নেতিবাচকতায় নামা নীরবতা

অথচ এই টেস্ট আমরা জিততে পারতাম। নিউজিল্যান্ড জয়ের অনুপ্রেরণায় অনুপ্রানিত ক্রিকেটারদের উপর আরেকটু ভরসা করতে পারত ম্যানেজমেন্ট! দরকার ছিল একটু গাটস এবং পজেটিভ মেন্টালিটি। কয়েন ফ্লিকে পাওয়া সুযোগটায় আগে ব্যাট নিলে এবং একাদশে তাইজুল থাকলে চতুর্থ ইনিংসে হয়ত বাংলাদেশের জায়গায় দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর শো করত আজ! ঠান্ডা মাথায় ভেবেচিন্তে নেয়া একটি নেগেটিভ সিদ্ধান্ত সবকিছু গুবলেট করে দিল!

টসে জিতে বোলিং নেবার সিদ্ধান্ত দেখেই সন্দেহ হয়েছিল! একাদশটা দেখার পর নিশ্চিত হয়েছিলাম সন্দেহ অমূলক নয়। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এই টেস্ট চলাকালীন সময়ে টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস বা থিওরি কপচাবো না। এক ধরনের চাপা ক্ষোভ ধরে নিতে পারেন, হয়ত কিছুটা অভিমানের ফ্লেভারও ছিল সেখানে!

আপনি খুব একজন কৌতুহলী মানুষ হলে প্রথম যে প্রশ্নটা আপনার মাথায় আসবে, কি এমন সন্দেহ হল তবে? টসে জিতে বোলিং নেবার গর্ধবী সিদ্ধান্ত নিয়ে তো কম সমালোচনা হয় নাই! এখানে আবার অন্য কি সন্দেহ?

পেস নির্ভর একটি দলে দুই দুইটা স্পিনার! পিচ রিপোর্টে সোজাসাপ্টা বলে দেয়া ছিল পিচ ভাঙবে তৃতীয় দিনেই! বিপক্ষ দলের ক্যাপ্টেন টসে হেরে আগে ব্যাট পেয়ে চমকিত! অথচ আপনি টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নিয়েছেন! অথচ আপনি জানতেন বিশ্বের এই প্রান্তে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দিনে উইকেটের পতন হয় বেশি!

পিচ রিডিংয়ে ব্ল্যান্ডার? না, মোটেই নয়! খুব ঠান্ডা মাথায় নেয়া একটি সিদ্ধান্ত!

পিচ যেমনই হোক, টসে জিতলে বোলিং নেয়া হবে এই সিদ্ধান্তটা ভেবেচিন্তেই নেয়া হয়েছিল, কারণ বাংলাদেশ এই ম্যাচ ড্রয়ের উদ্দেশ্যে মাঠে নেমেছে! আবহাওয়া প্রেডিকশনে বৃষ্টির সম্ভাবনাকে পুজি করে নেয়া এই সিদ্ধান্ত একজন ফ্যান হিসেবে আমাকে চরমভাবে আঘাত দিয়েছে! শেম!

আপনি যদি এখনও ক্লিয়ার না হোন, তাহলে আরেকটু ব্যাখ্যা করি। পঞ্চম দিন অবধি টেনে নিতে পারলে বাকিটা বৃষ্টি সামলে নেবে ভেবেই চর্তুথ ইনিংসে ব্যাট করতে চেয়েছে বাংলাদেশ! এই টেস্ট জেতার কোন প্ল্যান ম্যাচ শুরুর আগে ছিলই না ম্যানেজমেন্টের। একাদশে তাই বোলার চারটি, ব্যাটসম্যান একজন এক্সট্রা! অথচ পিচ বলে, স্পিনার আরেকজন দরকার!

চিপ মেন্টালিটি, মিনোজ অ্যাটিচ্যুড!

পেসারদের অসাধারন দক্ষতায় আফ্রিকা দুইবার অলআউট হয়েছে! প্ল্যানটাও ভেস্তে গিয়েছে ঠিক এখানেই! ম্যানেজমেন্ট ভাবেওনি, চায়ওনি এত সহজে আফ্রিকা অলআউট হোক! প্রায় দেড় দিন হাতে রেখে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার প্ল্যান যে ছিলোই না! বৃস্টি কথা রাখেনি, অথবা কথা রাখার সময় পায়নি! পিচ কথা রেখেছে, মহারাজ-হার্মারে অন্ধকার নেমেছে বাংলাদেশ শিবিরে।

অথচ এই টেস্ট আমরা জিততে পারতাম। নিউজিল্যান্ড জয়ের অনুপ্রেরণায় অনুপ্রানিত ক্রিকেটারদের উপর আরেকটু ভরসা করতে পারত ম্যানেজমেন্ট! দরকার ছিল একটু গাটস এবং পজেটিভ মেন্টালিটি। কয়েন ফ্লিকে পাওয়া সুযোগটায় আগে ব্যাট নিলে এবং একাদশে তাইজুল থাকলে চতুর্থ ইনিংসে হয়ত বাংলাদেশের জায়গায় দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর শো করত আজ! ঠাণ্ডা মাথায় ভেবেচিন্তে নেয়া একটি নেগেটিভ সিদ্ধান্ত সবকিছু গুবলেট করে দিল!

আপনি ব্যাটসম্যান, বোলার, ফিল্ডারদের চাইলেই কাঠগড়ায় উঠাতে পারবেন এই ম্যাচের বিভিন্ন ইন্সিডেন্টকে ট্যাগ করে, কিন্তু আপনাকে এডমিট করতেই হবে এই ম্যাচ হারার পেছনে ওই সিদ্ধান্ত থেকে বড় কোন কালপ্রিট নেই! এই সিদ্ধান্ত কোন ব্রেইন ফেড নয়, এইটা একটি টেস্ট ম্যাচের ফলাফলকে ঠাণ্ডা মাথায় করা খুন! ইট ওয়াজ এ মার্ডার!

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জেতা একটি দল, খর্ব শক্তির আফ্রিকার বিপক্ষে ড্র করার নেগেটিভ প্ল্যান করেছে এবং মোস্ট প্রবাবলি বৃষ্টিকে বেইজ করে, এটা ভাবতেই এই টেস্ট থেকে মন উঠে গিয়েছিল! হোয়াট এ শেইম!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...