১৭ বছর অপেক্ষার পর
টানা তিনবার আইসিসির বর্ষসেরা আম্পায়ার হয়েছেন। সেই কোন কালে পাকিস্তানের প্রথম আম্পায়ার হিসেবে এলিট প্যানেলে নাম লিখিয়েছিলেন। বিশ্বকাপ করেছেন একটার পর একটা; বিশ্বকাপ ফাইনালও পরিচালনা করেছেন। টেস্ট ও ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ম্যাচ পরিচালনা করা আম্পায়ার তিনি।
কী পাননি জীবনে আলিম দার?
টানা তিনবার আইসিসির বর্ষসেরা আম্পায়ার হয়েছেন। সেই কোন কালে পাকিস্তানের প্রথম আম্পায়ার হিসেবে এলিট প্যানেলে নাম লিখিয়েছিলেন। বিশ্বকাপ করেছেন একটার পর একটা; বিশ্বকাপ ফাইনালও পরিচালনা করেছেন। টেস্ট ও ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ম্যাচ পরিচালনা করা আম্পায়ার তিনি।
কতো রেকর্ড, কতো অর্জন!
কিন্তু এতোকিছুর পরও আলিম দারের বুকের মধ্যে একটা শূন্যতা ছিলো। এই ১৭ বছর ধরে টেস্ট আম্পায়ারিং করছেন, কিন্তু দেশের মাটিতে একটা টেস্ট ম্যাচ পরিচালনা করা হয়নি। অবশেষে আলিম দারের সেই ১৩২ টেস্টের অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। ২৬ তারিখ থেকে শুরু হরেত যাওয়া করাচি টেস্টে এক প্রান্তে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। আর এই টেস্টের ভেতর দিয়েই ঘুঁচবে এক অপূর্ণতা।
এই সিরিজে অবশ্য আলিম দার ছাড়াও ইতিহাস করবেন আরও দুই পাকিস্তানী। আম্পায়ার আহসান রাজার টেস্ট অভিষেক হবে এই সিরিজে। এ ছাড়া ম্যাচ রেফারি মোহাম্মদ জাভেদ মালিকও প্রথমবারের মতো টেস্ট পরিচালনা করবেন। তবে আলিম দারের আনন্দটা এদের সবার চেয়ে বেশি।
আলিম দার নিজেই বলেছেন, তিনি খুবই উচ্ছসিত, ‘পাকিস্তান খেলছে, এমন একটা টেস্ট পরিচালনা করতে পারাটাই আমার জন্য খুব আবেগের একটা ব্যাপার হবে। ১৭ বছর আর ১৩২ টেস্ট ধরে অপেক্ষা করছি এই সময়টার জন্য। অবশেষে অপেক্ষার শেষ হতে যাচ্ছে। দেখুন, খেলোয়াড়দের মতো আম্পায়াররাও দেশের মাটিতে আম্পায়ারিং করতে চায়। সাদা বলের ক্রিকেটে এই সৌভাগ্য আমার হয়েছে। তবে টেস্ট তো সবসময়ই সর্বোচ্চ জায়গা। আমি এটা ভেবে খুব উচ্ছসিত যে, দেশের মাটিতে দুটি অসাধারণ দলের টেস্ট পরিচালনা করতে পারবো।’
এই ঘরের মাটিতে বা নিজের দেশের টেস্ট পরিচালনা বাদে সব অভিজ্ঞতাই আলিম দারের হয়েছে।
এই অভিজ্ঞতাটা তিনি পাচ্ছিলেন না আইসিসির নিয়মের জন্য। আইসিসির আইন অনুযায়ী টেস্ট ম্যাচ পরিচালনা করতেন নিরপেক্ষ আম্পায়াররা। কিন্তু করোনার পর আম্পায়ারদের ভ্রমণ ঝুকি মাথায় রেখে যার যার দেশের আম্পায়ারদের এই সুযোগটা দেওয়া হচ্ছে। ফলে আলিম দার আরেকটা ইতিহাস তৈরী করে ফেলতে পারছেন।
ক্যারিয়ারে আলিম দার ইতিহাস কম তৈণি করেননি।
আম্পায়ারিংয়ে আসার আগে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলতেন। ছিলেন ব্যাটসম্যান ও লেগ স্পিনার। ২০০০ সালে গুজরানওয়ালাতে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার ম্যাচ দিয়ে আর্ন্তজাতিক অভিষেক হয়ে দারের। ২০০২ সালে আইসিসির ইন্টারন্যাশনাল প্যানেলে ঢোকেন। ২০০৪ সালে সুযোগ পান এলিট প্যানেলে।
২০০৭ সালে দশম আম্পায়ার হিসেবে শত ওয়ানডে পরিচালনার মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি; মাত্র ৭ বছরে এই ১০০ ম্যাচ পরিচালনা করে ফেলেন। পাঁচটা অ্যাশেজ ম্যাচ, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ পরিচালনা করেছেন।
২০০৩ সালে টেস্ট পরিচালনা শুরু করেন। ২০১৯ সালে ১২৯তম টেস্ট ম্যাচ পরিচালনা করেন। এর ভেতর দিয়ে স্টিভ বাকনারকে টপকে সর্বোচ্চ টেস্ট পরিচালনার রেকর্ড করে ফেলেন। ২০২০ সালে ২১০তম ওয়ানডে পরিচালনা করেন। এর ফলে রুডি কোয়ের্টজেনকে টপকে সর্বোচ্চ ওয়ানডে পরিচালনার রেকর্ডও নিজের করে নেন।
২০০৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত টানা তিন বার আইসিসির বর্ষসেরা আম্পায়ার হয়েছেন।