আইরিশ সম্ভাবনার দুয়ার

রূপকথা লেখার কান্ডারীদের মধ্যে আফগান ক্রিকেটাররা যদি সবার আগে থাকেন, সেই দলে কম জাননা আইরিশরাও। ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে ২০০৭ সালে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া থেকেই পাকিস্তান, ইংল্যান্ড বা ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত দলকে হারিয়ে চমক দেখাতে শুরু করা আইরিশরা ২০০৯ সালে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে নেমেই হারিয়ে দেয় বাংলাদেশকে।

রূপকথা লেখার কান্ডারীদের মধ্যে আফগান ক্রিকেটাররা যদি সবার আগে থাকেন, সেই দলে কম জাননা আইরিশরাও। ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে ২০০৭ সালে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া থেকেই পাকিস্তান, ইংল্যান্ড বা ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত দলকে হারিয়ে চমক দেখাতে শুরু করা আইরিশরা ২০০৯ সালে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে নেমেই হারিয়ে দেয় বাংলাদেশকে।

একদিনের ক্রিকেটে দারুণ সব জয়ের পরে বহু কাঙ্খিত টেস্ট স্ট্যাটাস ও চলে এসেছে, কিন্তু প্রতিবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এলেই যেন এক অদ্ভুত ধাঁধার মধ্যে পড়ে যায় একসময় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও দারুণ সব পারফরমেন্স দেখানোর আয়ারল্যান্ড। ২০১০ থেকে প্রত্যেক টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই শুধু পরাজয় আর ব্যর্থতার গল্প লিখে যাওয়া আইরিশরা কী পারবে ২০২১-এ এসে আইরিশ ক্রিকেটের রূপকথার পাতায় আরো নতুন কোনো গল্প যোগ করতে?

টি-টোয়েন্টির বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে ১২ নম্বরে থাকা দেশটির শেষ পাঁচ বছরের পারফরমেন্স কিন্তু খুব একটা আশার আলো দেখাচ্ছে না। গত বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে ধরলে টি-টোয়েন্টিতে খেলা ৫৩ ম্যাচের মধ্যে জয় এসেছে মাত্র ২২টাতে। ট্রানসিশন পিরিয়ডের মধ্যে দিয়ে চলা আয়ারল্যান্ড এবারের বিশ্বকাপে কেমন করতে পারে একঝলক দেখে নেওয়া যাক।

  • শক্তিমত্তা

আয়ারল্যান্ডকে বিশ্বকাপে ভালো পারফরমেন্স করতে হলে সিনিয়র খেলোয়াড়দের বিশেষত স্টার্লিং, বালবির্নি, ডকরেল বা কেভিন ও’ব্রায়েন দের জ্বলে ওঠা খুব জরুরি। রান তাড়া করতে বরাবরই ভালোবাসা দলটা ওপেনিং এ স্টার্লিং ও কেভিন ও’ব্রায়েন এই ধ্বংসাত্মক জুটির দিকে তাকিয়ে থাকবে, মিডল অর্ডারে দলকে বছর পাঁচেক ধরে ভরসা জুগিয়ে আসছেন অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবির্নি।

তবে এই বিশ্বকাপে মিডল অর্ডার ব্যাট হ্যারি টেক্টর ও অফস্পিনিং অলরাউন্ডার সিমি সিং এর দিকে যথেষ্ট নজর থাকবে। আমিরশাহীর স্লো পিচে সিমির পাওয়ারপ্লে তে অফ স্পিন ও ব্যাট হাতে ৭ নম্বরে ফিনিশার হিসেবে ব্যাটিং ভীষণভাবে কাজে লাগবে। আইরিশদের ফিল্ডিং বরাবরই দুর্দান্ত, যেটা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দারুন কার্যকরী। আরেক লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার গ্যারেথ ডেলানি আইরিশদের বড় ভরসা, গত টি-টোয়েন্টি কোয়ালিফায়ারে বল হাতে দুরন্ত ছিলেন ডেলানি, চোট সরিয়ে ডেলানির ফিরে আসা আয়ারল্যান্ডের একটা বড় অ্যাডভান্টেজ।

