টি ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় এই ঘরানার আবির্ভাব ঘটায়। এর স্লোগান ছিল, ‘আমি ক্রিকেট পছন্দ করিনা, আমি ক্রিকেটকে ভালোবাসি।’

ইসিবির প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট আসর বেনসন অ্যান্ড হেজেস কাপ যখন ২০০২ সালে শেষ হয়েছিল, তখন ক্রিকেট বোর্ড মরিয়া হয়ে এমন একটি প্রতিযোগিতার সন্ধান করছিল যা ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করবে। আসলে তখন ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে দর্শক হত না বললেই চল।

তাই দর্শকের আগ্রহ ফেরাতেই অভিনব এক ফরম্যাট আবিস্কার করে বসে ইসিবি। হ্যাঁ, সেই ফরম্যাটই টি-টোয়েন্টি। অন্য ঘরানার মতো নিয়মগুলো প্রায় একই ছিল। তবে সীমিত ওভার, ফিল্ডিং পজিশনের সীমাবদ্ধতা, দ্রুত স্কোর করার জন্য অনেক বেশি বাউন্ডারির মাধ্যমে এ ঘরানায় আক্রমণাত্মক ব্যাটিংকে উৎসাহিত করা হয়।

মোদ্দাকথা টি-টোয়েন্টি হলো চার-ছক্কার খেলা। মাত্র কুড়ি ওভারে যত বেশি রান সংগ্রহ করা যায়- তাই লক্ষ্যে থাকে।ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ঘরানা বলে সচরাচর সেঞ্চুরির দেখা পান না ব্যাটাররা। তবে মারকুটে ব্যাটিং দিয়ে কিছু ব্যাটার যে সেঞ্চুরির মাইলফলক অর্জন করেনা, তা কিন্তু নয়। অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার ইয়ান হার্ভে সর্বপ্রথম টি-টোয়েন্টির এর ইতিহাসে কাউন্টি ক্রিকেটের আসরে সেঞ্চুরির রেকর্ড করেছিলেন।

সেই স্মরণীয় দিনটি ছিল ২৩ জুন, ২০০৩।

২০০৩ সালে গ্লস্টারশায়ার আনুষ্ঠানিকভাবে ইয়ান হার্ভেকে সেই মৌসুমের জন্য চুক্তিতে কিনে নিয়েছিলেন। ক্লাবের পরিচালক জন ব্রেসওয়েল বলেছিলেন, ‘১৯৯৯ সালে ইয়ানকে দলে যুক্ত করাটা যথার্থ ছিল। তখন থেকে গ্লস্টারশায়ার উন্নতি করতে শুরু করে। কোন সন্দেহ নেই যে ইয়ান কাউন্টি সার্কিটের সবচেয়ে চমকপ্রদ ক্রিকেটারদের একজন। এটি খেলার মাঠে ও খেলার বাজারে প্রমাণিত।’

  •  কী হয়েছিল সেদিন?

গ্লস্টারশায়ার গ্লাডিয়েটর সেমিফাইনালে পৌছানোর জন্য আর মাত্র একটি ম্যাচ জয় দরকার ছিল। ওয়ারউইকশায়ার বিয়ার্সের বিপক্ষে  সেদিন টস জিতে গ্লস্টারশায়ার প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেয়। ব্যাটিংয়ে নেমে ওয়ারউইকশায়ার ৭ উইকেট হারিয়ে জনাথন ট্রটের অপরাজিত ৬৪ রানের ভিত্তিতে ১৩৪ রান করে।

ম্যাচ জয়ের জন্য গ্লস্টারশায়ারের দরকার ছিল ১৩৫ রান। ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ১৩.১ ওভারেই ২ টি উইকেট হারিয়ে গ্লস্টারশায়ার জয় নিশ্চিত করে। যার নেপথ্যে ছিল ইয়ান হার্ভের মাত্র ৫০ বলে করা তিন অংকের ম্যাজিকাল ফিগার। এভাবে তিনি ইতিহাসে প্রথম টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরির রেকর্ডটি নিজের করে নিলেন। পুরো ক্রিকেট ক্যারিয়ারে তিনি মোট তিনটি টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি করেন।

২০১৩ সালে এই হার্ভেকেই গ্লস্টারশায়ার কোচের দায়িত্ব দেয়। যদিও, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর অজিদের হয়ে বড় কোনো অর্জন নেই। খেলেছেন মাত্র ৭৩ টি ওয়ানডে। সেখানে মিডিয়াম পেস বোলিংয়ে নেন ৮৫ টি উইকেট।

জাতীয় দলের হয়ে তাঁর রানের সংখ্যা দেখলে চমকে উঠবেন – মোটে ৭১৫। আসলে ওই সময়টায় মূলত বোলার হিসেবেই খেলতেন হার্ভে। পরে নিজেকে একজন পরিপূর্ণ অলরাউন্ডার হিসেবে গড়ে তোলেন। আর এ জন্যই পরবর্তীতে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে তাঁর বেশ সুনাম ছিল। বিদ্রোহী ক্রিকেট আসর ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগেও (আইসিএল) দেখা যায় তাঁকে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...