কেস স্টাডি: শচীন-লক্ষ্মণ ভায়া স্টিভ ওয়াহ

সেই ম্যাচটায় আসলে আয়োজন করা হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার উদযাপনের জন্য, স্টিভ ওয়াহর জন্য। টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে সিডনিতে মাঠে নেমেছিলেন স্টিভ। চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজের নির্ধারণী ম্যাচ ছিল সেটি। অজিদের মাটিতে তাও আবার স্টিভ ওয়াহর বিদায়ের ম্যাচ। কিংবদন্তি এই ক্রিকেটারের বিদায়ী ম্যাচটাকে নিশ্চয়ই স্মরণীয় করে রাখতে চেয়েছিল অজিরা। তবে সেই আয়োজনে বাগড়া দিলেন ভারতের দুই ব্যাটার।

সেই ম্যাচটায় আসলে আয়োজন করা হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার উদযাপনের জন্য, স্টিভ ওয়াহর জন্য। টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে সিডনিতে মাঠে নেমেছিলেন স্টিভ। চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজের নির্ধারণী ম্যাচ ছিল সেটি। অজিদের মাটিতে তাও আবার স্টিভ ওয়াহর বিদায়ের ম্যাচ। কিংবদন্তি এই ক্রিকেটারের বিদায়ী ম্যাচটাকে নিশ্চয়ই স্মরণীয় করে রাখতে চেয়েছিল অজিরা। তবে সেই আয়োজনে বাগড়া দিলেন ভারতের দুই ব্যাটার।

রিকি পন্টিং, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, স্টিভ ওয়াহ, ব্রেট লি দের নিয়ে অজিদের তখন উড়ন্ত সময়। তবে তাতে কী? ভারতের ক্রিকেটেরও তখন ক্লাসিক যুগ। ভারতের টেস্ট ব্যাটিং লাইন আপে তখন ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন রাহুল দ্রাবিড়, ভিভিএস লক্ষ্মণ, শচীন টেন্ডুলকার কিংবা সৌরভ গাঙ্গুলিরা। সেই ব্যাটিং লাইন আপকেই বা চোখ রাঙানি দেয়ার দুঃসাহস দেখায় কে। সেই ম্যাচে অজিদের আনন্দ আয়োজনকে বৃথা করে দিলেন শচীন ও লক্ষ্মণ।

২০০৪ সালে সিডনিতে অজিদের বিপক্ষে সেই ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে বীরেন্দ্র শেবাগ ও আকাশ চোপড়ার উড়ন্ত ব্যাটিং শুরু। দুজনে মিলে বুক ফুলিয়ে খেললেন ব্রেট লি, গিলেস্পি, ম্যাকগিলদের। দুই ওপেনারের ব্যাট থেকে এলো ১২৩ রানের জুটি। শেবাগ ফিরলেন ৭২ রান করে, অজি বোলারদের পরিকল্পনা চুরমার করে দিয়ে। আকাশ অবশ্য ইনিংসটা লম্বা করতে পারেননি। ফিরে গিয়েছিলেন ৪৫ রানেই।

তবে অজি বোলাররা ঝালটা টের পান আরেকটু বাদে। চার নম্বরে ব্যাট করতে নামেন শচীন টেন্ডুলকার। এরপর ১৯৩ রানে তিন উইকেট পড়ে গেলে শচীনের সাথে বাইশ গজে আসেন লক্ষ্মণ। দুজনই অজিদের বিপক্ষে খেলতে পছন্দ করেন। সেই সুযোগটাকে আরেকবার কাজে লাগালেন এই দুই ব্যাটসম্যান। দুইজন ব্যাটিং শুরু করার পরেই আসলে সংগ্রামটা শুরু হয় অজিদের।

প্রতিটা বোলারের মুখে যেন অসাহয়ত্বের ছাপ। পুরো অজি দলই যেনো ঘরের মাঠে এক অসহায় দল হয়ে উঠলো। বাইশ গজটা শুধু শাসন করছেন ভারতের এই দুই ব্যাটারই। শচীন টেন্ডুলকার নিজের ইনিংসটাকে বিশাল এক পাহাড়ের চূঁড়ায় নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই ম্যাচে শচীন ব্যাটিং করেছিলেন ১০ ঘন্টা। ৪৩৬ বলের সেই ইনিংসে শচীনের ব্যাট থেকে এসেছিল ২৪১ রান। মেরেছিলেন ৩৩ টি চার।

ওদিকে শচীনের সাথে পাল্লা দিয়ে রান করছিলেন লক্ষ্মণও। সময় নিয়ে ব্যাটিং করলেন ৪০৩ মিনিট। ২৯৮ বল খেলে করলেন ১৭৮ রান। তিনি বাউন্ডারির বাইরে বল পাঠালেন মোট ৩০ বার। দুজনের ব্যাট থেকে আসলো ৩৫৩ রানের বিশাল এক জুটি।

দুজনের সেই জুটিতে ভর করে ভারত ৭ উইকেট হারিয়ে করেছিল ৭০৫ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে অজিরা অল আউট হয়েছিল ৪৭৪ রানেই। এরপর ভারত আবার ব্যাটিং করতে নামলেও শচীন অপরাজিত ছিলেন ৬০ রানে। সাথে রাহুল দ্রাবিড় অপরাজিত ছিলেন ৯১ রানে। ভারত ২ উইকেট হারিয়ে ২১১ রান করেই ইনিংস ঘোষণা করে।

সেই ম্যাচটায় অবশ্য জিততে পারেনি কেউই। শেষ পর্যন্ত ড্র ই হয়েছিল। তবে শচীন, লক্ষ্মণ, দ্রাবিড়রা লড়াই করার মানসিকতটা দেখিয়েছিলেন। অজিদের মাটিতে, স্টিভ ওয়াহর শেষ ম্যাচেও এক চুল ছাড় দেননি। সেই ম্যাচে অবশ্য রান পেয়েছিলেন স্টিভও। দুই ইনিংসে যথাক্রমে করেছিলেন ৪০ ও ৮০ রান। তবুও স্টিভ ওয়াহর শেষ ম্যাচটায় মোটা অক্ষরে লিখা থাকবে ভারতীয় দুই ব্যাটিং গ্রেটের নাম।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...