  • দুর্বলতা

আইরিশ সিমাররা – জশুয়া লিটল, মার্ক অ্যাডায়ার, ক্রেগ ইয়ংরা বেশিরভাগই সুইং নির্ভর বোলিং করেন, সেক্ষেত্রে আমিরশাহীর কন্ডিশনে তাঁদের বোলিং কতোটা কার্য্যকরী হবে সে ব্যাপারে সন্দেহ থেকেই যায়। এছাড়া আয়ারল্যান্ড ব্যাটিংয়ে মিডল অর্ডারে অভিজ্ঞতার অভাব যথেষ্ট ভোগাতে পারে তাঁদের।

হ্যারি টেক্টর, লোরকান টাকার, কুর্টিস ক্যামফাররা যতই প্রতিভাবান হোন না কেন ভালো শুরু করেও উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসেন, আর তার ফলেই গত কয়েক বছরে আইরিশদের সাফল্যের হার অনেক কম, সেই সিনিয়রদের মুখাপেক্ষী হয়েই বরাবর থাকতে হয়। জর্জ ডকরেল অলরাউন্ডার হওয়ার চেষ্টায় বোলিং এ ধার অনেক কমিয়ে ফেলেছেন এবং ব্যাটিং এও আহামরি তেমন না হওয়ায় দারুন কিছু ডকরেলের থেকে আশা করা যাচ্ছে না।

  • আয়ারল্যান্ড দল ও তাদের সম্ভাবনা

এমনিতে আয়ারল্যান্ডকে আবারও প্রিলিমিনারি রাউন্ডের বাঁধা টপকে সুপার ১২-তে যেতে হবে, আর এবারে অন্য বারের তুলনায় চ্যালেঞ্জটা আরো কঠিন, টি-টোয়েন্টিতে তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ও দারুণ সব প্রতিভায় ভরা নেদারল্যান্ডস আইরিশদেরই গ্ৰুপে, সঙ্গে একবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ও দুবারের রানারআপ শ্রীলঙ্কা ও দারুণ সব প্রতিভায় ভরপুর নামিবিয়া। সুতরাং পরের রাউন্ডে যেতে গেলে আইরিশদের শুধু ভালো খেললেই হবে না, সিনিয়র – জুনিয়র একসাথে দুর্ধর্ষ কিছু করতে হবে, নাহলে এবারেও অক্টোবরের শেষে হাতে পেন্সিল নিয়ে ডাবলিনের বিমান ধরতে হতে পারে।

গ্যারেথ ডেলানি ও সিমি সিং ছাড়া আরো দু-এক জন কোয়ালিটি স্পিনার থাকলেও আরো ব্যালান্স হতো আইরিশ ব্রিগেডে। তবুও স্টার্লিং, কেভিন ও’ ব্রায়েনরা আবার সেই আইরিশ ক্রিকেটের সোনালি দিন ফিরিয়ে আনতেই পারেন যদি নিজেদের ২০০% দিয়ে আসতে পারেন মরু দেশে।

  • আয়ারল্যান্ড স্কোয়াড

অ্যান্ডি বালবির্নি (অধিনায়ক), পল স্টার্লিং, কেভিন ও’ব্রায়েন, হ্যারি টেক্টর, গ্যারেথ ডেলানি, সিমি সিং, কুর্টিস ক্যামফার, মার্ক অ্যাডায়ার, লোরক্যান টাকার, জশুয়া লিটল, ক্রেগ ইয়ং, গ্রাহাম কেনেডি, ব্যারি ম্যাককার্থী, জর্জ ডকরেল, শেন গেটক্যাটে, নেল রক, বেন হোয়াইট।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...