সাকিবের ছুটি মঞ্জুর, যাবেন না নিউজিল্যান্ডে
ছুটি চেয়ে সাকিব আল হাসানের আবেদন মঞ্জুর করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এর অর্থ হল তাঁকে ছাড়াই নিউজিল্যান্ডে খেলতে যাবে বাংলাদেশ দল। সংবাদ মাধ্যমে মুখোমুখি হয়ে এই খবর নিশ্চিত করেছেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
ছুটি চেয়ে সাকিব আল হাসানের আবেদন মঞ্জুর করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এর অর্থ হল তাঁকে ছাড়াই নিউজিল্যান্ডে খেলতে যাবে বাংলাদেশ দল। সংবাদ মাধ্যমে মুখোমুখি হয়ে এই খবর নিশ্চিত করেছেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
বোর্ড সভাপতি বলেন, ‘যার বিশ্রাম প্রয়োজন, তাকে তো বিশ্রাম দিতেই হবে। সে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হোক আর না হোক। তবে সাকিবের ব্যাপারটা ভিন্ন। ও তো চোট পায়নি বা বিশ্রামও চায়নি। পারিবারিক কারণে বিরতি চেয়েছে। কাজেই বিষয়টা এক না। এটা চোটও না, বিশ্রামও না। যে কেউ যদি ছুটি চায়, বিরতি চায়, বিশ্রাম চায়, আমাদের কোনো আপত্তি নেই। এটা বোধ হয়, আপনারা অনেক দিন ধরেই দেখছেন। কিন্তু এটা অফিসিয়ালি হতে হবে।’
বোঝাই যাচ্ছে, বিসিবি সভাপতি ছুটি-ছাটার বিষয়গুলো আনুষ্ঠানিক ভাবে আগেভাগে হোক – সেটাই চাচ্ছেন। তিনি জোর গলায় বলেন, ‘যে জিনিসটার উপর আমরা জোর দিচ্ছি, আমরা আগাম জানতে চাই। হঠাৎ করে একটা সিরিজের আগ মুহূর্তে হলে, আমাদের জন্য সমস্যা। কাজেই আগামী জানুয়ারি থেকে আমরা যে নিয়ম করছি, কারো যদি কোনো বিশ্রাম লাগে, বিরতি লাগে, তাহলে যেন আমাদের আগে জানানো হয়। তাহলে আমরা অন্য খেলোয়াড়গুলোকে তৈরি করতে পারি।’
সাকিবের ছুটির ইস্যুতে তিনি আরো জানান, ছুটিটা এখন থেকে ‘অফিসিয়াল’ করে নিতে হবে ক্রিকেটারদের। তিনি বলেন, ‘আনঅফিসিয়ালি আমরা জানতাম। ব্যাপারটা হচ্ছে, এতদিন ধরে সবকিছু আনঅফিসিয়ালিই হয়ে আসছে। যার কারণে অনেক কনফিউশনের সৃষ্টি হয়। এই কনফিউশন যাতে না হয়, যাতে এটা স্বচ্ছ হয়, এই জন্য জোর দিয়ে বলা হচ্ছে, তাদের অফিসিয়ালি জানাতে হবে।’
এর আগেই সাকিবকে নিয়ে ১৮ সদস্যের নিউজিল্যান্ডগামী দল ঘোষণা করে বিসিবি। তবে, সাকিবের ছুটি মঞ্জুরের ঘটনায় তাঁর বিকল্প খুঁজতে হচ্ছে।
প্রথমত নির্বাচকরা ভাবছেন, সাকিবের বদলি কাউকে না নিলেও চলতে পারে। স্কোয়াড এমনিতেই বেশ বড় আছে। ফলে তারা আরেকজন খেলোয়াড় নিতেই হবে, এমন জরুরী প্রয়োজন মনে করছেন না। তবে দল থেকে আবার চাপ আছে, দলে একজন বাড়তি খেলোয়াড় যোগ করার ব্যাপারে। সে ক্ষেত্রে নির্বাচকরা আসলে একজন ওপেনারের দিকে তাকাবেন বলেই জানা গেল।
এই বাড়তি খেলোয়াড়ের তালিকায় আছে আসলে তিনটি নাম – ফজলে রাব্বি, সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েস।
ইমরুল কায়েস ইতিমধ্যে বিবেচনা থেকে সরে গেছেন বলে জানা গেলো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিসিবি কর্মকর্তা জানালেন যে, তাদের বিবেচনায় এখন আসলে শুধু ফজলে রাব্বিই আছেন। বিসিবির একটা অংশ সাকিবের বদলে মিডল অর্ডারে অলরাউন্ডার হিসেবে সৌম্য সরকারকে বিবেচনার পক্ষে। তবে রাব্বির পক্ষেই আলোচনাটা বেশি।
ফজলে রাব্বি ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২টি ওয়ানডে খেলেছিলেন। দূর্ভাগ্যজনকভাবে তার একটিতেও কোনো রান করতে পারেননি রাব্বি। এরপর গত তিন বছর ধরে আর কখনো আলোচনায় ছিলেন না তিনি। তবে এ বছর জাতীয় লিগে তিনি ছিলেন ভয়াবহ ফর্মে।
ঘরোয়া ক্রিকেটে বরাবরই রাব্বি খুব বড় পারফরমার। ৯৪টি প্রথম শ্রেনীর ম্যাচে ৫৩৫৩ রান করেছেন তিনি এ পর্যন্ত। পার্ট টাইম বাহাতি স্পিন দিয়ে ৩২টি উইকেটও নিয়েছেন। রাব্বি এই বছরটা বরিশালের হয়ে দূরন্ত ফর্মে আছেন। সর্বশেষ ৩ ম্যাচেই একটি ১৮৮ রানের ইনিংস সহ মোট ৫৭৫ রান করেছেন রাব্বি।
দু’টি টেস্ট খেলতে আসছে জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড সফরে যাবে বাংলাদেশ দল। সিরিজের সূচি চূড়ান্ত হয়েছে। প্রথম ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে টাউরাঙ্গার বে ওভালে। পরেরটি ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে।
নতুন বছরের প্রথম দিন শুরু হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট। দ্বিতীয় টেস্ট শুরু নয় জানুয়ারি। এই সিরিজ সামনে আগামী ডিসেম্বরের শেষ দিকে নিউজিল্যান্ড যাবে বাংলাদেশ দল। দু’টি টেস্টই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ।
নিউজিল্যান্ডে এটি পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের চতুর্থ সফর। এই সফরগুলোতে তো বটেই, সব মিলিয়ে নিউজিল্যান্ডে তাদের বিপক্ষে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৩২ ম্যাচ খেলে সব হেরেছে বাংলাদেশ।
এর আগে চলতি বছর মার্চ মাসে তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলতে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। চোটের কারণে সেই দলে ছিলেন না সাকিব। আর এবার তিনি ছুটি নিয়ে সরে দাঁড়ালেন।
আসছে বৃহস্পতিবার নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওনা দিবে বাংলাদেশ দল। সেখানে গিয়ে প্রথমে সাত দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন করতে হবে। এরপর দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচ ও দুটি টেস্ট। সফর সব মিলিয়ে মোট পাঁচ সপ্তাহের।