দ্য আসিফ আলী ক্রাইসিস!

আসিফ আলীর রানের খাতাও বেশ নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। রানের দেখা পাচ্ছেন না এশিয়া কাপের পর থেকে। ছক্কা হাকানোর জন্য বিখ্যাত আসিফ আছেন বিরাট রান ক্ষরায়। তাঁর মত একজন পাওয়ার হিটার যখন অফফর্মে থাকেন সেটা দেখাও বেশ কুৎসিৎ।

পাকিস্তানের মিডল অর্ডার ব্যাটার আসিফ আলীর জন্য সময়টা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। এশিয়া কাপে খুব একটা হাসেনি তাঁর ব্যাট। এর চেয়েও বড় ব্যাপার হল, একই আসরে আফগানিস্তানের ক্রিকেটার ফরিদ আহমেদের সাথে ম্যাচ চলাকালীন ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন। যার কারণে এশিয়া কাপ শেষে লেভেল ওয়ান মাত্রার অপরাধের দায়ে ম্যাচ ফির ২৫ শতাংশ জরিমানা গুণতে হয়েছে।

এতো গেল চড়া মেজাজের কথা, কিন্তু আসিফ আলীর রানের খাতাও বেশ নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। রানের দেখা পাচ্ছেন না এশিয়া কাপের পর থেকে। ছক্কা হাকানোর জন্য বিখ্যাত আসিফ আছেন বিরাট রান ক্ষরায়। তাঁর মত একজন পাওয়ার হিটার যখন অফফর্মে থাকেন সেটা দেখাও বেশ কুৎসিৎ।

দীর্ঘ সতেরো বছর বাদে ইংল্যান্ড দল সাত টি-টোয়েন্টি বিশিষ্ট সিরিজ খেলতে পা রেখেছিলো পাকিস্তানের মাটিতে। এবং বাবর আজম, আসিফ আলীদের তাঁদের নিজেদের মাঠেই হারিয়ে ৪-৩ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় ইংরেজরা।

ঘরের মাঠে সিরিজ হাতছাড়া করায় সাবেকরা দুষছেন দলে ভূমিকা রাখতে না পারা খেলোয়াড়দের। প্রশ্ন উঠেছে বাবর আজমের অশিনায়কত্ব নিয়ে। এইদিকে আসিফ আলীর অধারাবিক পারফরমেন্স তাঁকে অনেকের রোষানলে ফেলে দিয়েছে।

এমনিতেও পাকিস্তানি মিডল অর্ডারদের নিয়ে কানাঘুষা এশিয়া কাপের সময় থেকেই চলছে। টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য পাকিস্তান দলের আসিফ আলীফখর জামান এবং খুশদিল শাহ দলে বিপদজনক অবস্থানে রয়েছেন এমন গুঞ্জন বাতাসে শোনা গিয়েছিল কিছুদিন আগেও।

এবার পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ড সিরিজে আসিফ আলীর অবস্থানটা আরও বিপদজনক অবস্থানে উঠে এসেছে। এই সিরিজের চতুর্থ টি- টোয়েন্টিতে আসিফ আলী ব্যাট হাতে করেছেন তিন বলে অপরাজিত ১৩, পঞ্চম টি- টোয়েন্টিতে চার বলে মাত্র পাঁচটি রান, ষষ্ঠ টি- টোয়েন্টি ম্যাচে নয় বলে নয় রান এবং সবশেষ সিরিজ নির্ধারণী সপ্তম ম্যাচটিতে নয় বলে মাত্র সাতটি রান। অর্থাৎ, টি- টোয়েন্টি ফরম্যাটে একজন মিডল অর্ডার ব্যাটার হিসেবে এমন রানের দশা মারাত্মক লজ্জাজনক।

পাকিস্তানের মিডল অর্ডারের বদনাম ছিল যে ব্যাটাররা পেস বোলিংয়ের বিপক্ষে স্বাচ্ছন্দ্যময় খেললেও, স্পিনে মোকাবেলায় তাঁরা বড়ই দুর্বল। এই সিরিজে এই দুর্বলতাটা বড্ড স্পষ্ট যেন। আসন্ন টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের জন্য তা বেশ বড় অশনি সংকেত।

এদিকে পাকিস্তানের সাবেক ওপেনার ইয়াসির হামিদ আসিফ আলীর এমন নাজুক পারফরমেন্সের জন্য তাঁকে একহাত দেখে নিলেন। সাবেক এই ক্রিকেটার মনে করেন অধারাবাহিক ও অফফর্মে থাকা আসিফ আলীকে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে ধারাবাহিকভাবে পাকিস্তানের হয়ে ভালো ইনিংস খেলা শুরু করতে হবে।

ইয়াসির হামিদ আরও বলেন, ‘আপনি টিটোয়েন্টি ফরম্যাটে বিজয়ীর ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারবেন না। আপনাকে শুধু দেখতে হবে আপনার দলে কতজন ম্যাচ উইনার আছে এবং আপনার দলে কতজন এক্সফ্যাক্টর আছে।’

এখানে এক্স ফ্যাক্টর বলতে তিনি এখানে আসিফ আলীর মতো সামর্থ্যবান অথচ অফফর্মে থাকা ক্রিকেটার যারা দলের মাথাব্যাথার বড় কারণ তাঁদের বুঝিয়েছেন। তাছাড়া তিনি টিম ম্যানেজমেন্টকে ব্যাটারদের দুর্বলতার কারণগুলো খুঁজে বের করে তাঁদের স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাটিংয়ে ফিরতে সাহায্য করার আহ্বান করেছেন।  

পাকিস্তান যদি তাঁদের টি- টোয়েন্টি মিশনে সফল হতে চায় অবিলম্বে আসিফ আলী, খুশদিল শাহ এর মতো ব্যাটারদের ভালো ব্যাটিং করতে হবে। দুর্বল মিডল অর্ডার সম্বলিত দল নিয়ে পাকিস্তান অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে কখনোই নিজেদের সেরা লড়াইটা করতে সমর্থ হবেনা।

এশিয়া কাপ হাতছাড়া করা ‘মেন ইন গ্রিন’রা টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গল্পটা কিভাবে লিখবে সেটাই দেখার পালা। তবে, আসিফ আলী ব্যাট না হাসলে একজন ফিনিশারের অভাব ঠিকই বোধ করবে পাকিস্তান দল।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...