অর্থের চেয়ে ক্রিকেটীয় ক্ষতিই বড় বিসিবির কাছে

করোনার কারণে একের পর এক সিরিজ বাতিলই হয়ে চলেছে। এতে আর্থিক ক্ষতি থাকলেও বিসিবি বড় করে দেখছে সিরিজ বাতিলের ক্রিকেটীয় প্রভাবটাকেই।

কী হতে পারতো বছরটা, আর কী হয়ে যাচ্ছে! চলতি বছরে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসেই অন্যতম ব্যস্ত বছর কাটানোর কথা বাংলাদেশের। করোনার থাবায় আর তা হলো কই! এই গতকালই যেমন আগস্ট-সেপ্টেম্বরে আসন্ন নিউজিল্যান্ডের বাংলাদেশ সফর স্থগিত হয়ে গেলো!

দেশে ক্রিকেটীয় কার্যক্রম বন্ধ সেই মার্চ থেকে। নিউজিল্যান্ড সিরিজটা বাতিল হওয়া সিরিজের তালিকায় চতুর্থ আর দ্বিতীয় ‘হোম’ সিরিজ ছিলো। এর আগে চলতি মাসে অনুষ্ঠেয় অস্ট্রেলিয়া সিরিজও বাতিল হয় করোনাভাইরাসের কারণে।

এর আগে এপ্রিলে পাকিস্তানের মাটিতে দ্বিতীয় টেস্ট, মে মাসে আয়ারল্যান্ড আর ইংল্যান্ড সফর বাতিল হয়। আগামী মাস থেকে আসন্ন শ্রীলঙ্কা সিরিজ নিয়েও আছে বড় ধরণের শঙ্কা। দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দিনকে দিন খারাপের দিকেই পা বাড়াচ্ছে। পরিস্থিতি আরো খারাপ হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।

দুটো সিরিজ বাতিল হওয়া বিসিবিকে নিশ্চিতভাবেই আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলবে। তবে বিসিবি চিন্তিত ক্রিকেটীয় দিকগুলো নিয়েই। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন এ ব্যাপারে বলেন, ‘যদি আপনি বিশ্বজুড়ে বোর্ডগুলোর চিত্রটা দেখেন তাহলে দেখবেন তারাও একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। কিন্তু আমরা ক্রিকেটীয় কার্যক্রম নিয়েই বেশি চিন্তিত, যেগুলো বৈশ্বিক মহামারির কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছে। খেলোয়াড়দের আর খেলাটার সঙ্গে জড়িত সব ব্যক্তিবর্গের সুরক্ষার দিকটাকেও আমরা সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি আর মাঠে ফেরার উপায় নিয়েও ভাবছি।’

‘অবশ্যই আর্থিক দিকটা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আসল ব্যাপারটা হচ্ছে, এ সিরিজগুলো অনুষ্ঠিত হলেও আমরা আয় করতে পারতাম না। কিন্তু আপনি যদি ক্রিকেটীয় দিকের কথা বলেন, তাহলে আমি বলবো সিরিজটা বাতিল হওয়ায় আমাদের বড় ক্ষতিই হয়ে গেছে।’

কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী পাঁচ বছর কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সক্ষমতাও আছে বিসিবির। বিসিবির অর্থ বিষয়ক কমিটির প্রধান ইসমাইল হায়দার মল্লিকও তাই আর্থিক ক্ষতির চেয়ে ক্রিকেটীয় দিকটাকেই বড় করে দেখলেন, ‘সত্যি বলতে দুটো হোম সিরিজে আমরা আহামরি লাভ করে ফেলতে পারতাম না। হ্যাঁ, জার্সি, টাইটেল স্পনসর কিংবা অন্য ক্ষেত্রের কথা ভাবলে কিছু ক্ষতি হয়তো হবে কিন্তু আয়ের ব্যাপারে দেখলে তাতে খুব বেশি লাভ হয়ে যেত না। অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুটো হোম সিরিজ হারালাম, আমরা এর ক্রিকেটীয় দিকটা নিয়েই বেশি চিন্তিত। এ দিক থেকে দেখলে এটা আমাদের ক্রিকেটের জন্যে এটা বড় এক ধাক্কা। এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য, খেলোয়াড়দের সুরক্ষা নিশ্চিত করে, আইসিসির নির্দেশনা মেনে মাঠে ফেরার একটা উপায় বের করা।’

বিসিবির আয়ের দিকে দেখলে এর বড় একটা অংশ আসে আইসিসির পক্ষ থেকে, বিভিন্ন আইসিসি ইভেন্টে অংশ নেয়ার কারণে। অক্টোবরে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ওপরও ভর করে আছে শঙ্কার কালো মেঘ। বৈশ্বিক মহামারীর কারণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও বাতিল হলে ক্রিকেট বোর্ডগুলোর অর্থনীতির উপর বড় প্রভাবই পড়বে এর। বিসিবিও পড়বে এর আওতায়। 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...