আইরিশ রূপকথার রাজা

তাঁর নামটা খুব বড় নয়। বিশেষ করে তাঁর রেকর্ড দেখলে বাইশ গজে তাঁকে মহাতারকা মনে করার কোনো কারণ নেই। তবে, বিশেষত্ব অন্য জায়গায়। কারণ, তিনি সেই সময়ের কান্ডারি, যখন আয়ারল্যান্ড নিজেচদের পায়ের মাটি খুঁজে ফিরছিল। তিনি আইরিশ ক্রিকেটের অন্যতম রূপকার কেভিন ও’ব্রায়েন। যখন শুরু করেন, তখন ক্রিকেটের বুকে আয়ারল্যান্ডকে কেউ চিনতো না। আর যখন শেষ করলেন, তখন আয়ারল্যান্ড রীতিমত টেস্ট খেলুড়ে দল।

তাঁর নামটা খুব বড় নয়। বিশেষ করে তাঁর রেকর্ড দেখলে বাইশ গজে তাঁকে মহাতারকা মনে করার কোনো কারণ নেই। তবে, বিশেষত্ব অন্য জায়গায়।  কারণ, তিনি সেই সময়ের কান্ডারি, যখন আয়ারল্যান্ড নিজেচদের পায়ের মাটি খুঁজে ফিরছিল। তিনি আইরিশ ক্রিকেটের অন্যতম রূপকার কেভিন ও’ব্রায়েন। যখন শুরু করেন, তখন ক্রিকেটের বুকে আয়ারল্যান্ডকে কেউ চিনতো না। আর যখন শেষ করলেন, তখন আয়ারল্যান্ড রীতিমত টেস্ট খেলুড়ে দল।

আইরিশ ক্রিকেটে অবদানের ঘাটতি রাখেননি কেভিন। দু’হাতে ভরিয়ে দিয়েছেন আইরিশ ক্রিকেটকে। তবুও বিদায়বেলায় কিছুটা আক্ষেপ, মনের কোনে কিছুটা ব্যাথা নিয়ে সড়ে যেতে হলো কেভিন ও’ব্রায়েনের।

২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাচ্ছিলেন নাহ কেভিন। কেভিন এর ইচ্ছে ছিলো অবসরে যাবেন সামনেই শুরু হতে যাওয়া ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলে। কিন্তু বোর্ড থেকে তেমন কোনো ইশারা না মেলায় নিজেকেই নিতে হলো এমন সিদ্ধান্ত।

মূলত আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট বর্তমান সময়ে রেনেসার যুগে অবস্থান করছে। অভিষিক্ত হয়েছেন দারুন কিছু ক্রিকেটার। তাদের হাত ধরে দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে আইরিশ ক্রিকেট। হয়ে উঠছে অন্যতম শক্তিশালী দল। সর্বশেষ কয়েকটা সিরিজে দারুন ক্রিকেট খেলেছে আয়ারল্যান্ড। ভারত ইংল্যান্ড কিংবা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বেশ কয়েকটি ম্যাচ এ ক্লোজ হারতে হয়েছে তাদের। প্রায় জিতেই গিয়েছিলো বেশ ক’টি ম্যাচ।
তাই এমন ক্রিকেট খেলতে থাকা দলের বোর্ড চায়নি তরুণদের সুযোগ বঞ্চিত করে কেভিনকে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ দিতে।

টুইট বার্তাটিতে কেভিন ও’ব্রায়েন অবসরের ঘোষনা দেয়ার পর ধন্যবাদ জানিয়েছেন তার ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সবাইকে। ধন্যবাদ জানিয়েছেন যাদের হাত ধরে তার ক্রিকেটে আসা কিংবা ক্রিকেটে আসার পর যেসকল কোচিং স্টাফদের সহায়তায় আজকের কেভিন হতে পেরেছেন সবাইকে। এছাড়াও ধন্যবাদ জানিয়েছেন পরিবারের সবাইকে,বিশেষ করে তার স্ত্রী কে। কেভিন ও’ব্রায়েন জানান, ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও ক্রিকেট থেকে সড়ে যাচ্ছেন নাহ। তিনি নিজের একটি ক্রিকেট একাডেমি করবেন এবং দায়িত্ব নিবেন ভবিষ্যত আইরিশদের তারকা ক্রিকেটার।

২০০৬ সালে আয়ারল্যান্ডের হয়ে প্রথমবারের মত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে নেমেছিলেন কেভিন ও’ব্রায়েন। এরপর পার হয়ে গেছে ১৬টি বসন্ত। ১৬ বসন্তের এই ক্যারিয়ারে কেভিন ও’ব্রায়েন তিন টেস্ট, ১৫৩ টি ওয়ানডে, আর ১১০ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। ৯০৪৮ রানের পাশাপাশি সদ্য অবসরে যাওয়া এই অলরাউন্ডারের ঝুলিতে আছে ২৭৬ উইকেট। এবং ফিল্ডার কেভিন হিসেবে লুফে নিয়েছেন ১৮১ ক্যাচ।

আইরিশদের হয়ে দারুন কিছু রেকর্ডের মালিক কেভিন ও’ব্রায়েন। একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপে সবচেয়ে দ্রুততম শতকের মালিক কেভিন ও’ব্রায়েন। ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৫০ বলে শতক হাঁকিয়েছিলেন তিনি৷ রানের পাহাড় তাড়া করতে নেমে রীতিমতো ভড়কে দিয়েছিলেন পুরো ক্রিকেট বিশ্বকে। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছিল আয়ারল্যান্ড।

আয়ারল্যান্ডের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ক্রিকেটের সবচেয়ে সম্মানজনক ফর্মেট টেস্ট ক্রিকেটে শতকের কৃতিত্ব রয়েছে এই আইরিশের। ২০১৮ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেষ্ট শতক হাঁকান তিনি। এখানেই শেষ নয়, আয়ারল্যান্ডের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে তিন ফরম্যাটে শতক হাঁকানোর কৃতিত্ব রয়েছে তার।

এক ক্যালেন্ডার বছরে ক্রিকেটের তিন ফর্মেটেই শতক হাকানোর দারুন এক রেকর্ডের মালিক কেভিন ও’ব্রায়েন। এই রেকর্ড এ নাম লেখাতে পেরেছেন মাত্র ১৯ জন ক্রিকেটার। এক ক্যালেন্ডার বছরে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ছক্কা হাঁকানো ব্যাটসম্যানদের তালিকায় ৩৬ ছক্কা হাঁকিয়ে চার নম্বরে কেভিন ও’ব্রায়েন।

অভিষেকের পর সর্বোচ্চ ৯৫৩ খেলোয়াড়কে কেভিন মোকাবেলা করেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মাহেলা জয়াবর্ধনে খেলেছেন ৮৭২ ক্রিকেটারের বিপক্ষে। এই তালিকায় ৮১৬ ক্রিকেটারের বিপক্ষে খেলে সাত নম্বরে সাকিব আল হাসান।

আয়ারল্যান্ডের রুপকথার গল্পে কেভিন ও’ব্রায়েন এর নামটি সন্ধার আকাশে শুঁক তারার মত জ্বলতে থাকবে সবসময়। ভালো থাকবেন কেভিন, সবসময়ের জন্য জানবেন আইরিশদের মনে অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...